কাবুল শহরকে বাঁচাতে দেশ ছেড়েছি: আফগান প্রেসিডেন্ট
আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি জানিয়েছেন, রক্তের বন্যা এড়াতে দেশ ছাড়ার কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। দেশ ছাড়ার পর রোববার রাতে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুকে পেজে এ কথা উল্লেখ করেন তিনি।
গানি বলেছেন, রক্তপাত এড়াতে তার হাতে আর কোনো বিকল্প ছিল না। লাখো মানুষ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ‘সংঘাত এড়ানোর জন্যই’ আমি কাবুল ছেড়েছি। দেশ ছাড়ার পর দেশের পরিস্থিতি নিয়ে আফগানিস্তান প্রেসিডেন্টের এটাই প্রথম বক্তব্য বলে নিশ্চিত করেছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।
আশরাফ গনি বলেন, আমার উচিত ছিল সশস্ত্র তালেবানদের মুখোমুখি হওয়া। অথবা গত ২০ বছর ধরে যে দেশকে রক্ষা করতে জীবন উৎসর্গ করেছি, সেই প্রিয় দেশ ছেড়ে চলে যাওয়া। এতে অগণিত দেশবাসী মারা যেত। ধ্বংসের মুখোমুখি হতো কাবুল শহর। তালেবানরা কাবুলের লোকদের ওপর হামলা করত। তাই রক্তের বন্যা এড়াতে দেশ ছাড়াকে শ্রেয় মনে করি। তালেবানরা তলোয়ার ও বন্দুকের বিচারে জিতে গেছে। ইতিহাস কখনো অবৈধ ক্ষমতাকে বৈধতা দেয়নি এবং দেবেও না। আমি সব সময় আমার জাতির সেবা করে যাব।
শনিবার রাতে আফগানিস্তানের উত্তরের মাজার-ই-শরিফ দখলের পর থেকেই কাবুলের পতন ঘণ্টা বাজতে শুরু করে। রোববার সকালে জালালাবাদ দখলের মাধ্যমে বর্তমান আফগান সরকারের চূড়ান্ত পতন শুরু হয়। এর পর তালেবান যোদ্ধারা দলে দলে রাজধানী কাবুলে ঢুকতে শুরু করেন।
তালেবান বাহিনীকে কাবুলে প্রবেশ করতে বলা হয়েছে বলে সংগঠনটির মুখপাত্র জাহিবুল্লাহ মুজাহিদ স্থানীয় টোলো নিউজকে জানিয়েছেন। কাবুলের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেই রাখা হবে বলে নিশ্চিত করেছেন তিনি। আফগান প্রেসিডেন্ট প্যালেস এক টুইট বার্তায় জানিয়েছে কাবুলের বিভিন্ন স্থান থেকে গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে।
তবে তালেবানের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বতী সরকারের কাছে আফগান সরকার শান্তিপূর্ণভাবেই ক্ষমতা হস্তান্তর করবে বলে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল সাত্তার মির্জাকওয়াল রোববার জানিয়েছেন। স্থানীয় টোলো টিভিতে প্রচারিত এক ভিডিও বার্তায় মির্জাকওয়াল জানিয়েছেন, আফগান জনগণের উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই। রাজধানীতে কোনো হামলা হবে না। শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে।
অন্যদিকে, তালেবানও এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে তারা ‘অপর পক্ষের’ সাথে কথা বলেছেন। তালেবান সহিংসতা থেকে দূরে থাকবে বলেও ওই বিবৃতি বলা হয়েছে। এরপর শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয়ে তালেবানের সমঝোতার আলোচনা চলার মধ্যেই বিকালে জ্যেষ্ঠ সহযোগীদের নিয়ে তাজিকিস্তানের উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়েন প্রেসিডেন্ট গনি।