ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী তাজিন আহমেদকে হারানোর ৬ বছর
শেষ দেখা শেষ নয়, মানুষ তার কর্মের মাঝে বার বার ফিরে আসে, তাজিন আহমেদও যেন সে কথা রেখে গেলেন। ৯০ দশকে অভিনয় জগতে নিজের অভিনয় দক্ষতার পাশাপাশি কথা ও ব্যক্তিত্বের মাধ্যমে তরুন-প্রবীন সকল বয়সের দর্শকের মন কেড়েছেন যেকজন শিল্পী, তাজিন আহমেদের নাম সে তালিকার প্রথমে। নিজের মিষ্টি হাসির জন্যও প্রসিদ্ধ এই অভিনেত্রী।
চঞ্চল বেগবতী তটিনীর মত বেয়ে চলা এই অভিনেত্রীর পৃথিবীতে বিচরণ খুব বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। ২২ মে তাজিন আহমেদের প্রয়াণ দিবস।
১৯৭৫ সালের ৩০ জুলাই নোয়াখালী জেলায় তাজিন আহমেদের জন্ম হলেও বেড়ে উঠেছেন পাবনা জেলায়। ১৯৯২ সালে ইডেন মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসিতে উত্তীর্ণ হন, পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিষয়ে স্নাতক করেছেন। অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি সাংবাদিকতা পেশায় জড়িত ছিলেন অনেকদিন, এছাড়া ব্যাংকার এবং রাজনীতিবিদ হিসাবেও পরিচয় ছিল এই অভিনেত্রীর।
তাজিন আহমেদের প্রথম অভিনীত দিলারা ডলি রচিত ও শেখ নিয়ামত আলী পরিচালিত নাটক 'শেষ দেখা শেষ নয়' এবং শেষ অভিনীত নাটক বিদেশি পাড়া। এছাড়াও, নীলচুড়ি, বন্ধন, অদেখা ভুবন, নলবাজি, দ্য ফ্যামিলি, বার বার ফিরে আসে, ও বন্ধু আমার, তোমার খোলা হাওয়া, অত:পর বিবাহ বার্ষিকী, সাত পোড়ে কাব্য, এক আকাশের তারা নাটকে অভিনয় করে তিনি প্রশংসা কুড়িয়েছেন।
অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি লেখালেখিও করতেন। পত্রিকার কলামে লেখার পাশাপাশি তিনি নাটক স্ক্রিপ্ট লিখতেন। তার লেখা ও পরিচালনায় তৈরি হয় ‘যাতক’ ও ‘যোগফল’ নামে দুটি নাটক। তার লেখা উল্লেখযোগ্য নাটকগুলো হচ্ছে বৃদ্ধাশ্রম, অনুর একদিন, এক আকাশের তারা, হুম, সম্পর্ক ইত্যাদি।
ব্যক্তিগত জীবনে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন নাট্য পরিচালক এজাজ মুন্নাকে তবে সে সংসার বেশিদিন কাগজে কলমে স্থায়ী হয়নি। পরবর্তীতে তিনি ড্রামার রুমি রহমানের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
২০১৮ সালে তাজিন আহমেদ হৃদ্রোগে আক্রান্ত হলে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় সেদিন বেলা ৪টা ২০ মিনিট নাগাদ কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঢাকার বনানী কবরস্থানে বাবা কামাল উদ্দিন আহমেদের কবরে পাশে সমাহিত করা হয় এই অভিনেত্রীকে।