সড়ক দুর্ঘটনার ধ্বংসাবশেষই স্মৃতির স্মারক
রাস্তার পাশের সড়ক দ্বীপে ছড়িয়ে ছিটিয়ে মাইক্রোবাসের ধ্বংসাবশেষ। পাশেই পড়ে আছে দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া মাইক্রোবাসের কয়েকটি চাকা, ইঞ্জিন, তেলের ট্যাংক, আসন।
এই মাত্র ঘটে যাওয়া কোনো দুর্ঘটনার পরের চিত্র নয় এটি, তবে দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে স্থাপিত এই স্মারকটির সব উপকরণই দুর্ঘটনায় পড়া গাড়ির ধ্বংসাবশেষ।
প্রয়াত চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদ, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব মিশুক মুনীরদের দুর্ঘটনাকবলিত মাইক্রোবাসটির ধ্বংসাবশেষ দিয়ে এভাবেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন্নাহার হলের পাশের সড়কদ্বীপে তৈরি হয়েছে ‘সড়ক দুর্ঘটনা স্মৃতিস্থাপনা’।
তারেক-মিশুকের সঙ্গে ২০১১ সালের ১৩ অগাস্ট মানিকগঞ্জের ওই সড়ক দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে চিত্রশিল্পী ঢালী আল মামুনও ছিলেন।
ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগিতায় এবং শিল্পী সালাউদ্দিন আহমেদের নকশায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে তারেক মাসুদ মেমোরিয়াল ট্রাস্ট।
তারেক মাসুদ, মিশুক মুনীর ছাড়াও ক্যাম্পাসে বিভিন্ন সময় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে চিত্রশিল্পী ঢালী আল মামুনের পরিকল্পনায় তৈরি হয়েছে এটি। ওই দুর্ঘটনার ৩ বছর পর ২০১৪ সালে স্থাপনাটি উদ্বোধন করেন তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।
ওই দুর্ঘটনায় টেলিভিশন চ্যানেল এটিএন নিউজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মিশুক মুনীর ও চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ ছাড়াও নিহত হন মাইক্রোবাসের চালক মুস্তাফিজ, তারেক মাসুদের প্রোডাকশন ম্যানেজার ওয়াসিম ও কর্মী জামাল।
দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে ছিলেন তারেকের স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদ ও শিল্পী ঢালী আল-মামুনের স্ত্রী দিলারা বেগম জলি।
দেখতে দেখতে আজ দশ বছর হয়ে গেলো তাদের প্রস্থানের৷ তাঁদের মৃত্যুবার্ষিকীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ নানাবিধ কর্মসূচি আয়োজন করছে।
এক বিজ্ঞপ্তিতে চলচ্চিত্র সংসদ জানায়, আজ সন্ধ্যা ৬টায় শামসুন্নাহার হল সংলগ্ন সড়কদ্বীপে সড়ক দূর্ঘটনা স্মৃতি স্থাপনায় প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করা হবে।
সন্ধ্যা ৭টায় গুণী নির্মাতা তারেক মাসুদ এবং চিত্রগ্রাহক মিশুক মুনীরের স্মরণে ‘জীবন যার চলচ্চিত্র’ শিরোনামে একটি স্মৃতিচারণামূলক অনলাইন অনুষ্ঠান আয়োজিত হবে। আয়োজনে উপস্থিত থাকবেন ক্যাথরিন মাসুদ, নাহিদ মাসুদ এবং মঞ্জুলি কাজী।