১০০ বছরের চেষ্টায় মিললো ম্যালেরিয়ার প্রথম টিকা
চেষ্টাটা শুরু হয়েছিল আরও ১০০ বছর আগে। হাজারো বিশেষজ্ঞের অক্লান্ত চেষ্টায় অবশেষে মিললো সফলতা। আর তাই মরণঘাতী মশাবাহিত রোগ ম্যালেরিয়ার প্রতিরোধে প্রথমবাররে মতো কোনো টিকার অনুমোদন দিলো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
বুধবার (৬ অক্টোবর) সংস্থাটি বহু আকাঙ্ক্ষিত এই টিকার অনুমোদন দিয়েছে। খবর- আল জাজিরা।
মশাবাহিত রোগ ম্যালেরিয়ায় সারা বিশ্বে প্রতি বছর মারা যায় চার লাখের বেশি মানুষ। যার একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যা নথিবদ্ধ হয় আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে। তাই সেখানে দীর্ঘদিন যাবতই চলছিল নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা।
আফ্রিকার দেশ ঘানা, কেনিয়া ও মালাবিতে ২০১৯ সাল থেকে পরিচালিত সেরকমই একটি পাইলট কর্মসূচির ফলাফলের ভিত্তিতে ডব্লিউএইচও ওই সিদ্ধান্ত দিয়েছে।
ওই পাইলট কর্মসূচিতে আফ্রিকার ওই তিন দেশে ২০ লাখেরও বেশি ডোজ ম্যালেরিয়ার টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে। টিকাটি ১৯৮৭ সালে প্রথম উদ্ভাবন করে ব্রিটিশ ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান জিএসকে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস বলেছেন, আফ্রিকার ওই তিন দেশে পাইলট কর্মসূচির টিকা প্রয়োগের প্রাপ্ত ফলাফল বিশ্লেষণ করে তারা বিশ্বের প্রথম ম্যালেরিয়া টিকা ব্যাপক পরিসরে প্রয়োগের সুপারিশের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আধানোম গেব্রেয়াসুস জানান, এখন থেকে আফ্রিকার সাব-সাহারা অঞ্চল এবং ম্যালেরিয়ার উচ্চ প্রাদুর্ভাব রয়েছে, বিশ্বের এমন সব অঞ্চলে শিশুদেরও এই টিকা প্রয়োগ করা যাবে। চার ডোজের এই টিকা দুই বছর বয়স থেকেই দেওয়া যাবে।
তিনি বলেন, বহু প্রতীক্ষিত ম্যালেরিয়ার টিকা বিজ্ঞানের জন্য একটি যুগান্তকারী আবিষ্কার। এই টিকা আবিষ্কারে আমরা বেশ গর্ববোধ করছি।
ডব্লিউএইচও গ্লোবাল ম্যালেরিয়া প্রোগ্রামের পরিচালক ড. পেড্রো আলোনসো বলেন, বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে এটি একটি বিশাল অগ্রগতি। জনস্বাস্থ্যের দৃষ্টিকোণ থেকে এটি একটি ঐতিহাসিক সফলতা।
তিনি বলেন, আমরা ১০০ বছর ধরে ম্যালেরিয়ার ভ্যাকসিন খুঁজছি। এটি মানুষের জীবন বাঁচাবে এবং আফ্রিকান শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে।
উল্লেখ্য, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ও আরেকটি পরীক্ষামূলক ম্যালেরিয়া ভ্যাকসিন তৈরি করেছে। এক বছর ধরে ৪৫০ জনের উপর তার পরীক্ষা চলছে। এই ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করা বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এই ভ্যাকসিন এখন পর্যন্ত ৭৭ শতাংশ সফলতা দেখিয়েছে।