০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ২০:১৮

ওয়েব সিরিজে অনুপ্রাণিত হয়ে ছাদ থেকে লাফ দিয়ে স্কুলছাত্রের মৃত্যু

ছাদ থেকে কিশোরের লাফ  © প্রতীকী ছবি

ওয়েব সিরিজ দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে ১১ তলা বহুতল ভবন থেকে লাফ দিয়েছেন এক যুবক। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে পুলিশ মনে করছে, একটি জাপানি ওয়েব সিরিজ দেখার পরই বহুতলের ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়েছে ওই কিশোর।

শনিবার ভারতের ফুলবাগানের একটি অভিজাত আবাসনে এই ঘটনা ঘটে। পরে আবাসনের সুইমিং পুলের পাশ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

জানা যায়, ফুলবাগানের ক্যানাল সার্কুলার রোডের বাসিন্দা ওই কিশোরের নাম বিরাজ। পার্ক সার্কাসের একটি নামী স্কুলের ছাত্র তিনি। সরস্বতী পুজো নিয়ে বাড়িতে যখন সবাই ব্যস্ত, তখন সকলের নজর এড়িয়ে ছাদে চলে যান তিনি। এর কিছু ক্ষণ পরেই আওয়াজ পেয়ে সুইমিং পুলের কাছে ছুটে গিয়ে নিরাপত্তারক্ষীরা দেখেন, বিরাজের রক্তাক্ত দেহ পড়ে আছে মাটিতে।

পরিবারের বরাত দিয়ে সংশ্লিষ্ট পুলিশ জানিয়েছে, অনলাইন ক্লাসের জন্য ইলেকট্রনিক গেজেট কিনে দেওয়া হয়েছিল ওই কিশোরকে। ওই গেজেট নিয়েই সারা দিন থাকতেন বিরাজ। গ্যাজেটটি উদ্ধার করে একটি জাপানি ওয়েব সিরিজ সম্পর্কে জানতে পারে পুলিশ। পুলিশের অনুমান, ‘প্ল্যাটিনাম এন্ড’ নামক ওই জাপানি সিরিজ দেখেই ছাদ থেকে ঝাঁপ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বিরাজ।

ফুলবাগান থানার এক পুলিশকর্তা জানান, ওই সিরিজে দেখানো হয়েছে, কিশোর নায়ক ছাদ থেকে ঝাঁপ দেয় এবং তাকে বাঁচায় এক ‘দেবদূত’। এর পরেই ওই কিশোর ঐশ্বরিক ক্ষমতার অধিকারী হয়। এই গল্প দেখেই হয়তো ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়েছে বিরাজ।

অতীতেও দেখা গেছে, ব্লু হোয়েল, পাবজির মতো মোবাইল গেম খেলায় মেতে প্রাণ গিয়েছে বহু শিশুর।

শিশু-কিশোরদের এমন মনোপরিবর্তনের বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘সিগারেট, মদ্যপানের মতো বা কেমিক্যাল নেশার মতোই আচরণগত নেশা হয়ে থাকে। মোবাইলে গেম খেলা বা কোনো ছবি-সিরিজ বা সিরিয়াল দেখার নেশা এই পর্যায়ে পড়ে। মহামারি পর্বে দেখা গেছে, অনলাইন ক্লাস চলাকালীন আলাদা উইন্ডো খুলে অন্য কাজ করছে বাচ্চারা। আগে বাচ্চারা মাঠে খেলাধুলো করত, এখন মোবাইলে গেম খেলে। বাচ্চারাও নিজেদের প্রমাণ করতে চায়, ওদের মধ্যেও পারিপার্শ্বিক চাপ থাকে। এ সব থেকেই ওরা ঝুঁকি নেয়।’

‘শিশু-কিশোরদের মোবাইল ব্যবহার নিয়ে অভিভাবকদের আরও সজাগ হতে হবে। সন্তান মোবাইল নিয়ে কী করছে, না-করছে, মাঝে মাঝে একটু দেখে নেওয়া জরুরি। সন্তানের ডিজিটাল ডিটক্স অত্যন্ত জরুরি। এর জন্য মা-বাবার উচিত, সন্তানকে আরও সময় দেওয়া। তাদের সঙ্গে গল্প করা।’

সূত্রঃ দ্যা টাইমস অফ ইন্ডিয়া