র্যাগিংয়ের শিকার মেডিকেল ছাত্রীর আত্মহত্যার চেষ্টা
সরকারের কঠোরতা সত্ত্বেও র্যাগিংয়ের ঘটনা থামাছে না। সরকারি মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রী র্যাগিং-এ বিরক্ত হয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। রোববার (৫ ডিসেম্বর) ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের সালেম জেলায় এই ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী ছাত্রী অভিযোগ করেছে যে তাকে সিনিয়র ছাত্ররা র্যাগ করেছে, যার কারণে সে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যে চারজন সিনিয়রের বিরুদ্ধে ওই মেডিক্যাল ছাত্রী অভিযোগ দিয়েছিল তার ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত করছে।
তথ্য অনুযায়ী, রবিবার হোস্টেলের কক্ষে অভিযোগকারী ছাত্রীকে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়। এরপর সহকর্মীরা তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে, সেখানে তার চিকিৎসা চলছে। পুলিশ বলছে, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, আত্মহত্যার চেষ্টার পেছনে র্যাগিং হতে পারে।
এই ক্ষেত্রে, ধর্মপুরি মেডিকেল কলেজের ডিন, ডাঃ অমুধাভল্লী বলেছেন, যে ছাত্র আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল সে নামক্কাল জেলার রাসিপুরম এলাকার বাসিন্দা। যিনি কয়েক সপ্তাহ আগে র্যাগিংয়ের অভিযোগ জানিয়েছিলেন। ছাত্রীর অভিভাবকদের এই তথ্য জানিয়ে বিষয়টির তদন্তও শুরু করা হলেও পরে ওই ছাত্রী অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেন।
একই সঙ্গে কলেজ ম্যানেজমেন্ট বলছে, অভিযোগ প্রত্যাহার করেই হতাশায় চলে গিয়েছিল ওই ছাত্রী। এমন পরিস্থিতিতে তাকে কাউন্সেলিং করা হচ্ছিল।
পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, আপাতত এই ঘটনায় কোনও এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়নি, তবে সমস্ত দিক দিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কলেজ কর্তৃপক্ষ বলছে, ক্যাম্পাসে র্যাগিং নিষিদ্ধ। অভিযুক্ত সিনিয়র শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার আগে অন্যান্য শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকদের বক্তব্য নেওয়া হচ্ছে।
বলা হচ্ছে যে তামিলনাড়ুর অনেক কলেজে র্যাগিংয়ের ঘটনা ঘটলেও, কলেজ ম্যানেজমেন্ট কোনওভাবেই ভিকটিমকে সহযোগিতা করে না, কারণ তারা অপবাদের ভয় পায়।
মাদুরাই মনোবিজ্ঞানী এবং কাউন্সেলর হাকিব খান রাথার বলেছেন যে এই ধরনের কলেজ ব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত, যারা অপবাদের ভয়ে র্যাগিংয়ের ক্ষেত্রে কোনও অভিযোগ নথিভুক্ত করে না।
কলেজের নামের চেয়ে প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এই ধরনের ক্ষেত্রে তামিলনাড়ু সরকারের ব্যবস্থারও খুব অভাব, যা কলেজ প্রাঙ্গনে র্যাগিংয়ের ঘটনা ঘটানো অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয় না।
সরকারকে এ ধরনের ঘটনাগুলোকে আমলে নিতে হবে, অন্যথায় অনেক প্রতিশ্রুতিশীল নিরপরাধ শিক্ষার্থী প্রাণ হারাবে বা মানসিক সমস্যা নিয়ে জীবনযাপন করতে বাধ্য হবে। সূত্র: বাংলা নিউজ