বাল্যবিবাহ রোধে নারী সেজে পথে স্কুলের প্রধান শিক্ষক
একবিংশ শতাব্দীতে এসেও বাল্যবিবাহ হচ্ছে। সমাজের এই অপরাধ রোধে এবং সচেতনতা বাড়াতে নারী সেজে পথে বের হয়েছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেবাশিস মুখোপাধ্যায়। ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে।
পশ্চিমবঙ্গের হুগলি খানাকুরে প্রধান শিক্ষক দেবাশিস মুখোপাধ্যায়। কলকাতার একটি নাটকের দলে অভিনয় করতেন দেবাশিস। ২২ বছর ধরে শিক্ষকতা করছেন তিনি। কয়েকবছর আগে স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের জন্য প্রথম বার বহুরূপী সেজে এলাকায় ডেঙ্গু সম্পর্কে সচেতন করেছিলেন।
তখন থেকেই তার ইচ্ছে ছিল, নিজেও কোন এক সময় বহুরূপী সাজবেন। ছোটবেলার অভিজ্ঞতা থেকে দেবাশিস জানতেন, বহুরূপী এলেই দলে মানুষ বেরিয়ে আসেন বহুরূপীদের দেখতে। এমন কৌশল কাজে লাগালে যে কোনও প্রচারের কাজ খুব সহজ হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: বাকৃবির এমএস ভর্তির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, আবেদন অনলাইনে।
দুইবছর আগে নিজের এলাকার একটি বাল্যবিবাহের খবর জানতে পারেন দেবাশিস। তার পরেই তিনি ঠিক করেছিলেন, বহুরূপী সেজে মানুষকে এই ‘সামাজিক ব্যাধি’ সম্পর্কে সতর্ক করবেন, সচেতন করবেন। এর পরই বায়ান্ন বছরের এই ব্যক্তি হয়ে গেলেন ‘গোলাপসুন্দরী’।
গাইতে থাকেন নিজেরই লেখা বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে সচেতনতার ছড়া-গান। যেমন- ‘ছেলেদের ২১ আর মেয়েদের ১৮ হলে, তবেই তাদের দু’জনের বিয়ে দেওয়া চলে…।’
দেবাশিস বলেন, আমি চাই বাল্যবিবাহের মতো ব্যাধি সমাজ থেকে দূর হোক। মূলত, অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে পড়া সমাজের পরিবারে এই ব্যাধি বেশি। এ জন্য দায়ী মূলত অশিক্ষা। তাই মানুষকে শিক্ষিত হতে হবে। শুধু বাচ্চাদের পড়ালেই হবে না। বড়দেরও শিক্ষা দিতে হবে। আমি শিক্ষক হিসাবে সে কাজটাই করতে চাইছি।
এ প্রসঙ্গে হুগলির জেলাশাসক পি দীপাপপ্রিয়া বলেন, দেবাশিসবাবুর এই গোলাপসুন্দরী হয়ে বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে প্রচারকাজের কথা শুনেছি। বাল্যবিবাহ নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে জেলায় বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়। র্যালিও হয়। আমরা সরকারি ওই সব অনুষ্ঠানে তাকে ডাকার কথা ভেবেছি। আসলে বাল্যবিবাহ রুখতে সাধারণ মানুষকেই এগিয়ে আসতে হবে। তার কাজটা অনেক প্রশংসনীয়। আমি ব্যক্তিগত ভাবে তাকে সাহায্য করায় উদ্যোগী হব