বিনোদ বিহারী: যার লাশ পেতে পুরস্কার ঘোষণা করেছিল ব্রিটিশ সরকার

বিনোদ বিহারী
বিনোদ বিহারী  © সংগৃহীত

ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা। আজীবন তিনি ছিলেন সংগ্রামী ব্যক্তিত্ব, সদা সত্যবাদী, অসাম্প্রদায়িক, ন্যায়নিষ্ঠ এবং বিবেকের কণ্ঠস্বর – সব মিলিয়ে এক মহৎ মানুষ, চির বিপ্লবী। তাঁর নামের সঙ্গে ‘বিপ্লবী’ বিশেষণটা একাকার হয়ে গিয়েছিল। নিতান্ত সাদামাটা জীবনযাপন করেও কীভাবে অসাধারণ হয়ে ওঠা যায় তারই এক বিরল দৃষ্টান্ত বিপ্লবী বিনোদ বিহারী চৌধুরী। আজ ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর জীবনের নানা দিক লেখনীর মাধ্যমে তুলে ধরেছেন জামাল উদ্দিন

মানুষ যেমন ইতিহাস রচনা করে, ইতিহাসের ঘটনাবলি গ্রন্থনা করে, তেমনি ইতিহাসও কোনো কোনো মানুষকে তার অন্তর্গত করে নেয়। তাই মানুষের জন্য যেমন ইতিহাস, তেমনি ইতিহাসের জন্যও প্রয়োজনীয় উপকরণ হয়ে যান কোনো কোনো মানুষ। উল্লেখের অপেক্ষা রাখে না যে, ইতিহাসের মানুষ যে কেউ হতে পারেন না, তাঁকে ইতিহাসের উপকরণ হতে হয়। হতে হয় আপন কর্মের শক্তিতে। বাংলাদেশের চৌদ্দ কোটি মানুষের মধ্যে একটি মানুষ, বহু নামের মাঝে একটি বিশেষ নাম, উজ্জ্বল একটি নাম বিপ্লবী বিনোদ বিহারী চৌধুরী। চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন ও জালালাবাদ যুদ্ধের সৈনিক বিনোদ বিহারী চৌধুরী আজ জীবন্ত কিংবদন্তি। প্রচারবিমুখ এই মানুষটি সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে আজীবন সংগ্রাম করেছেন। অসাম্প্রদায়িক জাতীয়তাবাদ ও মানবতাভিত্তিক ধর্ম নিরপেক্ষতার ঐতিহ্যে তাঁর সমগ্র জীবন আলোকোজ্জ্বল।

বাঙালি সংস্কৃতি যে কোনো একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের সংস্কৃতি নয়, হিন্দু-মুসলমানসহ সব সম্প্রদায়ের মিলিত সংস্কৃতি মানবতাবাদী সংস্কৃতি এই বিশ্বাস তাঁর অন্তর্গত। আর এই বিশ্বাস তিনি কোনো সময় কোনো দিন গোপন করে রাখেননি। অকপটে ও নির্ভয়ে প্রকাশ করেছেন। অনেক সরকারি নির্যাতন সইতে হয়েছে তাঁকে তবু বিশ্বাস হারাননি। আর এই বিশ্বাসে যারা বিশ্বাসী তাদেরও তিনি দূরে সরিয়ে রাখেননি। তাদের সবার কাছে থেকেছেন, তাদের কাছে টেনেছেন ও তাদের সবাইকে নিয়ে নিরলস সংগ্রাম করে গেছেন যুগের পর যুগ ধরে।

১৯৩০ সালের জালালাবাদ যুদ্ধের পর এমন কোনো প্রগতিশীল সংগ্রাম নেই যেখানে বিনোদ বিহারী চৌধুরীর বলিষ্ঠ অবদান নেই। ‘আমি’ ও ‘আমরা’ কথা দুটোর মধ্যে অনেক পার্থক্য। একা ও একত্র হওয়ার মধ্যেও অনেক পার্থক্য। নিজেদের অন্তরে লালন করা আদর্শের জন্য আমরা মাঝে মাঝে একত্রিত হই আবার বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ি। উত্তেজনা আর শক্তি তো এক নয়। একতা আর একত্রিত হওয়াও এক কথা নয়। রেভ্যুলিউশন আর কনভালসন (খিঁচুনি) এক নয়। একা যারা তারা তো নিঃসঙ্গ আর একত্রিত যারা, সক্রিয় যারা, সংগঠিত যারা, সংঘবদ্ধ যারা, গ্রহণযোগ্য সমাজ নির্মাণের সংগ্রামে তারাই শক্তিশালী।

