অ্যাপের মাধ্যমে তালেবানদের মোকাবেলা করছে আফগান তরুণরা
মার্কিন সেনা প্রত্যাহার শুরুর সাথে সাথে আফগানিস্তানে ছড়িয়ে পড়েছে যুদ্ধের ডামাডোল। একের পর জায়গা নিজেদের দখলে নেওয়ার দাবি করছে তালেবান। দেশের এই অবস্থায় হাত-পা গুটিয়ে বসে নেই আফগান তরুণরা। নিজেদের স্মার্টফোন হাতে তুলে নিয়ে তালেবান মোকাবেলায় অন্যরকম যুদ্ধে নেমেছে তারা।
কানে এয়ারফোন গুঁজে অডিওভিত্তিক অ্যাপ ক্লাবহাউসে লগইন করে তালেবান মোকাবেলায় পাল্টা কৌশল অবলম্বন করছেন আফগান তরুণরা।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমনের শুরুতে কনফারেন্স কলের জন্য এই অ্যাপ প্রথমে যুক্তরাষ্ট্রে চালু হয়। ধীরে ধীরে তা জনপ্রিয় হয়ে উঠে।
তবে সংঘাতপূর্ণ আফগানিস্তানে সাধারণ জনগণের সাথে চরমপন্থীদের সংযোগ স্থাপনের বিরল কাজ করছে এই অ্যাপ।
এ ব্যাপারে সোদাবা (২২) নামে কাবুলের এক তরুণ বলেন, একদিন তালেবানও বদলে যাবে। তবে আমি তাদের কথা শুনতে চেয়েছি, তাদের নিজেদের কণ্ঠস্বর, যদি তা আদৌ থেকে থাকে।
ইসলামিক মৌলবাদী গোষ্ঠীটি এখনো তাদের কঠোর মনোভাব, বিশেষ করে নারীদের ওপর তাদের রক্ষণশীল মনোভাব ধরে রেখেছে কী না, সেটা নিয়েই উদ্বিগ্ন সোদাবা।
কাবুল ভিত্তিক রাজনৈতিক কর্মী এবং লেখক ফাহিম কোহদামানি নিয়মিত এই প্ল্যাটফর্মে রাজনৈতিক বিতর্কের সঞ্চালক হিসেবে কাজ করেন। তিনি বলেন, সাধারণ আফগান জনগণ এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সরাসরি তালেবান আর সরকারের সাথে কথা বলতে পারে।
কখনো কখনো পক্ষে বিপক্ষের একশ’র বেশি ব্যবহারকারী যুদ্ধ, মানবাধিকার এবং সমাজে নারীর ভূমিকা নিয়ে তর্কবির্তক করেন।
তালেবানের সাথে এই অ্যাপের মাধ্যমে কথা বলেছেন হানিয়া সাহেবা মালিক নামে এক নারী। তিনি টুইটারে লিখেছেন, তাদের নিয়ে সত্যি কথা বলায় তালেবান আমার মাইক বন্ধ করে দিয়েছিল। তারা নারীদের শৃঙ্খলে আটকে তাদের মানবাধিকার লঙ্ঘন করতে চায়।
অনেক সময় চ্যাটরুমে তালেবান হুমকিধামকি দিয়েছে বলেও অভিযোগ আছে।
তবে তালেবান ভবিষ্যতের প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য ক্লাবহাউসের নীতির বাইরে গিয়ে চ্যাটরুমের আলোচনা রেকর্ড করে রাখছে বলে অভিযোগ তুলেছেন কয়েকজন ব্যবহারকারী।
এদিকে হুমকি দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে তালেবানের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন, যারা আমাদের বিরোধিতা করে তাদের সাথে কথা বলার ও বোঝার জন্য এটা একটি ভাল প্ল্যাটফর্ম।