ভারতে খ্রিস্টান মিশনারি স্কুলে ধর্মীয় উগ্রপন্থীদের হামলা
ভারতের মধ্যপ্রদেশের বিদিশা জেলার বিখ্যাত খ্রিস্টান মিশনারি স্কুল সেন্ট জোসেফে হামলা হয়েছে। সোমবার হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠি বজরং দলের সদস্যরা শিক্ষার্থীদের ধর্মান্তরিত করার অভিযোগে স্থানীয়দের নিয়ে এ হামলা চালায়।
ডয়চে ভেলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই স্কুলে আট ছাত্রকে ধর্মান্তরিত করা হয়েছে। এর জেরে সোমবার ওই স্কুলের বাইরে জড়ো হন বিপুল সংখ্যক মানুষ। এদের অধিকাংশই বজরং দলের সদস্য।
সোমবার তারা স্থানীয় লোকজনকে নিয়ে স্কুল চত্বরে পৌঁছায় এবং লাঠি ও পাথর নিয়ে স্কুলে আক্রমণ চালায়। যখন এ ঘটনা ঘটছে, স্কুলে তখন দ্বাদশ শ্রেণির গণিত পরীক্ষা চলছিল। এ সময় পুলিশের সাহায্যে দ্রুত ওই ছাত্র ও শিক্ষকদের স্কুল থেকে বের করে দেয়া হয়।
স্কুলের ছাত্ররা জানায়, কোনোমতে প্রাণ হাতে করে তাদের স্কুল থেকে বের হতে হয়েছে। তাদের লক্ষ্য করে আক্রমণকারীরা ঢিল ছুঁড়ছিল।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়, হামলাকারীরা স্কুলের ভবনের দিকে পাথর ছুঁড়তে থাকে। মোবাইল ফোনে তোলা ভিডিওতে দেখা গেছে, বিপুল সংখ্যক লোক স্কুলে সামনে জড়ো হয়ে স্কুল প্রশাসনের বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছেন।
এ ঘটনার পর এলাকায় তুমুল উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ জানিয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, পুলিশ সময়মতো ব্যবস্থা নেয়নি। স্কুলে যে আক্রমণ হতে পারে, তা আগেই তারা জেনেছিল এবং পুলিশের কাছে সাহায্য চেয়েছিল। কিন্তু পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
বজরং দলের স্থানীয় নেতা জানিয়েছেন, ওই স্কুলে ধর্মন্তকরণের কাজ চলছে। তারা তদন্ত চান। অভিযোগ প্রমাণিত হলে স্কুল ভেঙে দেয়া হবে। তবে আক্রমণের বিষয়টি নিয়ে তিনি মন্তব্য করেননি।
স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যে আট ছাত্রের ধর্মান্তরকরণ হয়েছে বলে অভিযোগ, সেই নামের কোনো ছাত্রই ওই স্কুলে নেই। পুরো বিষয়টি নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে ভারত জুড়ে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো এ হামলার নিন্দা জানিয়েছে।
সঙ্ঘ পরিবারের একটি শাখা সংগঠন হলো বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। বজরং দল হলো বিশ্ব হিন্দু পরিষদের যুব শাখা। ভারতে সক্রিয় হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম।