নাঈমকে নিয়ে রাজনীতি, যা বললেন আসিফ নজরুল
রাজধানীর বনানীতে এফ আর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের পানির পাইপ ধরে রাখা ছোট্ট শিশু নাঈম। তার সাহসিকতা এবং বিবেকবোধ সবার বাহবা কুড়াচ্ছে। তার কাজে খুশি হয়ে তাকে উপহারস্বরূপ পাঁচ হাজার ডলার প্রদানের ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ওমর ফারুক সামি।
তবে এ টাকা দেওয়া নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে। মূলত অভিনেতা শাহরিয়ার নাজিম জয়ের একটি সাক্ষাৎকার নিয়ে এ বিতর্কের শুরু। তাকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে নাঈম বলেছেন, ‘তিনি টাকা এতিম খানায় দিতে চান।’ এছাড়া বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া এতিমের টাকা খেয়েছেন বলেও নাঈম বলেছেন। এ নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। নাঈম অপরাজনীতির বলি হয়েছেন বলে অনেকেই মনে করছেন। এমনকি নাঈম এ অর্থ নাও পেতে পারেন বলে অভিমত অনেকের।
আলোচিত এ ঘটনা নিয়ে কথা বলেছেন আসিফ নজরুল। ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, ‘বনানীর শিশুটিকে নিয়ে কোন এক টিভি অভিনেতার সস্তা নাটক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রাথীকে অপহরন, ভূয়া কাগজপত্রে শত কোটি টাকার লোন- কিছু আমাকে ততোটা অবাক আর ব্যাথিত করে না আর। কারণ, রাতের বেলা ভোট ডাকাতি, কোটি কোটি ভোটাধিকার একদিনে হরণ, ভূয়া জনপ্রতিনিধিদের প্রতিদিনের দম্ভ- আমার কাছে এসবের চেয়ে হৃদয়বিদারক আর ক্ষতিকর আর কিছু নয়। আমার দুঃখিত আর বিস্মিত হওয়ার ক্ষমতাও এসব ঘটনা কেড়ে নিয়েছে অনেকটা। অথচ কি অবলীলায় এ সমাজের বহু মানুষ হজম করে নিয়েছে এসব অনাচার’।
স্ট্যাটাসের কমেন্টে মিজন রহমান লিখেছেন, ‘স্যার আমাদের অভ্যাস হয়ে গেছে । যেমন রেশমার নাটকের শেষ অংশে যা দেখলাম তা বনানী ট্রাজেডির ছোট্ট ছেলে নাইম কে নিয়ে।’ আলামিন রহমান নামে একজন লিখেছেন, ‘পাইপের ফুটো ধরে রাখাতে আমরা টানতে টানতে তাকে মাথায় তুললাম। তাকে নিয়ে এত বাড়াবাড়ি, বাংলাদেশে নতুন হিরো আবিষ্কার হলো। এখন টাকার লোভে কত রকমের কথা বলতেছে। একবারও কেউ খবর নিলেন না যারা মারা গেছেন আগুনে পুড়ে তাদের পরিবারের কি অবস্থা, এই একটা নাঈম কে এখন বাংলাদেশের হেডলাইন বানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
আরও পড়ুন: রবিউল তুমি অন্ধ না, অন্ধ আমরা: আসিফ নজরুল
আসিফ নজরুল একজন বাংলাদেশী লেখক, ঔপন্যাসিক, রাজনীতি-বিশ্লেষক, সংবিধান বিশেষজ্ঞ, কলামিস্ট, ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক। টিভি টক শো ও তার কলামে সাহসী রাজনীতি বিশ্লেষণের জন্য তিনি বিশেষভাবে খ্যাত। তিনি দশের অধিক গ্রন্থের রচয়িতা। রাজনীতি নিয়ে বিভিন্ন সময়ে কথা বলে আলোচিত-সমালোচিত হয়েছেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগদানের পূর্বে ১৯৯১ সালে আসিফ নজরুল একটি বহুল প্রচারিত সাপ্তাহিক পত্রিকা বিচিত্রায় কাজ করতেন। বাংলাদেশ সরকারের একজন সরকারি কর্মকর্তা (ম্যাজিস্ট্রেট) হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মিডিয়ায় তাকে প্রায়ই দেখা যায়।