এই প্রথম সমকামী বিয়ে দেখল কলকাতা
টোপর মাথায় বিয়ের মণ্ডপে হাজির বর। হল শুভদৃষ্টি, মালাবদলও। কিন্তু, আর পাঁচটা বিবাহ অনুষ্ঠানের থেকে কিছুটা হলেও অন্যরকম ছিল ফ্যাশন ডিজাইনার অভিষেক রায়ের বিয়ে। তিনি মালা পরালেন দীর্ঘদিনের সঙ্গী চৈতন্য শর্মার গলায়।
এই প্রথম সমকামী যুগলের বিয়ের অনুষ্ঠানের সাক্ষী থাকল ভারতের কলকাতা। প্রেমের শহরে চারহাত এক হল দুই প্রেমিকের। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলের পাশাপাশি শহরবাসীও অভিষেক-চৈতন্যর বিয়ের ছবি দেখে প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন।
ভারতে এখনও আইনী স্বীকৃতি পায়নি সমকামী বিবাহ। তা সত্ত্বেও হিন্দু ধর্মের রীতি মেনে মালাবদল করেছে এই যুগল। সেখানে দাঁড়িয়ে অভিষক ও চৈতন্যর এই সাহসী পদক্ষেপ মুগ্ধ করেছে শহরবাসীকে।
শহরের নামকরা ফ্যাশন ডিজাইনার অভিষেক রায়। এথনিক পুরুষদের পোশাক তৈরিতে তার রীতিমতো নামডাক রয়েছে। সঙ্গী চৈতন্য শর্মা ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে রয়েছেন। আদতে গুরুগ্রামের বাসিন্দা হলেও বর্তমানে অভিষেকের সঙ্গে ঘর বেঁধে এ শহরেরই বাসিন্দা চৈতন্য। আপাতত রয়েছেন ওয়ার্ক ফ্রম হোমে।
এই যুগলের বিয়েতে হাজির হয়েছিলেন একাধিক সেলেব। বিয়ের সাক্ষী ছিলেন নৃত্যশিল্পী তনুশ্রী শংকর এবং তার কন্যা শ্রীনন্দা শংকর। মেক আপ শিল্পী অনিরুদ্ধ চাকলাদারকেও দেখা গিয়েছে বিয়ের আসরে।
কলকাতার একটি পাঁচতারা হোটেলে বসেছিল বিয়ের আসর। আর তাঁর বর্ণনা নিজের ফেসবুক পেজে তুলে ধরেছেন আমন্ত্রিতদের তালিকায় থাকা নভনীল দাস। তিনি লেখেন, বন্ধু অভিষেক রায়ের বিয়ের সাক্ষী ছিলাম। বিয়ের রীতিতে তেমনভাবে বিশ্বাস না করলেও সুন্দর এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পেরে খুশি। প্রকৃত অর্থেই বরমালা পরলেন দুই বর। আমি উপলব্ধি করলাম সকলের দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই ভালোবাসাকে বোঝা উচিত। অনুষ্ঠানে উপস্থিত কেউ কেউ ফিসফিস করলেন, কেউ অবাক হলেন আবার অনেকেই উচ্ছ্বসিত হলেন। কলকাতা শহরে পাঁচ বছর আগেও হয়ত এই জিনিস ভাবা যেত না। সব মিলিয়ে শেষ পর্যন্ত জয় হল অভিষেক এবং চৈতন্যর ভালোবাসার।
নভনীল দাস নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে লেখেন, অনুষ্ঠান শেষে ফেরার পথে ম্যারেজ হলের বাইরে 'অভিষেক ওয়েডস চৈতন্য' লেখা এবং দুই পুরুষের ছবিতে 'ইয়েস উই ডু' লেখা দেখেও অনেক পথচলতি মানুষের মুখ হাঁ হয়ে গিয়েছিল। কেউ বললেন আরে এটা তো সেম সেক্স ম্যারেজ। কাউকে বলতে শোনা গেল, সত্যিই দু'জন ছেলে বিয়ে করছে।