বিনোদ বিহারী চৌধুরী এই আদর্শের জন্য শুধু একত্রিত নয়, একতাবদ্ধ হওয়াতে বিশ্বাসী। এটাই তাঁর প্রধান শক্তি ও বিশ্বাস। আর এই বিশ্বাসকে আজ পর্যন্ত বুকের গভীরে লালন করে আছেন, এতটুকু তা নড়চড় হতে দেননি। এই বৈরী সময় ও প্রতিক‚ল পরিবেশেও ইস্পাত কঠিন সংকল্প নিয়ে যিনি আমাদের এই বিক্ষুব্ধ উত্তাল সমাজ সমুদ্রে ভেসে চলা একটি সাম্পানের সম্পানওয়ালা- তাঁরই নাম বিনোদ বিহারী চৌধুরী। তিনি চট্টগ্রামের অহঙ্কার, আমাদের গৌরব, এ কথা বলতে কারো দ্বিধা থাকা উচিত নয় যারা এই সমাজ পরিবর্তনে বিশ্বাসী। কিন্তু আমরা কী সত্যি সত্যিই এসব কালজয়ী মানুষদের যথাযথ মূল্যায়ন করতে পেরেছি? কর্মই জীবন কিন্তু সংগ্রামহীন আদর্শহীন কর্ম তো মূল্যহীন। তা হচ্ছে শুধু শুধু সময়কে পার হতে দেয়া।

বিনোদ বিহারী চৌধুরী তাঁর সুদীর্ঘ কর্মময় জীবনে তাঁর প্রতিটি কর্মকে শুধু শুধু সময়ের হাতে তুলে দিয়ে নিশ্চিত থাকতে চাননি। তিনি জীবনে মূল্যহীন অর্থহীন কোনো কর্মে নিজেকে নিয়োজিত রাখেননি, অন্যায়ের সাথে আপস করেননি কোথাও কোনোদিন। পাহাড় সমুদ্র ঘেরা চট্টগ্রামের এই বীর সন্তান যুগের পর যুগ ধরে সমাজ বিপ্লবের নীল নকশা তৈরি করেছেন মুক্ত সমাজ নির্মাণে।

বন্দরনগরী চট্টগ্রামের ইতিহাস ও ঐতিহ্য গৌরবময় প্রধানত এজন্য ও যে তিরিশের দশকে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামের এখানেই সূচনা করেছিলেন মাস্টারদা সূর্যসেনের নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মি। তাঁরা আয়ারল্যন্ডের বিপ্লবীদের সশস্ত্র সংগঠন আইআরএর নামই শুধু ধারণ করেননি, চট্টগ্রামের বহু লক্ষ্যস্থলে যুগপৎ আক্রমণ করার তারিখ হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন ডাবলিন শহরে ব্রিটিশবিরোধী ‘ইস্টন বিবেলিয়ন’-এর বিশেষ দিনটিকে। সূর্যসেনের নেতৃত্বে সেই যুদ্ধে ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মির সৈনিক ছিলেন বিনোদ বিহারী চৌধুরী।

জালালাবাদ যুদ্ধ নামে খ্যাত এই যুদ্ধ থেকেই মূলত ভারতবর্ষের স্বাধীনতার বীজ অঙ্কুরিত হলো, তারই ধারাবাহিকতায় মহান মুক্তিযুদ্ধের পর মুক্ত স্বাধীন দেশেরও জন্ম হলো কিন্তু সেই কাক্সিক্ষত শোষণহীন সমাজ কোথায়? এ কথা ক’জনের জানা যে, এই ভূখণ্ডে সেই ব্রিটিশ পাকিস্তানি আমলের শক্তিদের সঙ্গে সত্যিকার সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়ে একজন দক্ষ সেনানীর ভূমিকা পালন করেছেন তিনি। নিষ্পেশিত হয়েও ছিলেন নিজ সিদ্ধান্তে অটল সুদৃঢ় পাহাড়ের মতো।

জালালাবাদ যুদ্ধের এই বীর সৈনিক ব্রিটিশ আমল থেকে ‘ভারত ছাড়ো’ ‘বাংলা ছাড়ো’ আন্দোলনের প্রথম কাতারের এক নির্ভীক সৈনিকের ভূমিকা পালন করেছেন। আমাদের রাজপথে যেখানে দু’চারটে ভাঙাচোরা জীর্ণ ঘোড়ার গাড়ি শীর্ণ কয়েকটি ঘোড়াকে কোনো রকমে টেনে নিচ্ছে, সেখানে এই ১০০ বছর বয়সেও তিনি আমাদের সমাজের নির্জন আস্তাবল থেকে বুট ছোলার উপঢৌকন

