পবিত্র কাবার গিলাফের বাংলাদেশি ক্যালিগ্রাফার পেলেন সৌদি নাগরিকত্ব
পবিত্র কাবা শরীফের গিলাফের ক্যালিগ্রাফার মুখতার আলিমকে নাগরিকত্ব দিয়েছে সৌদি আরব। বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) সৌদি বাদশার এক রাজকীয় নির্দেশনায় বিভিন্ন পেশার পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তিকে এই নাগরিকত্ব দেওয়া হয়, যার মধ্যে বাংলাদেশি মুখতার আলিমও রয়েছেন। খবর- সৌদি গেজেটের।
সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ঘোষিত ‘ভিশন- ২০৩০’ এর অংশ হিসেবে বিভিন্ন পেশার দক্ষ বিদেশি নাগরিকদের এই সম্মাননা দিয়ে আসছে দেশটির রাজপরিবার। ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব, ইতিহাসবিদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও চিকিৎসক, বিনিয়োগকারী, প্রযুক্তিবিদ ও ক্রীড়াবিদসহ কয়েকটি ক্যাটাগরিতে দেওয়া হয় এই পুরস্কার।
চলতি বছর নাগরিকত্ব দেওয়ার ঘোষণার প্রথম দিনে বৃহস্পতিবার পাঁচ বিদেশিকে এই নাগরিকত্ব দেওয়া হয়।
সৌদি গেজেট জানায়, নাগরিকত্ব পাওয়া বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে মুখতার আলিম ছাড়াও আরও রয়েছেন ইতিহাসবিদ ড. আমিন সিদো, ড. আবদুল করিম আল সামমাক, প্রখ্যাত গবেষক ড. মুহাম্মদ আল বাকাই এবং প্রখ্যাত নাট্য শিল্পী সামান আল আনি।
বাংলাদেশি মুখতার আলিম বর্তমানে প্রধান ক্যালিগ্রাফার হিসেবে কাজ করছেন মক্কার পবিত্র কাবা ঘরের গিলাফ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান কিসওয়াহতে। আরবিতে গিলাফকে ‘কিসওয়াহ’ বলা হয়।
মক্কার বিখ্যাত উম্মুল কোরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করা মুখতার আলিম বর্তমানে পিএইচডি গবেষণারত। ক্যালিগ্রাফার হিসেবে মুসলিম বিশ্বে তার রয়েছে বেশ পরিচিতি। পবিত্র মসজিদুল হারাম পরিচালিত প্রতিষ্ঠান ‘দ্য ইনস্টিটিউট অব হলি মস্ক’ এ শেখানো হয় ক্যালিগ্রাফি বিষয়ে তার করা শিল্পকর্ম। এছাড়া বিভিন্ন দেশে ক্যালিগ্রাফি দক্ষতা বিষয়ে প্রশিক্ষণও দেন তিনি।
এছাড়া উম্মুল কোরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপ্লোমা, স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রিধারীদের সার্টিফিকেটের ক্যালিগ্রাফার হিসেবেও কাজ করছেন তিনি।
খ্যাতিমান এই ক্যালিগ্রাফারের ঝুলিতে রয়েছে বিভিন্ন সংস্থা থেকে প্রাপ্ত অসংখ্য পুরস্কার ও প্রশংসার সনদ। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী ও ফোরামে তাঁর প্রধান ক্যালিগ্রাফিগুলো প্রদর্শিত হয়েছে।
মুখতার আলিম চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার আধুনগর ইউনিয়নের রশীদের ঘোনা গ্রামের মুফিজুর রহমান বিন ইসমাঈল শিকদার ও শিরিন বেগমের ছেলে। মুখতারের বাবা কর্মজীবনের শুরুতে কিছুদিন ঐতিহ্যবাহী চুনতি হাকীমিয়া আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক ছিলেন। পরে দীর্ঘ সময় সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে ফার্মাসিস্ট হিসেবে বিভিন্ন হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।