২৩ জানুয়ারি ২০২২, ১৯:২৬

চাঁদের ফালির মতো নৌকাগুলোর কথা মনে পড়বে: বিদায়ী রাষ্ট্রদূতের আবেগি স্ট্যাটাস

রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলার  © সংগৃহীত ছবি

“আমাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছে, গত তিন বছরে বাংলাদেশে আমার সবচেয়ে মধুর স্মৃতি কোনগুলো। সেসব স্মৃতি বর্ণনা করা অসম্ভব।

কিন্তু আমি জানি, আমার মনে পড়বে এখানকার রঙিন রিকশা আর এর চালকদের মুখগুলো। পুরনো ঢাকার দালানের ছাদে সুতোর বাঁধনে উড়ন্ত ঘুড়ির নাচন আর সন্ধ্যার আকাশের পাখিরা। গাঁয়ের পথে স্কুলের পোশাক পরা শিশুদের পায়ে হেঁটে বাড়ি ফেরা। চট্টগ্রামের জাহাজ ভরা নদী। কক্সবাজারের চাঁদের ফালির মতো পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর নৌকাগুলো। সিলেটের গাঢ় সবুজ পাহাড় আর বরিশালের বৈচিত্র্যময় সবুজ। বান্দরবানের পাহাড় ও সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলে ভোরের কুয়াশা, সবকিছু।

গত তিন বছর বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন আমার জীবনের অন্যতম বড় সম্মান ও আনন্দের।

মাছ বাজারে আর্ল মিলার: সংগৃহীত ছবি



যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যেকার শক্তিশালী সম্পর্ক রয়েছে এবং এটা আরো জোরদার হবে। সিনেটর এডওয়ার্ড কেনেডি ১৯৭২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেমন বলেছিলেন, আমেরিকার আসল পররাষ্ট্রনীতি হলো নাগরিকের সাথে নাগরিকের, বন্ধুর সাথে বন্ধুর, এবং মানুষের সাথে মানুষের। আমার মনে হয়, আমি আমাদের দু’দেশের বন্ধুত্বের বন্ধনকে শক্তিশালী করতে কিছুটা হলেও ভূমিকা রেখেছি।

আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বলেছিলাম, আমার কার্যভার নেয়ার প্রথম আট মাসে আমি বাংলাদেশের আটটি বিভাগ ঘুরে দেখব। সেটা করতে পেরে আমি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি। নিজেকে আরো ভাগ্যবান মনে হয় এই জন্য যে, এই অসাধারণ দেশের এত মানুষের সাথে আমি সাক্ষাৎ করতে পেরেছি এবং অনুভব করেছি তাঁদের হৃদয়ের উষ্ণতা, সৌজন্য ও উদারতা যা বাংলাদেশের মানুষের অনন্য বৈশিষ্ট্য।

বাংলাদেশের সহৃদয় মানুষদের সব অনুগ্রহের স্মৃতি আমি সযত্নে ধরে রাখবো। এই অসাধারণ দেশে আমি বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত অতিথি হওয়ার সুযোগ পেয়েছি এবং কৃতজ্ঞচিত্তে বিদায় নিচ্ছি।

একটা অনুরোধ রাখবো। যখন রাষ্ট্রদূত হাস আসবেন, তাঁকেও আপনারা একই উষ্ণতা ও সহায়তা দেবেন যা আপনারা আন্তরিকভাবে আমাকে ও আমার পরিবারকে দিয়েছেন।” - রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলার

[ইউ.এস. এম্বাসী, ঢাকার ফেসবুক পেজ থেকে]


প্রসঙ্গত, তিন বছরের ঢাকা মিশন শেষ করে বিদায় নিয়েছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার। শুক্রবার বিকেলে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে রওনা দেন। ২০১৮ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশে রাষ্ট্রদূত হিসেবে যোগ দেন মিলার। তার সময়কালে যুক্তরাষ্ট্র র্যাতব এবং এ বাহিনীর সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। ঢাকা এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।