অধ্যক্ষের হয়রানিতে স্কুলভবন থেকে লাফ দিয়ে ছাত্রীর আত্মহত্যা
ভারতের গুয়াহাটিতে স্কুল পড়ুয়া এক ছাত্রী আত্মহত্যা করে মারা গেছেন। এ ঘটনায় তারই স্কুলের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। এ সংক্রান্ত আলামতও মিলেছে বলে জানিয়েছে আসাম পুলিশ। ইতোমধ্যে আত্মহত্যায় প্ররোচনার জন্য ওই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। ১৩ বছর বয়সী ওই কিশোরী গুয়াহাটি স্কুলের অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী।
শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) ওই ছাত্রী তার স্কুলের পঞ্চম তলা থেকে লাফ দিলে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রবিবার (২৬ ডিসেম্বর) সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। খবর ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির।
আরও পড়ুন: ‘মাতৃগর্ভ এবং কবর ছাড়া নেই কোনো নিরাপদ স্থান, লিখে ছাত্রীর আত্মহত্যা
পুলিশের বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানিয়েছে, স্কুলের অধ্যক্ষ অন্য ছাত্রের সঙ্গে তার ‘প্রেমের সম্পর্কের’ জন্য ওই ছাত্রীকে হয়রানি করেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। পাশাপাশি এ ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি আলামতের (শিক্ষার্থীর হাতে লেখা চিরকুট) খোঁজ পেয়েছে পুলিশ।
ওই ছাত্রীর ঘরে খুঁজে পাওয়া আলামতে (চিরকুট) লেখা ছিল, “স্কুল নিরাপদ নয় এবং শিক্ষকদের বিশ্বাস করা যায় না।” এতে আরও লেখা ছিল, “মানসিক নির্যাতন তাকে স্বপ্নেও তাড়া করতো আর এ কারণে তিনি ঠিকমতো পড়াশোনা বা ঘুমাতে পারেননি।”
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ নেতা থেকে ‘ফেনীর গডফাদার’, বিতর্কিত এক জীবন
এদিকে, এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করা হয়েছে। বিক্ষোভে অন্যান্যদের মধ্যে অংশ নিয়েছেন ওই ছাত্রীর বাবা-মা, তার পরিবারের সদস্যবৃন্দ ও এলাকাবাসী।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ‘স্কুলের অধ্যক্ষ প্রেমের সম্পর্ক গড়া ছাত্রটির বাবা-মায়ের সামনে ওই ছাত্রীকে অপমান করেছেন।’
এ ঘটনায় পুলিশ সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে, পলাতক গুয়াহাটি স্কুলের ওই অধ্যক্ষের খোঁজে তারা গ্রেফতার অভিযান শুরু করেছেন।
আরও পড়ুন: এক বছরে ৩৬ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা
উল্লেখ্য, চেন্নাইয়ের এক কলেজ ছাত্রী আত্মহত্যা করে মারা যাওয়ার পর খুঁজে পাওয়া তার হাতে লেখা চিরকুটে লিখা ছিল “একটি মেয়ে শুধুমাত্র তার মায়ের গর্ভে আর কবরে নিরাপদ”। আলোচিত এ ঘটনায় ওই ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ এখন খতিয়ে দেখছে পুলিশ। সেই সঙ্গে ২১ বছর বয়সী এক কলেজ ছাত্রকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। গ্রেফতার হওয়া ওই ছাত্রের বাবা আত্মহত্যাকারী ছাত্রীর কলেজের অধ্যক্ষ।
এর আগে গত সপ্তাহেই তামিলনাড়ুর কোয়েম্বাটোর জেলায় ঝোপের মধ্য থেকে এক হাই স্কুল ছাত্রীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এ বছরের ১১ ডিসেম্বর থেকে তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। যৌন নির্যাতনের পর তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। তারও কিছুদিন আগে কোয়েম্বাটোরেরই আরেক ছাত্রী তার এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে আত্মহত্যা করেছিল। বর্তমানে ওই শিক্ষক পুলিশের হেফাজতে রয়েছে।