১৭ মার্চ ২০২২, ২৩:৪৬

ইউক্রেনের শরণার্থী শিশুদের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে জার্মানির স্কুল

ইউক্রেনের শরণার্থী শিশুদের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে জার্মানির স্কুল  © সংগৃহীত

যুদ্ধের কারণে ইউক্রেন থেকে জার্মানিতে আসা শরণার্থীদের অর্ধেকই স্কুল শিক্ষার্থী বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাদের লেখাপড়ার সুব্যবস্থার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। জার্মানির শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক সংগঠন ভিবিই-র কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান উডো বেকমান এ তথ্য জানিয়েছেন।

উডো বেকমান জানান, ‘‘জার্মানির রাজ্য কর্তৃপক্ষগুলো দেখছে, শরণার্থী শিশুর সংখ্যা ধারণার চেয়েও বেশি। তাই তারা এখন ক্লাসরুম খালি আছে এমন স্কুল এবং জার্মান ভাষা শেখাতে পারে এমন শিক্ষক খুঁজছে।’’

কিন্তু করোনা শুরুর আগে থেকেই জার্মানিতে স্কুল শিক্ষকেরসংকট ছিল। করোনার কারণে শিক্ষকদের মধ্যে অসুস্থতাজনিত ছুটি নেয়া বেড়েছে। বর্তমানে প্রায় ১০ শতাংশ শিক্ষক এমন ছুটিতে থাকছেন বলে জানা গেছে। ফলে শিক্ষকের অভাব আরো প্রকট হয়েছে। ‘‘এতে চ্যালেঞ্জ দ্বিগুন হয়েছে। স্কুলে এমনিতেই শিক্ষক কম আছে। তার উপর শরণার্থী শিশুদের ভর্তি করতে হচ্ছে,’’ বলেন বেকমান।

আরেকটি সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, যুদ্ধের কারণে ট্রমায় আক্রান্ত শরণার্থী শিশুদের কাউন্সেলিং করা। ‘‘এটা স্বল্পমেয়াদি সমস্যা নয়,’’ মন্তব্য করে জার্মান এডুকেশন ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত শিক্ষক সংগঠনের নেতা আনিয়া বেনসিঙ্গার-স্টোলৎস দাবি করেন, ‘‘স্কুলের মনোবিদ কিংবা এ বিষয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের দিয়ে তাদের মানসিক সহায়তা দিতে হবে।’’

আমলাতান্ত্রিক বাধা এড়িয়ে শরণার্থী শিশুদের দ্রুত স্কুলে ভর্তি করতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা। কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী বেটিনা স্টার্ক-ভাটসিঙ্গার ইউক্রেনীয় শরণার্থীদের মধ্যে থাকা শিক্ষকদের জার্মানির স্কুল ও ডেকেয়ার সেন্টারে নিয়োগের পরামর্শ দিয়েছেন। এর ফলে শিক্ষকের অভাব সমস্যার একটা দ্রুত সমাধান হবে বলে মনে করছেন তিনি।

আরও পড়ুন: ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরু হলে বিশ্ববাজারে যে প্রভাব পড়বে

কিন্তু শরণার্থীদের মধ্যে কতজন শিক্ষক আছেন তার কোনো বিশ্বস্ত পরিসংখ্যান নেই। এছাড়া তাদের যোগ্যতার ভিত্তিতে জার্মানিতে কাজ করতে দেয়া যাবে কিনা, সেটাও আলোচনাসাপেক্ষ। তাই শিক্ষামন্ত্রীর এমন প্রস্তাব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন জার্মানির শিক্ষকদের সংগঠনের সভাপতি হাইনৎস-পেটার মাইডিঙ্গার। এটা কোনো টেকসই সমাধান নয় বলে মনে করছেন তিনি। বরং জার্মানির অবসর নেয়া শিক্ষকদের কাজে লাগানোর পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

২০১৫ ও ২০১৬ সালে সিরিয়া থেকে অনেক শরণার্থী আসার পর শিশুদের জার্মান ভাষা ও জার্মানি সম্পর্কে প্রাথমিক কিছু তথ্য দেয়ার জন্য বিশেষ ক্লাসের ব্যবস্থা করা হয়েছিল।

এই মৌলিক অবকাঠামো আবারও দ্রুত শুরু করা যেতে পারে, বলে মনে করেন ভিবিই-র কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান উডো বেকমান। ইউক্রেন থেকে আসা তরুণ শরণার্থীদের মধ্যে যাদের বয়স ১৬ বছরের বেশি তাদের জন্য বার্লিনে ৫০টি বিশেষ ‘ওয়েলকাম ক্লাসের’ ব্যবস্থা করা হয়েছে। [সূত্র: ডয়চে ভেলে বাংলা]