২৯ মে ২০২৫, ১৮:৩৯

‘স্থানীয় সরকারব্যবস্থায় যুব-তরুণদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করতে হবে’

মতবিনিময় সভা  © সংগৃহীত

স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে গণতান্ত্রিক বিকেন্দ্রীকরণ ও জন-আকাঙ্ক্ষার ভিত্তিতে সংস্কার করতে হলে যুবসমাজকে সম্পৃক্ত করাই একমাত্র পথ বলে মন্তব্য করেছেন বক্তারা। তারা বলেন, ইউনিয়ন থেকে সিটি করপোরেশন পর্যন্ত সব স্তরের স্থানীয় সরকার কাঠামোয় যুবদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। এতে সমাজে বৈষম্য কমবে এবং জবাবদিহিমূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা সহজ হবে।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশস্থ সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের সহায়তায় গভার্নেন্স অ্যাডভোকেসি ফোরাম এবং ইউএনডিপির যৌথ আয়োজনে “গণতান্ত্রিক বিকেন্দ্রীকরণ ও জন-আকাঙ্ক্ষার আলোকে স্থানীয় সরকার সংস্কার” শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন বক্তারা।

সভায় বিভিন্ন ছাত্র, সাংস্কৃতিক ও নাগরিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। আদিবাসী, দলিত ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর তরুণ প্রতিনিধিরাও সক্রিয়ভাবে আলোচনা করেন।

অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ওয়েভ ফাউন্ডেশনের উপ-নির্বাহী পরিচালক নাসিফা আলী। তিনি বলেন, “তরুণরাই পরিবর্তনের ধারক-বাহক। ওয়েভ ফাউন্ডেশন দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে সুশাসন, অধিকার ও ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে কাজ করছে।”

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক কানিজ ফাতেমা। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ বর্তমানে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড উপভোগ করছে। ১৮-৩৫ বছর বয়সী তরুণেরা দেশের মোট জনসংখ্যার ৩৩ শতাংশ, যারা বিভিন্ন সময়ে জাতীয় আন্দোলনের অগ্রভাগে ছিল।”

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গভার্নেন্স অ্যাডভোকেসি ফোরামের ফ্যাসিলিটেটর ও ওয়েভ ফাউন্ডেশনের সহকারী পরিচালক অনিরুদ্ধ রায়। তিনি জানান, স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের দেওয়া ৫১টি সুপারিশের মধ্যে ২৫টি সুপারিশ ফোরামের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।

তিনি বলেন, “স্থানীয় সরকারকে একই কাঠামোয় আনতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়কে জেলা পরিষদ কার্যালয়ে রূপান্তরের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এতে জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন ও সেবা দপ্তরগুলোর মধ্যে সমন্বয় সহজ হবে।”

সভায় ইউএনডিপির ইয়ুথ এনগেজমেন্ট অ্যানালিস্ট সাওসান সুহা বলেন, “নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে যুবসমাজের অংশগ্রহণ ছাড়া টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। তরুণদের ভাবনা ও অংশগ্রহণকে গুরুত্ব দিতে হবে।”

মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে যুব প্রতিনিধিরা বলেন- স্থানীয় সরকারকে স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক করতে ই-গভার্নেন্স ও নাগরিক সনদ চালু করতে হবে; দলিত, আদিবাসী, প্রান্তিক তরুণদের কর্মসংস্থান ও প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে; ছায়া নেতৃত্ব তৈরি ও অংশগ্রহণমূলক বাজেট ব্যবস্থা চালু করতে হবে; পাহাড়ি এলাকায় সুষ্ঠু ও সেনা-নিয়ন্ত্রণমুক্ত স্থানীয় নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে; স্ট্যান্ডিং কমিটিতে তরুণদের অন্তর্ভুক্তি বাধ্যতামূলক করতে হবে।

ফোরামের পক্ষ থেকে তরুণদের উদ্দেশ্যে আহ্বান জানানো হয়, তারা যেন স্থানীয় সরকার শক্তিশালীকরণ বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করে, রাজনৈতিক দলগুলোর ইশতেহারে স্থানীয় সরকার সংস্কার অন্তর্ভুক্তির দাবি তোলে এবং নিজ নিজ পরিসরে সক্রিয় থাকে।