১০ জানুয়ারি ২০২২, ১৫:৫৫

আফগানিস্থানে হারিয়ে যাওয়া শিশুটিকে ফিরে পেল পরিবার

শিশু সোহাইলকে তুলে নিচ্ছে তার দাদা  © সংগৃহীত ছবি

আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহার প্রক্রিয়ার মধ্যে একটি শিশুকে দেয়ালের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা বিদেশি সেনাদের হাতে তুলে দেওয়ার ঘটনা সেসময় বেশ আলোড়ন তুলেছিল। বিশৃঙ্খলার মধ্যে বাবা-মার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া এ শিশুকে অবশেষে ফিরে পেয়েছে তার পরিবার। খবর বিবিসি 

ধারণার চেয়ে দ্রুত গতিতে গত বছরের ১৫ আগস্ট কাবুল দখল করে নেয় তালেবান। এ সময় দেশটি থেকে পালানোর জন্য হাজার হাজার মানুষ কাবুল বিমানবন্দরে ভিড় করেন। সে সময় দুই মাস বয়সি সোহাইল আহমাদিকে দেয়ালের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা আমেরিকার সেনাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তার পরিবার ভেতরে ঢুকলে তাকে আর খুঁজে পায়নি।

আরও পড়ুন: ঝুঁকিপূর্ণদের অনলাইনে ক্লাস করার পরামর্শ শিক্ষামন্ত্রীর

অনেক খোঁজাখুঁজির পরও পাওয়া না যাওয়ায়  ওই শিশুর বাবা মির্জা আলী আহমাদি, মা সুরাইয়া ও তাদের চার সন্তানকে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লাইটে তুলে দেওয়া হয়। মির্জা আলী আহমাদি কাবুলের যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের নিরাপত্তাকর্মী ছিলেন।

এর পর থেকে তাদের কোনো ধারণাই ছিল না তাদের সন্তান কোথায় আছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদন পড়ার পর সোহাইলের পরিবার নভেম্বরে তাকে ২৯ বছর বয়সি হামিদ শাফি নামের এক ট্যাক্সিচালকের বাসায় শনাক্ত করে।

রয়টার্স জানায়, হামিদ শাফি সোহাইলকে বিমানবন্দরে একা কান্নারত অবস্থায় পেয়েছিল। ওই শিশুর পরিবারের সদস্যদের খোঁজার পর না পেয়ে তিনি তাকে বাসায় নিয়ে যান এবং নিজের সন্তানের মতো লালন পালন করতে থাকেন।

তিনি ওই শিশুর নাম দেন মোহাম্মদ আবেদ এবং তার সব শিশুর ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেন।

এর পর আফগানিস্তানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রদেশ বাদাখশানের বাসিন্দা সোহাইলের দাদা মোহাম্মদ কাসেম রজভী যখন নিশ্চিত হলেন তার নাতির হদিস মিলেছে, তখন তিনি তাকে নেওয়ার জন্য সেখান থেকে কাবুলে আসেন। কিন্তু সোহাইলকে কোনোভাবেই ফেরত দিতে রাজি হননি ট্যাক্সিচালক হামিদ।

আরও পড়ুন: টিকা ছাড়াই ক্লাস করতে পারবে ১২ বছরের কম বয়সীরা

হামিদের দাবি ছিল, তাকে এবং তার পরিবারকে যেন যুক্তরাষ্ট্রে সরিয়ে নেওয়া হয়।

সাত সপ্তাহ আলোচনার পর তালেবানের পুলিশ দুই পরিবারের মধ্যে মধ্যস্থতা করে সোহাইলকে শনিবার তার দাদার হাতে তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করে।

ভিডিওর মাধ্যমে সোহাইলকে ফিরে পাওয়ার দৃশ্য দেখে আনন্দে আত্মহারা হয়ে যান তারা বাবা-মা।

রজভী বলেন, সোহাইলের বাবা-মা উদযাপন করছে, নৃত্য করছে, গাইছে। এটি মূলত বিয়ের উৎসবের মতো আনন্দের বিষয়। তাদের আশা, সোহাইলকে যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে নিয়ে আসার পক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন হবে, যেখানে তারা বর্তমানে বাস করছেন।