রোহিঙ্গাদের সুরক্ষার বিষয়ে সর্বসম্মতিক্রমে প্রস্তাব পাস
এই প্রথম জাতিসংঘে সর্বসম্মতিক্রমে রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার জন্য একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে। বুধবার (১৭ নভেম্বর) জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের থার্ড কমিটিতে ‘মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানবাধিকার পরিস্থিতি’ বিষয়ক ওই প্রস্তাবটি পাস হয়। প্রস্তাবটি যৌথভাবে উত্থাপন করে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
মিয়ানমারে ২০১৬ সালে সংকট শুরুর পরে এই প্রথমবার রোহিঙ্গাদের পক্ষে সর্বসম্মতিক্রমে কোন প্রস্তাব পাস হলো বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে জাতিসংঘের বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন।
এই প্রস্তাবে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানবাধিকার পরিস্থিতি এবং ফেব্রুয়ারিতে দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারির পরের পরিস্থিতির উপরে প্রাথমিকভাবে নজর দেওয়া হয়েছে।
মিয়ানমারে নবনিযুক্ত জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূতকে স্বাগত জানিয়ে প্রস্তাবটিতে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টির জন্য মিয়ানমার সরকার, ইউএনএইচসিআর ও ইউএনডিপিকে পদক্ষেপ নিতে বলেছে। এজন্য তাদের মধ্যে স্বাক্ষরিত ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা স্মারক নবায়ন করে দ্রুত তার বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। একই সাথে প্রস্তাবটিতে মিয়ানমারকে সম্পৃক্ত করে একটি কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণের কথাও বলা হয়েছে।
রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি দেশটির অন্যান্য সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য মিয়ানমারকে তাগাদা দেয়া হয়েছে ওই প্রস্তাবে।
পাশাপাাশি সাধারণ পরিষদের থার্ড কমিটিতে উত্থাপিত হওয়া ওই প্রস্তাবে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় বাংলাদেশের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাবাব ফাতিমা।
প্রস্তাব গ্রহণের সময় দেওয়া বক্তৃতায় তিনি বলেন, জাতিসংঘে প্রথমবারের মতো রোহিঙ্গাবিষয়ক প্রস্তাব সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হওয়াটা এই সংকটের সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃঢ় প্রতিশ্রুতিরই প্রতিফলন। এই ঘটনা জানান দিলো আমরা রোহিঙ্গাদের ভুলে যাইনি।
এদিকে চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নির্বাচিত বেসামরিক সরকারকে উৎখাত করে মিয়ানমারে ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। সেসময় জরুরি অবস্থা জারি করে শীর্ষ রাজনীতিকদের গ্রেপ্তার করা হয়। তারপর থেকে মিয়ানমারজুড়ে চলছে বিক্ষোভ ও অস্থিরতা। বিক্ষোভ দমনে জান্তা সরকারের চালানো দমন-পীড়নে এখন পর্যন্ত সহস্রাধিক বেসামরিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। আর সংখ্যালঘুদের সুরক্ষায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো তাদের উদ্বেগ জানিয়ে আসছে।