স্মৃতি থেকে আঁকা ম্যাপে ৩৩ বছর পর মা-ছেলের পুনর্মিলন
স্মৃতি থেকে আঁকা নিজ গ্রামের একটি ম্যাপের সাহায্যে ৩৩ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া ছেলে খুঁজে পেয়েছে তার প্রকৃত মাকে। চীনের ইউনান প্রদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর ঝাওটংয়ে এ ঘটনাটি ঘটেছে। খুঁজে পাওয়া ওই ছেলের নাম লি জিংওয়েই। প্রসঙ্গত, লি’র নিজ হাতে আঁকা ওই ম্যাপটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপ ডয়িনে শেয়ার করা হয়েছিল।
শনিবার (১ জানুয়ারি) ইউনানের ঝাওটং শহরে ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে মা-ছেলের সম্পর্কের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর তাদের এই পুনর্মিলন ঘটে। খবর যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম বিবিসির।
আরও পড়ুন: মুঠোফোনেরও জাদুঘর চালু, থাকছে ভার্চ্যুয়াল ভ্রমণের সুযোগ
প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ডিসেম্বর ওই ম্যাপটি ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপ ডয়িনে হারিয়ে যাওয়া লি পোস্ট করার পর ছোট একটি গ্রামের মিল খুঁজে পায় সেখানকার পুলিশ। যেখানে এক নারী তার সন্তান হারানোর বিষয়ে অনেক বছর আগে পুলিশের কাছে অভিযোগ দিয়েছিলেন।
বর্তমানে দক্ষিণ চীনের গুয়াংডং প্রদেশে তার বাস। তিনি পালক বাবা-মাকে জিজ্ঞাসা করে ও ডিএনএ ডাটাবেজ ঘেঁটে নিজের আসল পরিচয় জানতে ব্যর্থ হোন। এরপর দ্বারস্থ হন ইন্টারনেটের।
আরও পড়ুন: ঢাকায় সাঁতার শেখার সেরা স্থান
‘এটা আমার স্মৃতি থেকে আঁকা বাড়ির ম্যাপ’ লিখে ডয়িনে শেয়ার করা লি’র হাতে আঁকা ওই ছবিতে ছিল কয়েকটি ঘর, একটি ভবন (লি’র ধারণা সেটি ছিল একটি স্কুল) একটি বাঁশঝাড় ও একটি ছোট পুকুর।
‘আমি একজন শিশু, বাড়ি খুঁজে বেড়াচ্ছি’ লি’র লেখা একটি পোস্টে বলা আছে, ১৯৮৯ সালে ৪ বছর বয়সে তাকে তাদেরই এক প্রতিবেশী লোভ দেখিয়ে বাড়ি থেকে ১ হাজার ৮০০ কিলোমিটার দূরে হেনানে নিয়ে গিয়ে শিশু পাচারকারী একটি চক্রের কাছে বিক্রি করে দিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: আবর্জনার বিনিময়ে মিলবে বই পড়ার সুযোগ
ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, ৩ দশকেরও বেশি সময় পর তাদের পুনর্মিলনে ছেলে প্রথমে মায়ের মুখে থাকা মাস্ক সরিয়ে চেহারা দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং মাকে জড়িয়ে ধরেন।
উল্লেখ্য, চীনে শিশু অপহরণের ঘটনা প্রায়ই ঘটে কারণ অনেকেই ছেলে শিশুর জন্য খুব আগ্রহী। অল্প বয়সে অপহরণ হওয়া এসব শিশুদের পরে অন্য পরিবারে বিক্রি করে দেওয়া হয়। ২০১৫ সালের এক হিসাবমতে, দেশটিতে প্রতিবছর প্রায় ২০ হাজার শিশু অপহরণের শিকার হয়।
এদিকে, লি তার ডয়িন প্রোফাইলে দীর্ঘ ৩৩ বছরের অপেক্ষা শেষে পুনর্মিলনের বিষয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।