ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার ট্যাংক-সাঁজোয়া যানে কেন ‘জেড’ প্রতীক
ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক হামলার সমর্থনের প্রতীক হয়ে উঠেছে এই ‘জেড’। অর্থাৎ যাঁরা এই যুদ্ধে সমর্থন দিচ্ছেন বা প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের এ হামলাকে সমর্থন দিচ্ছেন, তাঁরা ‘জেড’-কে প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করছেন। এ যুদ্ধের প্রতি সমর্থনের অংশ হিসেবে রাজনীতিকেরা এ প্রতীক ব্যবহার শুরু করেছিলেন। এটি গাড়িতে, কাভার্ড ভ্যানে, বিলবোর্ডে, যাত্রীছাউনিতেও আঁকা হচ্ছে।
সংঘাত পীড়িত অঞ্চল থেকে পাওয়া ছবি/ ভিডিও বিশ্লেষণ করেন উন্মুক্ত উৎস নির্ভর বিশ্লেষকরা। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি তারা ইউক্রেনের সীমান্তে আসতে থাকা রাশিয়ার সেনা সরঞ্জাম- রসদ পরিবহনের ট্রাক, সাঁজোয়া যান, ট্যাংক ইত্যাদির গায়ে প্রথমবার ইংরেজি বর্ণমালার ‘জেড’ (Z) অক্ষরটির ছাপ আঁকা দেখতে পান।
এনিয়ে তখন পশ্চিমা বিশেষজ্ঞদের শুরু হয় তুমুল জল্পনা। কারণ রাশিয়ার বর্ণমালা সিরিলিক, যেখানে ইংরেজির মতো লেখা হয় এমন ‘জেড’ অক্ষরই নেই।
বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ ধারণা করেন, জেড হয়তো রাশিয়ার সেনা মোতায়েন স্থানের নির্দেশক। যেমন রুশ শব্দ জাপাড- এর অর্থ পশ্চিম। আর রাশিয়া থেকে ইউক্রেন পশ্চিমেই অবস্থিত।
কিন্তু, অধিকাংশই একমত হন রণাঙ্গনে ভুল করে নিজ বাহিনীর ওপর সহযোগী বাহিনীর হামলায় ক্ষয়ক্ষতি ঠেকাতেই- এ চিহ্ন ব্যবহার করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: স্মার্টফোনের বিকল্প আসছে: বিল গেটস
এ ব্যাখ্যার কারণ বেশ জোরালো। ইউক্রেন ও রাশিয়া উভয়েই সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত দেশ। তাদের হাতে রয়েছে সোভিয়েত আমলের বিপুল সমরাস্ত্র। যেমন ইউক্রেনের হাতে পর্যাপ্ত সংখ্যায় পুরনো সোভিয়েত ডিজাইনের ট্যাংক রয়েছে, যাদের সাথে রাশিয়ার আধুনিক সংস্করণের ট্যাংকগুলোর সাদৃশ্য আছে। অন্যান্য যুদ্ধ সরঞ্জামের ক্ষেত্রেও একথা প্রযোজ্য। তাই বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, নিজ বাহিনীকে আলাদা চিহ্নিত করতেই মস্কো ইংরেজির 'জেড' অক্ষর ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেয়।
এসব তাত্ত্বিক অনুমানের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে তারা নিজেদের ইনস্টাগ্রাম চ্যানেলে করা একটি পোস্টে জানিয়েছে, জেড- এর অর্থ 'জা পোবেদু' বা বিজয়।
তবে রাশিয়ার স্পেশাল ফোর্সের সাবেক কর্মকর্তা সের্গেই কুভিকিন দেশটি সাময়িকী লাইফকে বলেন, রাশিয়ার বাহিনীর ভিন্ন ভিন্ন ইউনিটকে চিহ্নিত করতে ভিন্ন ভিন্ন প্রতীক ব্যবহার করা হচ্ছে। কোনো ইউনিটকে একটি বর্গক্ষেত্রের মধ্যে জেড লিখে, কোনো ইউনিটকে বৃত্তের মধ্যে জেড লিখে, কোনো ইউনিটকে জেডের সঙ্গে তারা জুড়ে দিয়েছে, আবার কোনো ইউনিটকে শুধু জেড দিয়ে চিহ্নিত করা হয়। নিজেদের স্বতন্ত্র করতে এসব প্রতীক ব্যবহার করা হয়। কোনো ইউনিটের সেনাকে যাতে অন্য ইউনিটের কামান্ডারের কাছ থেকে সাহায্য চাইতে না হয়, সে জন্য এসব প্রতীক ব্যবহার করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।