বই মিলছে প্লাস্টিক বর্জ্যের বিনিময়ে
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২১, ০৩:৪৩ PM , আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২১, ০৩:৪৩ PM
রাদেন রোরো হানদারতি নামের এক নারী ইন্দোনেশিয়ার শিশুদের মাঝে বই পড়ার অভ্যাস গড়তে কাজ করে যাচ্ছেন। পেশায় তিনি একজন লাইব্রেরিয়ান।
বইপ্রেমী রাদেন তার নিজস্ব বাহন চালিয়ে ছুটে যান দেশটির দীপ অঞ্চল জাভার শিশুদের কাছে বই পৌছেঁ দিতে। গত পাঁচ বছর ধরে এভাবেই ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরির কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
শিশুরা রাদেনের লাইব্রেরি থেকে বই ধার নেয় ফেলে দেয়া কাপ, ব্যাগ ও অন্যান্য প্লাস্টিক সামগ্রীর বিনিময়ে। এছাড়া তিনি নিজেও ফেলনা প্লাস্টিকের জিনিসপত্র সংগ্রহ করেন এবং সেগুলো বিক্রি করে বই কিনেন। তার এই উদ্যোগে একদিকে শিশুদের মাঝে ছড়াচ্ছে শিক্ষার আলো, অন্যদিকে কমছে আশপাশের আবর্জনা।
শিক্ষার আলো ছড়ানো রাদেন রোরো বলেন, ডিজিটাল এই বিশ্বে শিশুদের মাঝে বই পড়ার সংস্কৃতি তৈরি করাটা খুবই প্রয়োজন। সেই সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় আবর্জনা নিয়ন্ত্রণে রাখতেও কাজ করে যাচ্ছি।
সেই ২০১৪ সালে মুনতাংয়ে থাকার সময় থেকেই ফেলে দেয়া প্লাস্টিকের জিনিসপত্রের বিনিময়ে বই কিনে লাইব্রেরি গড়ার কাজ শুরু করেন তিনি। প্রথমে সাড়া ভাল মিললেও কর্মী সংকট ও মূলধন কম থাকায় লাইব্রেরি চালাতে হিমশিম খেতে হয়। তবে, রাদেনের পাশে দাঁড়ায় ইন্দোনেশিয়ার সরকার, লাইব্রেরিকে এগিয়ে নিতে তাকে তিনচাকার ছোট্ট ট্রাক ও কিছু বই উপহার দেয়া হয়। এরপর আর পেছনে ফিরে থাকতে হয়নি। ট্রাকে করে প্রত্যন্ত অঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের কাছে বই পৌছেঁ দিচ্ছেন, নতুন প্রজন্মের মাঝে জিইয়ে রাখছেন বই পড়ার সংস্কৃতি।
স্থানীয়রা মনে করছেন অনলাইন গেমিংয়ের এ যুগে শিশুদের বইমুখী করতে রাদেনের ব্যতিক্রমী ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি অনন্য ভূমিকা রাখছে।
বিশ্ব ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ইন্দোনেশিয়ায় ১৫ বছরের বেশি বয়সীদের স্বাক্ষরতার হার ৯৬ শতাংশ। সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা-ওইসিডির প্রতিবেদন বলছে, করোনার কারণে এই হার ৮০ শতাংশে নেমে এসেছে।