১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৬:৫৬

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ইউনিফর্ম সবাইকে মানতে হবে: হিজাব বিতর্কে যোগী

বিতর্কের জন্ম দেওয়া উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।  © সংগৃহীত

ভারতের কর্ণাটকের হিজাব বিতর্ক আরও উস্কে দিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের বিতর্কিত মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ৷ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ইউনিফর্ম সকলকেই মানতে হবে বলে গণমাধ্যমে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মন্তব্য করেছেন তিনি।

আজ সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন শরীয়ত নয়, সংবিধান মেনে সবাইকে চলতে হবে। খবর জার্মানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলে বাংলা।

সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ভারতীয় সংবিধান পোশাকের অধিকার দিয়েছে৷ কিন্তু সেই অধিকার সার্বিক নয়৷ স্কুল বা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিফর্ম সকলকেই মানতে হবে৷ সেখানে ধর্মীয় পোশাক মেনে নেওয়া যায় না৷ শুধু তা-ই নয়, যোগীর মন্তব্য, ‘‘নতুন ভারত সংবিধান মেনে চলবে৷ ভারত শরিয়াত আইন মেনে চলবে না৷’’

আরও পড়ুন: রাবিতে প্রেম বঞ্চিত সংঘের বিক্ষোভ, খাবার বিতরণ-বৃক্ষরোপণ

উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনের আবহে একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন যোগী৷ এর আগে তিনি বলেছিলেন, উত্তরপ্রদেশের ৮০ শতাংশ মানুষ বিজেপিকে সমর্থন জানাবে, ২০ শতাংশ মানুষ অন্যদিকে থাকবেন৷ হিন্দু-মুসলিম মেরুকরণের কথা মাথায় রেখেই তিনি একথা বলেছিলেন বলে বিরোধীরা অভিযোগ তুলেছিল৷ কারণ, উত্তরপ্রদেশে হিন্দু-মুসলিম অনুপাত এর কাছাকাছি৷ যোগী অবশ্য সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ধর্মীয় মেরুকরণের জন্য তিনি একথা বলেননি৷

এদিন পশ্চিমবঙ্গকেও আলাদা করে নিশানা করেছেন যোগী৷ তিনি বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গ থেকে মানুষ এসে উত্তরপ্রদেশে গন্ডগোল ছড়ানোর চেষ্টা করছেন৷ নাম না নিলেও তিনি যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে আঙুল তুলছেন, তা কার্যত স্পষ্ট৷ বস্তুত, সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশে গিয়ে সমাজবাদী পার্টির নেতা এবং যোগী আদিত্যনাথের সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী অখিলেশ যাদবের হয়ে প্রচার করেছিলেন মমতা৷ তারপরেই যোগীর এই বক্তব্য রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল৷

আরও পড়ুন: পরীক্ষার ফলে অনিয়ম করায় ঢাবির দুই শিক্ষককে অব্যাহতি

ইতোমধ্যে, বিতর্কের জন্ম দেওয়া যোগীর সাক্ষাৎকার নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠেছে৷ কেননা, ভারত কখনোই শরিয়ত আইনে চলে না৷ তাহলে হঠাৎ কেন যোগী সেই বিষয়ে কথা বললেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হচ্ছে৷ বিরোধীদের বক্তব্য, এসব কথা বলে যোগী আসলে মেরুকরণ আরো বাড়াতে চাইছেন৷ তবে বিজেপির বক্তব্য, এই কথাগুলি বলে যোগী কংগ্রেসের ‘তোষণে’র রাজনীতির বিরোধিতা করার চেষ্টা করেছেন৷ বিজেপি বরাবরই অভিযোগ করে, কংগ্রেস সংখ্যালঘু তোষণের রাজনীতি করে। তবে, কংগ্রেস বরাবরের মত তা অস্বীকার করে আসছে। কংগ্রেস বলছে বরং বিজেপি সংখ্যাগুরু তোষণের রাজনীতি করে ভোট ব্যাংক বাড়াতে চাইছে।

উল্লেখ্য, কর্নাটকের স্কুল-কলেজে হিজাব নিষিদ্ধ করার পর এ নিয়ে বিতর্ক চলছে ৷ নিষেধাজ্ঞার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মামলাও হয়েছে আদালতে৷ এর আগে টুইটারে এক ভিডিও বার্তায় হিজাব পরা মেয়েই একদিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী হবে বলে মন্তব্য করেন ভারতের অল ইন্ডিয়া মজলিশ-এ ইত্তেহাদুল মুসলিমিন বা এআইএমআইএম দলের প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়েইসি। এরপরই যোগী হিজাব নিয়ে সরব হলেন।