দুই দশকে এক দিনও বন্ধ হয়নি স্কুল! ছুটিও নেন নি শিক্ষকরা
২০০১ সাল থেকে আজ পর্যন্ত প্রত্যেকদিনই খোলা ছিল স্কুল। বছরের ৩৬৫ দিনই সেখানে চলে পড়াশোনা। এমনকি একদিনও ছুটি নেননি ওই স্কুলে শিক্ষকরা। ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের পুণের কার্দেলওয়াড়ির এক স্কুলে।
জানা যায়, স্কুল পরিচালনা করছেন এক শিক্ষক দম্পতি। ২০০১ সালে পুণের কার্দেলওয়াড়ির প্রাথমিক স্কুলে বদলি হয়ে আসেন দত্তাত্রেয় এবং বেবিনন্দ সকত। গত দুই দশক ধরে কোর ছুটি না নিয়েই স্কুল চালাচ্ছেন এই দম্পতি। স্কুল যাতে বন্ধ না হয়, তাই কোনও অনুষ্ঠানেও যান না এই দম্পতি। যখন বছরের নানা পার্বণ এবং অনুষ্ঠানে স্কুল বন্ধ রাখা হয়, সেখানে পুরোপুরি উল্টো পথে হেঁটে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে এই স্কুল।
৩৬৫ দিন কেন স্কুল খোলা রাখা হচ্ছে তা তদন্ত করতে এনসিইআরটি একটি বিশেষজ্ঞ দল ওই স্কুলে যান। তখন ওই বিশেষজ্ঞ দল জানতে পারেন, ১১ বছর আগে এই স্কুলে যখন তারা আসেন তখন একটা পুরনো বিল্ডিং এবং তাতে চারটি ঘর ছিল। একেবারে প্রাণহীন ছিল স্কুলটি। স্কুলে কী ভাবে প্রাণ ফিরিয়ে আনা যায় সেই চিন্তা থেকে প্রথমে একটা বাগান তৈরি করেন তারা। পরে স্কুলের প্রতিটি ঘরের দেওয়ালে সুন্দর সুন্দর ছবি আঁকেন ওই দম্পতি। মাটি দিয়ে খেলনা তৈরি করে স্কুলে রাখার ব্যবস্থা করেন তারা।
আরও পড়ুন: টিকটকে দেখা ভিডিও হিস্ট্রি মোছার উপায়।
শিক্ষক দত্তাত্রেয় জানান, আমরা যখন স্কুলের পরিবেশ বদলে দেই তখন শিশুদের স্কুলে প্রতি আগ্রহ বেশ বেড়ে যায়। তখন দত্তাত্রেয় স্থির করেন, শিশুদের শুধু বইয়ের মধ্যে বেঁধে না রেখে তার বাইরে তাদের জন্য কিছু করা উচিত। এর পরই নানা রকম হাতের কাজ, বাগান তৈরি করা, ইন্টারনেট, কম্পিউটার, গান-বাজনার মতো নান বিষয়ে শিক্ষার্থীদের ব্যস্ত রাখতে শুরু করেন। পড়াশোনার বাইরেও যে একটা অন্য জগৎ আছে, সেটা শিশুদের বুঝানোর চেষ্টা করে ওই দম্পতি। নানা সৃষ্টিমূলক কাজে জড়িয়ে রাখার চেষ্টা করেন তারা।
দত্তাত্রেয় আরও জানান, প্রতি বছর এই স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির অর্ধেক শিক্ষার্থী রাজ্যের বৃত্তি পরীক্ষায় দারুণ ফল করে। তবে শিক্ষক দম্পতির এই প্রচেষ্টা দেখে এগিয়ে এসেছেন গ্রামবাসীরা। নানা ভাবে সহযোগিতা করেন তাদের।
উল্লেখ্য, আগামী বছর অবসরে যাবেন দত্তাত্রেয়। তবে এই দম্পতি জানান, অবসরের পরেও এই স্কুলে শিক্ষকতা করে যাবেন তারা।