এড়িয়ে লাগাম উঁচিয়ে তেজী ঘোড়সওয়ারের মতো হ্রেষা ধ্বনি করে বের হয়ে এসেছেন ও সবাইকে ডেকে বলছেন- এখনো যুদ্ধে যাওয়ার সময় আছে, হাত-পা গুটিয়ে নিষ্ক্রিয় নিরপেক্ষ হয়ে তথাকথিত সুখময় গৃহকোণে বসার দিন নয়। বেরিয়ে আসার দিন। উজ্জ্বল সূর্যের দিকে এগিয়ে যাওয়ার দিন।

 

জন্ম থেকে যেভাবে উতরিয়ে গেছেন শত বছর

চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার উত্তরভূর্ষি গ্রামে ১৯১১ সালের ১০ জানুয়ারি বিনোদ বিহারী চৌধুরীর জন্ম। পিতা প্রখ্যাত আইনজীবী কামিনী কুমার চৌধুরী। তিনি ফটিকছড়ির রাঙ্গামাটি বোর্ড স্কুল, করোনেশন উচ্চ বিদ্যালয়, বোয়ালখালীর পি সি সেন সরোয়াতলী উচ্চ বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত অবস্থায় কৈশোরে মাত্র ১৬ বছর বয়সে মাস্টারদা সূর্য সেনের বিপ্লবী সংগঠনের সদস্য হন। অত্যন্ত মেধাবী বিনোদ বিহারী চৌধুরী ১৯২৯ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়ে শ্রী চৌধুরী রায়বাহাদুর বৃত্তি লাভ করেছিলেন। চট্টগ্রাম যুববিদ্রোহের এই সৈনিক ব্রিটিশরাজ্যের রাজপুতনার দেউলী ডিটেনশন ক্যাম্পে বন্দি থাকা অবস্থায় ১৯২৪ ও ৩৬ সালে যথাক্রমে প্রথম বিভাগে ও ডিস্টিংশন নিয়ে তিনি আইএ ও বিএ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং পরবর্তীতে বিএল ডিগ্রি লাভ করেন।

কৈশোরে মাত্র ১৬ বছর বয়সে ১৯২৭ সালে বিপ্লবী দল যুগান্তরে যোগদানের মধ্য দিয়ে তিনি মাস্টারদা সূর্যসেন, তারকেশ্বর দস্তিদার, মধুসূদন দত্ত, রামকৃষ্ণ বিশ্বাস প্রমুখ বিপ্লবীদের ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্যে আসেন। শুরু হয় তাঁর বিপ্লবী জীবন। চট্টগ্রাম যুববিদ্রোহের মহানায়ক মাস্টারদা সূর্যসেনের নেতৃত্বে ১৯৩০ সালের ১৮ এপ্রিল পুলিশ অস্ত্রাগার আক্রমণে অংশগ্রহণ করেন। চট্টগ্রামের দুটি অস্ত্রাগার দখলের পর মাস্টারদা সূর্যসেনকে বিপ্লবী সরকারের প্রধান ঘোষণা করে সহযোদ্ধাদের সাথে জালালাবাদ পাহাড়ে অবস্থান নেন। ২২ এপ্রিল ঐতিহাসিক জালালাবাদ যুদ্ধে ব্রিটিশ বাহিনীর সাথে সম্মুখ সমরে অংশ নিয়ে তিনি গুরুতর আহত হন। মেসিনগানের গুলি তাঁর গলাভেদ করে বেরিয়ে যায়।

ব্রিটিশ সৈন্যবাহিনী পালিয়ে যাবার পর গুরুতর আহত অবস্থায় তিনি গভীর রাতে সহকর্মীদের সাহায্যে পাহাড় থেকে নেমে গ্রামের নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান। গুলির ক্ষত শুকাবার পর ঢাকায় গিয়ে আত্মগোপন করেন। ব্রিটিশ সরকার তাঁকে গ্রেপ্তারের জন্য শুধু হুলিয়া জারি করেননি, জীবিত অথবা মৃত ধরে দেয়ার জন্য ৫০০ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেন। ১৯৩৩ সালের ১৮ আগস্ট ঢাকায় গ্রেপ্তার হন। বেঙ্গল অর্ডিন্যান্সে প্রায় ৫ বছর চট্টগ্রাম জেল, কলিকাতা প্রেসিডেন্সি জেল, দেউলী ডিটেনশন ক্যাম্প ও বহরমপুর জেলে বন্দি থাকার পর ১৯৩৮ সালের ২৭ এপ্রিল মুক্তি লাভ করেন। ’৩৯ সালে আবারো তাকে এক বছর গৃহবন্দি করে রাখা হয়। দুবছর পর আবারো তাকে গ্রেপ্তার করে চট্টগ্রাম জেল, হিজলী বন্দি শিবির, ঢাকা জেল, খোকসা বন্দি শিবিরে আটক রাখা হয়।

কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থায় বিপ্লবী বিনোদ বিহারী চৌধুরী মহাত্মা গান্ধীর অনুসারী হয়ে ওঠেন এবং ১৯২৯ সালে কারামুক্তির পর ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসে যোগ দেন। ১৯৪০ থেকে ৪৬ পর্যন্ত বঙ্গীয় প্রাদেশিক কংগ্রেস নির্বাহী কমিটির সদস্য থাকাবস্থায় ’৪৬ সালে এ রাজনৈতিক দলের চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক হন। ’৪৭ সালে দেশ ভাগের পর অনেকের মতো স্বদেশত্যাগী না হয়ে সে বছরেই পাকিস্তান জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার নেতৃত্ব দেন।

১৯৪৮ সালে অনুষ্ঠিত পূর্ব পাকিস্তান আইন পরিষদ নির্বাচনে কংগ্রেস দলীয় প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হন। ওই বছরেই তার সেদিনকার নেতা ’৭১-এ মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত পাকিস্তানের আইন পরিষদে সর্বপ্রথম বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষার দাবি উত্থাপন করেন এবং যার ভিত্তিতে বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের সূচনা ঘটে। বিপ্লবী বিনোদ বিহারী সংসদের ভেতরে-বাইরে এ আন্দোলন ছড়িয়ে দেয়ার কাজে ব্যাপৃত হন।

’৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন এবং জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে আরো বিকশিত করার লক্ষ্যে অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রত্যয়ে কংগ্রেস নেতা শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের নেতৃত্বে পৃথক নির্বাচনের বিপরীতে যুক্ত নির্বাচন আন্দোলনে অংশ নেন। পাকিস্তান সরকার তাঁকে আবারো ’৬৫ থেকে ’৬৬ সালে এক বছর কারাগারে বন্দি করে রাখে। ১৯৬৯ সালে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে যোগ দেন এবং ’৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রবাসে মুক্তিযুদ্ধ সংগঠন করেন। স্বাধীন বাংলাদেশে সক্রিয় রাজনীতি থেকে অবসর নিয়ে বিকল্পে সামাজিক-মানবাধিকার আন্দোলনে সক্রিয় নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করে আসছেন।

দৈনিক পাঞ্চজন্য পত্রিকার সহকারী সম্পাদক হিসেবে ১৯৩৯ সালে বিপ্লবী বিনোদ বিহারী চৌধুরী কর্মজীবন শুরু করেন। ’৪০ সালে আইনজীবী হিসেবে চট্টগ্রাম আদালতেও যোগ দেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নেন। দেশপ্রিয় যতীন্দ্রমোহন গুপ্তের সহধর্মিণী ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের এককালীন সভানেত্রী শ্রীমতি নেলী সেনগুপ্তার মৃত্যু পর্যন্ত তিনি তাঁর একান্ত সচিবের দায়িত্ব পালন করেন।

আজীবন ত্যাগী কর্মবীর শ্রী চৌধুরী তাঁর কর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ দেশ-বিদেশের অনেক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সম্মানিত হয়েছেন। মহান স্বাধীনতা আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাঁকে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সম্মাননা ‘স্বাধীনতা পদক’ প্রদান করেন। জাতীয় দৈনিক ভোরের কাগজ ও দৈনিক জনকণ্ঠ জাতির অন্যতম শ্রেষ্ঠ সন্তান হিসেবে তাঁকে সম্মাননা ও সংবর্ধনা জানান।

সম্মাননা ও সংবর্ধনা থেকে প্রাপ্ত সমুদয় অর্থ তিনি তাঁর রাজনৈতিক গুরু মাস্টারদা সূর্যসেনের স্মরণে স্মারক বক্তৃতা আয়োজনের জন্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেন। তিনি ১৯৯৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টারদা স্মারক বক্তৃতা এবং একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ’৯৭ সালে দেশপ্রিয় যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত স্মারক বক্তৃতার আয়োজন করেন। এ ছাড়া তিনি বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে বিপুল সংখ্যক সম্মাননা পদক লাভ করেছেন। তিনি চট্টগ্রামের সর্বজন শ্রদ্ধেয় জীবন্ত এক ইতিহাস।


সর্বশেষ সংবাদ