গ্রান্ড ফাইনালে আলু ভর্তা পরিবেশন করে তাক লাগিয়ে দিলেন কিশওয়ার
হাতের জাদু আর বাঙালি রান্নার ঐতিহ্য দিয়ে বাঘা বাঘা সব বিদেশী প্রতিযোগীকে হারিয়ে মাস্টারসেফ অস্ট্রেলিয়া সিজন ১৩ গ্র্যান্ড ফাইনালে নিজের অবস্থান করে নিয়েছেন বাংলাদেশের কিশওয়ার চৌধুরী। রন্ধন জগতে আন্তর্জাতিক এই প্ল্যাটফর্মে গ্র্যান্ড ফাইনালে তিনি পরিবেশন করেছেন বাঙালির ঐতিহ্যবাহী খাবার আলু ভর্তা, ভাত এবং সার্ডিন মাছ সাথে স্মোকি ভাতের মাড়।
বিচারকদের সামনে কিশওয়ার তার খাবারটি পরিবেশন করে বলেন, 'এটি এমন একটি খাবার যা আপনি কোনো রেস্টুরেন্টে দেখতে পাবেন না। যদিও এটি ফাইনাল ডিশ হিসেবে পরিবেশন করে আমি বেশ ভয় পাচ্ছি, একই সাথে এটি আমার জন্য খুবই তৃপ্তির একটি অনুভূতি।'
তিন মাস ধরে দীর্ঘ রান্নার প্রতিযোগিতায় অনেকে হারিয়ে ১১ জুলাই গ্র্যান্ড ফাইনালে তিনি নির্বাচিত হয়েছেন। ফাইনাল রাউন্ডে যোগ্য তিনজনের মধ্যে কিশওয়ার চৌধুরী একমাত্র বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত।
তিনি গ্র্যান্ড ফাইনালে ১২ ও ১৩ জুলাই পিট ক্যাম্পবেল এবং জাস্টিন নারায়েনের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বিচারকরা তার পরিবেশিত শেষ খাবারটিকে 'অবিশ্বাস্য' বলে অভিহিত করেছিলেন।
বিচারক জক জোনফ্রিলো বলেন, 'খাবারটি আমার মুখে জল নিয়ে এসেছে। এটি যেমন সুন্দর তেমনি অন্যরকম।'
অন্য বিচারক মেলিসা লিওং বলেন, কিশোয়ারার পরিবেশিত থালাটি যেমন স্বাদে অনন্য তেমনি অনন্য এক ঐতিহ্য।
শুধু ফাইনালেই নয় কিশওয়ার অধিকাংশ পর্বে বাঙলি খাবার রান্না করে আজ এতোদূর পৌঁছেছেন। সেমিফাইনাল রাউন্ডে তিনি সুপারি পাতায় আইসক্রিম বানিয়ে একটি ডিশ পরিবেশন করেছিলেন। যেটাকে বিচারক মেলিসা "বাংলাদেশের কাছে একটি ভালবাসার চিঠি" বলে অভিহিত করেন।
মেলবোর্নে বসবাসরত ৩৮ বছরের এই বাংলাদেশী নারী তার হাতের জাদুতে আন্তর্জাতিক প্রাঙ্গণে কখনো তুলে ধরেছেন বাংলার কালা ভুনা, কখনো ফুচকা-চোটপটি কখনো বা মাছের ঝোল। তার স্বপ্ন তিনি একটি বাংলাদেশি কুকবুক লিখতে চান।
প্রতিভাধর এই রন্ধন শিল্পী বলেন, আমরা যে খাবার রান্না করি পূর্বপুরুষদের অধিকাংশ সেই সব রান্নাই আজ হারিয়ে যাচ্ছে। আর আমরা আমাদের ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখতে পারি।'