ইরানের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক চান সৌদি যুবরাজ
সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান বলেছেন, তাঁর দেশ ইরানের সাথে ভালো সম্পর্ক চায়। আল আরাবিয়া টিভিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যকে উন্নতির দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য সৌদি আরব ইরানের সহযোগিতা চায়।
তবে সৌদি যুবরাজ মনে করিয়ে দিয়েছেন, ইরানের সাথে তাদের কিছু সমস্যা আছে। বিশেষ করে- ইরানের পারমাণবিক কর্মকাণ্ড, মিসাইল পরীক্ষা করা এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত অস্ত্রধারীদের সহায়তা করা। এসব সমস্যা সমাধানের জন্য সৌদি আরব তাদের আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক মিত্রদের সাথে কাজ করছে বলে জানান তিনি।
সৌদি যুবরাজের মন্তব্য এমন এক আসলো যখন খবর বেরিয়েছে, ইরান এবং সৌদি আরবের কর্মকর্তারা সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য ইরাকে একটি গোপন বৈঠকে মিলিত হয়েছেন। সৌদি আরবের সূত্রগুলো এ ধরনের খবর অস্বীকার করেছে। তবে ইরানের পক্ষ থেকে এ খবরের সত্যতা স্বীকার কিংবা বাতিল করা হয়নি। ইরান বলেছে, তারা যে কোন ধরণের সংলাপ স্বাগত জানায়।
সুন্নি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর নেতা সৌদি আরব এবং শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ ইরানের মধ্যে আঞ্চলিক কর্তৃত্ব বজায় রাখার জন্য বহু দশক যাবত উত্তেজনা চলছে। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরে মধ্যপ্রাচ্যে পরষ্পরের বিরুদ্ধে প্রক্সি যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ায় উত্তেজনা আরো বেড়েছে।
বিশেষ করে, ইয়েমেন যুদ্ধ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি চরম মাত্রায় পৌঁছেছে। সৌদি আরবের নেতৃত্বে মধ্যপ্রাচ্যে সুন্নি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর জোট ইয়েমেনে সরকার-সমর্থিত বাহিনীকে সমর্থন দিচ্ছে। অন্যদিকে ২০১৫ সাল থেকে ইরান সমর্থন দিচ্ছে হুতি বিদ্রোহীদের। তবে বিদ্রোহীদের কোন ধরণের অস্ত্র দেবার কথা অস্বীকার করে ইরান।
এছাড়া লেবানন এবং ইরাকে হস্তক্ষেপ করার জন্য ইরানকে দায়ী করে সৌদি আরব। এরমেধ্যেই গত মঙ্গলবার রাতে প্রচারিত হওয়া সাক্ষাৎকারে সৌদি আরবের যুবরাজ বলেন, তার দেশ চায় না যে ইরানের সাথে সম্পর্ক জটিল হয়ে যাক। সবকিছুর পরেও ইরান আমাদের প্রতিবেশী এবং আমরা তাদের সাথে ভালো সম্পর্ক চাই।
ইরান সম্পর্কে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের এই মন্তব্য অতীতের তুলনায় অনেক বেশি সংযত। এর আগে ২০১৮ সালে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লাহ আলী খামেনিকে হিটলারের সাথে তুলনা করেন মোহাম্মদ বিন সালমান।
ইয়েমেনের যুদ্ধ সম্পর্কে মোহাম্মদ বিন সালমানকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, কোন দেশ চাইবে না যে তার সীমান্তে অস্ত্রধারী মিলিশিয়ারা থাকুক। ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের আলোচনা টেবিলে বসে সংকট সমাধানের আহবান জানান সৌদি যুবরাজ।