ফিলিপাইনে ভয়াবহ টাইফুনে তিন শতাধিক মানুষের প্রাণহানি
এ বছরের সবচেয়ে শক্তিশালী টাইফুন ‘রাই’-এর আঘাতে ফিলিপাইনে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৭৫ জন। এতে আহত হয়েছেন আরও কয়েকশো লোক, এদের মধ্যে অনেকের অবস্থা গুরুতর।এখনও নিখোঁজ রয়েছেন ৫০ জনেরও বেশি লোক। তাদের খোঁজে উদ্ধার অভিযান চলছে। খবর আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি)।
শুক্রবার (১৭ ডিসেম্বর) দক্ষিণ চীন সাগরে আছড়ে পড়ার আগে টাইফুন রাই-এর গতি ছিল ঘণ্টায় ২৭০ কিলোমিটার। পরে গতিবেগ কমে প্রতি ঘণ্টায় দাঁড়ায়েছে ১৯৫ কিলোমিটার।
টাইফুনের কারণে আকস্মিক বন্যায়, দেয়াল ধস, ভূমিধস ও ভেঙে পড়া গাছপালার নিচে চাপা পড়ে অনেকের মৃত্যু হয়েছে। নেগ্রোস অক্সিডেন্টাল প্রদেশে একজন মহিলাকে টাইফুন উড়িয়ে নিয়ে গেছে এবং তাকে মৃত উদ্ধার করেছেন দেশটির পুলিশ। অপর আরেকটি প্রদেশে ৫৭ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে একটি গাছের ডালে ঝুলন্ত মৃত অবস্থায় পেয়েছেন উদ্ধারকর্মীরা।
আরও পড়ুন: সাইক্লোন, হ্যারিকেন ও টর্নেডোর মধ্যকার পার্থক্য
দেশটির জাতীয় পুলিশের তথ্য অনুসারে, এ ঘটনায় এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৩৭৫ জন নিহত হয়েছেন ও নিখোঁজ রয়েছেন আরও ৫৬ জন। এতে অন্তত আরও ৫০০ জন আহত হয়েছেন। বেশ কয়েকটি কেন্দ্রীয় প্রদেশে এখনও যোগাযোগ ও বিদ্যুৎ সংযোগ পুনরায় চালু করার কাজ চলছে।
টাইফুনে আঘাতপ্রাপ্ত দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশের দিনাগাট দ্বীপপুঞ্জের গভর্নর আরলেন বাগ-আও জানিয়েছেন, ১ লাখ ৩০ হাজারের বেশি লোক ঘরবাড়ি ছেড়েছে। ঝড়টির আঘাত ছিল বিশাল দৈত্যের মতো, যা সবকিছু ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছে। বাতাস ছয় ঘণ্টা ধরে বারবার উত্তর থেকে দক্ষিণ এবং পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে ঘূর্ণিবেগে আঘাত হানছিল।
আরও পড়ুন: শীতে কাঁপছে ভারত
বাগ-আও আরও জানিয়েছেন, দ্বীপটিতে বাড়ি ভেঙে, ছাদ ধসে ও কাঁচের টুকরো পড়ে অন্তত ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আহত হয়েছেন আরও ১০০ জনেরও বেশি। শত শত আহত বাসিন্দাকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এদের অনেককে অস্ত্রোপচার করতে হয়েছে। উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ গ্রাম থেকে হাজার হাজার বাসিন্দাকে সরিয়ে না নিলে হতাহত আরও বেড়ে যেতো।
উল্লেখ্য, বিশ্বের সবচেয়ে জলবায়ুগত দুর্যোগপ্রবণ দেশগুলোর একটি ফিলিপাইন। বছরে এখানে গড়ে ২০টি টাইফুন আঘাত হানে। এর আগে ২০১৩ সালে টাইফুন হাইয়ানে দেশটির ৬ হাজারের বেশি লোক মারা গেছেন।