ক্লাস না করানোয় বেতনের ২৪ লাখ টাকা ফেরত দিলেন শিক্ষক
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২২, ০৯:৩৪ PM , আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২২, ০৯:৩৪ PM
করোনার কারণে প্রায় ৩ বছর ক্লাস না করানোয় নিজের বেতনের ২৪ লাখ টাকা ফেরত দিয়েছেন এক শিক্ষক। ওই শিক্ষকের এমন পদক্ষেপে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।
বেতন ফেরত দেওয়া শিক্ষকের নাম লালন কুমার। তিনি ভারতের বিহারের মুজফফরপুরের নীতীশ্বর কলেজের সহকারী অধ্যাপক।
জানা গেছে, করোনা মহামারীর মধ্যে ভারতের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল দীর্ঘদিন। ক্লাস না করিয়ে বেতন নিয়েছেন লালন। তবে এতে তুষ্ট হতে পারছিলেন তিনি। মনে মনে নিজেকে দোষারোপ করছিলেন। এরপরই তিনি ২ বছর ৯ মাসে নেওয়া বেতনের ২৩ লাখ ৮২ হাজার টাকা কলেজ কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেন।
এ প্রসঙ্গে লালন বলেন, ছাত্রছাত্রীদের না পড়িয়ে এত দিন ধরে বেতন নিয়েছি। কিন্তু কোথাও যেন সেই বেতন নিতে বিবেকে বাধছিল। এমনকি অনলাইন ক্লাস হলেও খুব সামান্য শিক্ষার্থীই উপস্থিত ছিলেন। যদি আমি না পড়িয়েই শুধু মাসের পর মাস বেতন নিয়ে যাই আগামী পাঁচ বছর ধরে, তা হলে আমার শিক্ষাকে গলা টিপে হত্যা করার শামিল হবে!
লালন জানিয়েছেন, তিনি যখন বেতন ফেরানোর প্রস্তাব কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলেন, তাঁরা খুব অবাক হয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, এই টাকা নিতে তাঁরা দ্বিধাবোধ করছিলেন। কিন্তু লালন তাঁদের বুঝিয়ে বলেন এবং কেন এই বেতন তিনি নিতে চাইছেন না, সেই কারণ ব্যাখ্যা করার পরে অবশেষে কলেজ কর্তৃপক্ষ তাঁর প্রস্তাব মানতে রাজি হন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, কলেজে আসার পর থেকেই পড়াশোনার পরিবেশ তেমন চোখে পড়েনি তাঁর। শুধু তাই নয়, হিন্দি বিভাগে ১১০০ শিক্ষার্থী থাকলেও তাঁদের উপস্থিতির হার খুবই কম। অনলাইন ক্লাস চালু হলেও তারা তাতে অংশ নেননি। তাই তাঁদের না পড়িয়ে বেতন তিনি নিতে পারেন না। আর সেটা চানও না। তাই ওই ৩৩ মাসের বেতনের টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হিন্দিতে স্নাতকোত্তর করেছেন লালন। পিএইচডি এবং এমফিল করেছেন দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ২০০৯ সালে নীতীশ্বর কলেজে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন লালন।