বিয়েতে নিমন্ত্রণ না করায় পাত্রপক্ষকে কোপালেন প্রতিবেশীরা

প্রতিবেশীদের অস্ত্রের কোপে আহত রমেশ সর্দার
প্রতিবেশীদের অস্ত্রের কোপে আহত রমেশ সর্দার  © আনন্দবাজার

বিয়েবাড়িতে নিমন্ত্রণ না জানানোয় রাগ পুষে রেখেছিল পড়শিরা। তার জেরেই পাত্র ও তার বাবাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ক্যানিংয়ের দাঁড়িয়া গ্রামে।

দিনকয়েক আগেই খবরের শিরোনামে উঠে এসেছিলেন ত্রিপুরার এক জেলাশাসক। নাইট কারফিউ চলাকালে বহু লোক নিয়ে বিয়ে বাড়ির আয়োজন হয়েছিল আগরতলায়। জেলাশাসক শৈলেশকুমার যাদব এরকম দু’টি বিয়ে বাড়িতে হানা দিয়ে অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেন। সরকারি নির্দেশিকা ভাঙায় শাস্তি পেতে হয়েছিল পাত্র-পাত্রী পক্ষকে।

দাঁড়িয়া গ্রামে অবশ্য দেখা গেল এর উল্টো ছবি। সরকারি নির্দেশ মেনেই ঘরোয়াভাবে বিয়ের অনুষ্ঠান আয়োজন করেছিলেন এক ব্যক্তি। কিন্তু সেই ব্যবস্থা পছন্দ হয়নি কয়েকজন প্রতিবেশীর। অভিযোগ, নিমন্ত্রণ না পেয়ে ক্ষেপে যায় তারা। এ দিন ধারাল অস্ত্র নিয়ে আক্রমণ করে পাত্র ও তাঁর বাবাকে। জখম পাত্র ও তাঁর বাবা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

করোনা সংক্রমণের জেরে রাজ্যের সর্বত্র লোক সমাগমের উপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার। বিয়ে বা অন্যান্য অনুষ্ঠানে ৫০ জনের বেশি লোক সমাগম করা যাবে না বলেও নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। সরকারি সেই নির্দেশিকা মেনে দিন কয়েক আগে একেবারে ঘরোয়াভাবে ঘনিষ্ঠ আত্মীয়-বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে বৌভাতের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন দাঁড়িয়া গ্রামের রমেশ সর্দার ও তাঁর পরিবার।

অভিযোগ, বৌভাতের রাত থেকেই প্রতিবেশী বাপি সর্দার, ভোম্বল সর্দার, স্বপন সর্দারসহ আরও কয়েকজন ইট পাটকেল ছুড়তে থাকে রমেশের বাড়িতে। প্রথম দু-একদিন বিষয়টি বুঝতে না পারলেও, পরে তাঁরা জানতে পারেন বৌভাতে নিমন্ত্রণ করা হয়নি বলেই প্রতিদিন রাতে তাঁদের বাড়ি লক্ষ্য করে ইট, পাটকেল ছুড়ছেন পড়শিরা। মঙ্গলবার রাত ২টার দিকে একই ঘটনা ঘটে।

এ দিন বিষয়টি হাতে নাতে ধরে ফেলেন রমেশের বাবা বঙ্কিম সর্দার। অভিযোগ, তখন আচমকাই বঙ্কিমকে ধারাল দা দিয়ে আঘাত করে অভিযুক্তরা। বাবাকে বাঁচাতে রমেশ সেখানে গেলে তাঁকেও মারধর করা হয়। মাথা ফাটে তাঁর। তাঁদের চিৎকার চেঁচামেচিতে বেরিয়ে আসেন আশেপাশের অন্য লোকজন। তড়িঘড়ি দু’জনকে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছেন।

বুধবার সকালে হাসপাতালের বিছানায় বসে রমেশ বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতির জন্যই সেভাবে কাউকে নিমন্ত্রণ করিনি। দু’চারজন বন্ধু বান্ধব নিয়ে অনুষ্ঠানটা করি। ওঁদের কেন নিমন্ত্রণ করিনি, সেই কারণেই আমাদের উপর এই অত্যাচার শুরু করছে ওরা।’

রমেশের অন্য প্রতিবেশী মঙ্গল সর্দার বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতির কারণে অনেককেই নিমন্ত্রণ করতে পারেননি ওরা। তাই বলে এভাবে অত্যাচার করবে? ওদের শাস্তি হওয়া দরকার।’ বুধবার সকালে এ বিষয়ে ক্যানিং থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগীরা। এ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। আনন্দবাজার।


সর্বশেষ সংবাদ