১৭ অক্টোবর ২০২১, ২২:২২

ছাত্রলীগকে ষড়যন্ত্রের নীল নকশা ঠেকাতে হবে: ঢাবিতে ওবায়দুল কাদের

ওবায়দুল কাদের  © টিডিসি ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রীক চক্রান্তের নীলনকশা আছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। 

ছাত্রলীগকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেছেন, এদেশের বাতাসে এখনও বারুদের গন্ধ, বাতাসে রক্তের গন্ধ, বাতাসে ষড়যন্ত্রের গন্ধ। কাজেই এ বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক চক্রান্তের নীল নকশা আছে। এর বিরুদ্ধে ছাত্রলীগকে দাঁড়াতে হবে। ছাত্রলীগকে প্রতিরোধ করতে হবে। সেজন্যই বলব, এখন থেকে টায়ার্ড হয়ে গেলে সমস্যা, সময় আসছে, তোমাদের অনেক শ্লোগান দিতে হবে। অনেক কাজ করতে হবে।

আজ রবিবার (১৭ অক্টোবর) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরী স্কুলে আয়োজিত বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের ৫৮ তম জন্মদিন উপলক্ষে ‘স্বপ্ন ও সম্ভাবনা স্ফুলিঙ্গ-শেখ রাসেল’ শীর্ষক আলোচনা সভা এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে মেধা বৃত্তি, শিক্ষা উপকরণ ও দরিদ্র তহবিলে বিশেষ অনুদান প্রদান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যর তিনি এসব কথা বলেন।বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এর ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটি এর আযোজন করে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে অনেক বড় বড় রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড হয়েছে। কোন হত্যাকাণ্ডে অবলা নারী, অবুঝ শিশু, অন্তঃসত্ত্বা নারী হত্যার টার্গেট হয়নি, কিন্তু বঙ্গবন্ধু পরিবারের নারী, অবুঝ শিশু রাসেলসহ সবাইকে হত্যা করেছিল। এটি পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে মর্মান্তিক ও নৃশংস হত্যাকাণ্ড। 

তিনি বলেন, একাত্তরের পরাজিত শক্তিই পঁচাত্তরের হত্যাকাণ্ড করেছিল। এরা বিষধর সাপের মতো, সুযোগ পেলেই ছোবল মারবে। 

ওবায়দুল কাদের বলেন, গত ১২ বছরের দুর্গাপূজায় কোন ছোট্ট ঘটনাও ঘটেনি৷ কিন্তু আজ অন্ধকারের শক্তিরা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। সব সাম্প্রদায়িক শক্তির মূল ঠিকানা হচ্ছে বিএনপি৷ সাম্প্রদায়িক শক্তি কিন্তু তৎপর। তারা বুঝে ফেলেছে যে শেখ হাসিনা সরকারে ভোটে হারানো যাবে না, এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে জনগণ সাড়া দিবে না।

তিনি আরও বলেন, এবার আরও সতর্ক হওয়া উচিত ছিলো কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করার পরও তারা দুঃসাহস করেছে। দুই-একটা জায়গায় সহিংসতার যে চেষ্টা করেছে সেটিতে তারা ব্যর্থ হয়েছে। এখন আমরা সতর্ক। আর কোথাও এই ধরনের অপশক্তিকে মাথা তুলতে দেয়া হবে না। যারা সাম্প্রদায়িকতা বিনষ্টের অপকর্মে লিপ্ত তারা কেউ রেহাই পায়নি। এরা দুর্বৃত্ত। 

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম বলেন, আজকে শহীদ শেখ রাসেলের প্রতি ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও চেতনা হল জাতির পিতার অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা। আজকে যারা বারবার দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে চাচ্ছে, এসব চক্রান্তকারীদের বিষয়ে সচেতন হতে হবে, তাদের মোকাবেলা করতে হবে। সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে দমাতে আমাদের চেতনা। আমাদের চেতনাকে শাণিত করতে হবে। আদর্শই আমাদের একত্র করতে পারে। কোন ধরনের অপশক্তিকে সুযোগ দেয়া হবে না, আমরা জীবন দিয়ে হলেও এই অপশক্তির বিপক্ষে লড়াই করে যাবো। 

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, ১৯৭৫ সালের কালো রাতে শুধু বঙ্গবন্ধু, শেখ রাসেলকে হত্যা করেনি বরং আগামীর বাংলাদেশকে তারা হত্যা করেছিল। সেদিন বেঁচে যাওয়া বর্তমান প্রধানমন্ত্রী স্বপ্নহারা বাংলার মানুষদের পুনরায় স্বপ্ন দেখিয়েছে, দেখাচ্ছে। তিনি বলেন, ওই হিংস্র শ্বাপদেরা ব্যর্থ হবে, অন্ধকারের জীবরা আরও অন্ধকারে নিপতিত হবে। সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্পকে ভেদ করে জনগণের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে শেখ হাসিনা এগিয়ে যাবে, রাসেলের স্বপ্ন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন সফল হবে।

ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, শেখ রাসেল যদি আজ বেঁচে থাকতো তাহলে প্রধানমন্ত্রীর পাশে থেকে দেশের উন্নয়নে কাজ করে যেতে পারতো। 

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুল হালিম। 

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও দলটির ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সৃজিত রায় নন্দীর সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, ইঞ্জিনিয়ার মো: মোজাফফর হোসেন এমপি সহ আরও অন্যান্য আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দরা৷