করোনায় স্কুলভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থার ক্ষতিতে উদ্বিগ্ন জাতিসংঘ মহাসচিব
গত দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা করোনা মহমারিতে বিশ্বজুড়ে স্কুলভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় উদ্বেগ জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
রবিবার (১ আগস্ট) এক টুইটে তিনি জানিয়েছেন, করোনা মহামারির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষাব্যবস্থা পুনর্গঠনে সদস্য রাষ্ট্রসমূহের আরও মনযোগ দেওয়া প্রয়োজন।
টুইটে জাতিসংঘের মহাসচিব বলেন, বিশ্বজুড়ে স্কুল শিক্ষা সংকট দিন দিন প্রকট হয়ে উঠছে। আমরা সবাই বর্তমানে এই সমস্যার ভূক্তভোগী। মহামারির কারণে বিশ্বের ১৫ কোটি ৬০ লাখ স্কুলগামী শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তাদের মধ্যে প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ সম্ভবত আর কখনও স্কুলে ফিরবে না।
“মহামারি থেকে উত্তরণ কার্যকর করতে হলে সদস্য রাষ্ট্রসমূহকে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা পুনর্গঠনে মনযোগ দেওয়া প্রয়োজন। শিক্ষকদের বেতন আরও বাড়ানো উচিত এবং বিশ্বজুড়ে আরও বেশি সংখ্যক শিশু যেন ডিজিটাল শিক্ষার আওতায় আসতে পারে- তা নিশ্চিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।”
এর আগে গত ১২ জুলাই এক বিবৃতিতে করোনা মহামারির কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বন্ধ হয়ে যাওয়া স্কুল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুনরায় খুলে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিল জাতিসংঘের দুই সংস্থা ইউনিসেফ ও ইউনেস্কো।
ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর এবং ইউনেস্কোর মহাপরিচালক অড্রে অজৌলে স্বাক্ষরিত ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, ‘করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে গত ১৮ মাসে বৈশ্বিক শিক্ষাব্যবস্থা তছনছ হয়ে গেছে এবং এর প্রধান শিকার হয়েছে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের কোটি কোটি শিশু। আমাদের হাতে থাকা তথ্য অনুযায়ী, মহামারির শুরু থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৯টি দেশে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল সম্পূর্ণ বন্ধ আছে এবং এর ফলে ক্ষতির শিকার হচ্ছে এসব দেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে অধ্যয়নরত ১৫ কোটি ৬০ লাখেরও বেশি শিশু।’
যেসব দেশে এখন পর্যন্ত প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল বন্ধ আছে, সে দেশসমূহের সরকারের সমালোচনা করে ইউনিসেফ ও ইউনেস্কোর পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, ‘গত ১৮ মাসে বিশ্বে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি কখনই একই রকম থাকেনি; কখনও উন্নতি হয়েছে, কখনও বা অবনতি। কিন্তু সেই শুরু থেকে যেসব দেশ সংক্রমণ বিস্তারের অজুহাতে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল, তাদের অনেকেই এখন পর্যন্ত সেই নির্দেশ প্রত্যাহার করে নেয়নি।’
‘এই দেশগুলোর সরকারের মনোভাব এমন— যেদিন করোনায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা শূন্যের কোটায় নেমে আসবে, সেদিন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলসমূহ খোলা হবে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে, এসব দেশের পানশালা ও রেস্তোঁরাসমূহ খুলে দেওয়া হয়েছে; কিন্তু স্কুল বন্ধ আছে।’