০৩ জুলাই ২০২১, ১৪:৩৪

ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীকে ঋতুকালীন অবস্থায় বেঁধে রেখে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতন

ফিলিস্তিনি তরুণী  © ফাইল ছবি

ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের রামাল্লার কাছাকাছি কালান্দিয়া শরণার্থীশিবিরের বাসিন্দা মেইস আবু ঘোশকে আটক করে নিয়ে যায় ইসরায়েলি গোয়েন্দা। মেইসকে জিজ্ঞাসাবাদে তাকে ঋতুকালীন অবস্থাতেই চেয়ারের মধ্যে হাত ও গোড়ালি একত্রে বেঁধে কয়েক ঘণ্টা ফেলে রাখা হয়। তিনি বলেন, ঋতুকালীন অবস্থায় বেঁধে রাখায় আমি হাঁটতে পারছিলাম না, কারারক্ষীরা আমাকে তুলে নিয়ে যেতো। তারা আমাকে ঋতুকালীন সময়ের জন্য প্রয়োজনীয় সুরক্ষা সামগ্রী দেয়নি। 

২৪ বছর বয়সী মেইস আবু ঘোশকে বিরজিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম বিভাগের এই শিক্ষার্থীকে ২০১৯ সালের ২৯ আগস্ট নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে ইসরায়েলি বাহিনী। ইসরায়েলি কারাগারে থাকার সময় ১২ কেজি ওজন হারিয়েছেন বলে জানান মেইস।

তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে  মেইস বলেন, হাতকড়া পরিয়ে যখন আমাকে এক লম্বা করিডর দিয়ে যখন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কারারক্ষীরা নিয়ে যাচ্ছিল, তখন ইসরায়েলি গোয়েন্দা কর্মকর্তারা দুই পাশে দাঁড়িয়ে ব্যঙ্গাত্মকভাবে তালি বাজাতে থাকেন। তারা আমার সঙ্গে উপহাস করছিল, বলছিল জিজ্ঞাসাবাদের সময় আমি মারা যাবো।

মেইসের হাত শিকল দিয়ে আটকে রাখার কারণে রক্তাক্ত হয়ে গিয়েছিল। ওই সময় সামরিক জিজ্ঞাসাবাদে অংশ নিতে তিনি অস্বীকার করলে দায়িত্বশীল এক ইসরায়েলি গোয়েন্দা কর্মকর্তা তাঁকে ধরে দেয়ালের সঙ্গে ঠুকতে থাকেন।

তিনি বলেন, কর্মকর্তারা আমাকে বারবার বোঝানোর চেষ্টা করে আমি পাগল হয়ে গেছি এবং আত্মহত্যার চেষ্টা করছি। তাই তাঁরা সমাজ কর্মীদের নিয়ে এসেছিল। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তারা ছিল অন্য (গোয়েন্দা) কর্মকর্তা।'

এই কর্মকর্তারা যখন কারাকক্ষে মেইসের সঙ্গে কথা বলেন তখন তাদেরকে তার শরীরের ক্ষতস্থান ও দাগ দেখান। তাদের কাছে তিনি প্রশ্ন করেন, আমি একজন শিক্ষার্থী এবং আপনারা আমাকে বন্দী রেখেছেন।'

মেইস জানান, তার শরীরে ব্যথা উপশমে পেইনকিলার চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ইসরায়েলি কর্মকর্তারা তাকে তা দেয়নি। এ ছাড়া গোয়েন্দা কর্মকর্তারা অন্য বন্দীদের শারীরিক নির্যাতনের চিৎকার শুনতেও বাধ্য করেন।   

মেইস বলেন, তারা আমাকে হুমকি দেয় আমি মৃত বা প্যারালাইজড অবস্থায় এখান থেকে বের হবো। তারা আমাকে ধর্ষণেরও হুমকি দেয়।