১০ এপ্রিল ২০২২, ০৭:০৬

ক্ষমতা হারালেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান  © ইন্টারনেট

অনাস্থা ভোটে হেরে অবশেষে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। শনিবার (৯ এপ্রিল) রাতে জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাবে ভোটাভুটি হয়। এতে ইমরানের বিপক্ষে ভোট পড়েছে ১৭৪টি। দেশটির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদের ৩৪২ আসনের মধ্যে  প্রস্তাবটি পাসের জন্য প্রয়োজন ছিল ১৭২ ভোটের।

ইমরান খান পাকিস্তানের ২২তম প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তিনি ক্ষমতা হারানোয় দেশটির নির্বাচিত কোনো প্রধানমন্ত্রীই মেয়াদ পূর্ণ করতে পারলেন না। ইমরানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবে ভোটাভুটির আগে পদত্যাগের ঘোষণা দেন স্পিকার আসাদ কায়সার। তিনি বলেছেন, মন্ত্রিসভা থেকে কিছু  ‘গুরুত্বপূর্ণ নথি’ পেয়েছেন, যা বিরোধী দলীয় নেতা এবং  প্রধান বিচারপতিকে দেখার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তিনি।  এ সময় তিনি পাকিস্তান মুসলিম লিগের নেতা আয়াজ সাদিককে অধিবেশন পরিচালনার আহবান জানান।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ইমরান খানের ভাগ্যনির্ধারণী অধিবেশন শুরু হয় সকাল সাড়ে ১০টায়। তবে পরে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত মুলতবি করা হয়। তিন দফা মুলতবি শেষে ইফতারের পর অধিবেশন শুরু হয়। পরে রাত সাড়ে ৯টায় আবার অধিবেশন বসে। এ অধিবেশনে বিরোধী দলগুলোর সবাই অংশ নেন। এ ছাড়া শুরুতে সরকারি দলের কয়েকজন আইনপ্রণেতাকে দেখা যায়।

বিরোধী দলের আইনপ্রণেতারা অভিযোগ করেন, অধিবেশন ইচ্ছা করেই বিলম্বিত করা হচ্ছে। এ জন্য কৌশল ঠিক করতে বিরোধীদলীয় নেতা ও পাকিস্তান মুসলিম লিগের (নওয়াজ) সভাপতি শাহবাজ শরিফের চেম্বারে বসে তারা বৈঠক করেন। স্পিকার আসাদ কায়সারের সঙ্গেও দেখা করেন। এ সময় স্পিকারকে সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করার আহ্বান জানান।

আরো পড়ুন: হজ করার সুযোগ পাবেন ১০ লাখ, মানতে হবে দুই শর্ত

প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে আর্থিক দুরবস্থা ও ভুল পররাষ্ট্রনীতির অভিযোগে অনাস্থা প্রস্তাব আনে বিরোধী দলগুলো। এ প্রস্তাবকে অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়ে গত ৩ এপ্রিল জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি খারিজ করে দেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে ওই দিনই জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি।

এ পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক সংকটে পড়ে পাকিস্তান। পরে স্বতঃপ্রণোদিত নোটিশ দেন সুপ্রিম কোর্ট। আদালতের শরণাপন্ন হয় বিরোধীরা দলগুলোও। এ নিয়ে পাঁচ দিনের শুনানি শেষে অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ ও জাতীয় পরিষদ ভাঙার সিদ্ধান্ত অসাংবিধানিক ঘোষণা করেন সুপ্রিম কোর্ট। একই সঙ্গে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চ শনিবার অনাস্থা প্রস্তাবের সুরাহা করার নির্দেশ দেন।