খোলামেলা কথা বলে জার্মানদের আক্রমণের শিকার মুসলিম শিক্ষার্থীরা
জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের সিডিইউ দলের নেতা নর্বার্ট ব়্যােটিঙেনের সঙ্গে খোলামেলা কথা বলে জার্মানির ২৫ জন মুসলিম শিক্ষার্থী এখন মহাবিপদে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এখন ঘৃণার বন্যা বইছে তাদের বিরুদ্ধে। ডয়েচে ভেলে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি সিডিইউ নেতা নরবার্ট ব়্যােটিঙেনের সঙ্গে ভার্চুয়াল সাক্ষাতের জন্য খুব ভালো প্রস্তুতি নিয়েছিলেন নাদা ক্নানিও। জলবায়ু নীতি, ম্যার্কেল সরকারের শাসনামল, করোনা নিয়ন্ত্রণে সরকারের পদক্ষেপ- সব বিষয়েই নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে বেশ কিছু প্রশ্ন ঠিক করে নিয়েছিলেন তারা। কিন্তু নাদা ক্নানিসহ আভিসেনা স্টুডিয়েনভের্কের বৃত্তি পাওয়া ২৫ শিক্ষার্থী এখন ভয়াবহ ‘ইসলামোফোবিয়া’র শিকার।
সফল এক ভার্চুয়াল সভার পর নরবার্ট ব়্যােটিঙেন ওই ২৫ শিক্ষার্থীর ছবি শেয়ার করেছিলেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয়ে যায় মুসলিমদের প্রতি ঘৃণা ছড়ানো। ২২ বছর বয়সি নাদা ক্নানি অবশ্য জানতেন, এই ঘৃণার বন্যা একবার শুরু হলে আর থামবে না। তা-ই হয়েছে। ম্যার্কেলের দলের নেতাকে বিষয়টি জানানোর পর পরিস্থিতি সামাল দিতে তিনি ঝটপট সোশাল মিডিয়ায় নিজের ওয়াল থেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন ছবিটি।
কিন্তু ‘হেটস্পিচ’ তবু থামেনি। ছবি ডিলিট করে নরবার্ট ব়্যােটিঙ্গেন সুন্দর আলোচনার জন্য মুসলিম শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ জানিয়ে লিখেছেন, ‘শুধু ওদের বিশ্বাসের কারণে তরুণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে যে পরিমাণ ঘৃণা ছড়ানো হচ্ছে তা অবিশ্বাস্য।’
অবশ্য নাদা ক্নানি এ ঘটনায় অবাক নন। তার মতে, যারা ঘৃণা ছড়াচ্ছে তাদের কাছে, ‘লেখাপড়া ঠিকভাবে করার জন্য, ক্যারিয়ারটা গড়ে তোলার জন্য আপনি যত কাজই করুন না কেন, সেটা কোনো ব্যাপার নয়। সব কিছুর পরও আপনাকে শুধু একজন মুসলিম নারীই ভাবা হবে। আপনি শুধু একজন হেডস্কার্ফ পরা নারী, আর কিছু নন।’
এ প্রসঙ্গে বের্টেলসমান স্টিফটুঙের প্রধান ইয়েসমিন এল-মেনুর বলেন, ‘দেখে যাদের মুসলিম হিসেবে চেনা যায়, জার্মানিতে তাদের ঘৃণার শিকার হওয়া এখন খুব স্বাভাবিক ঘটনা।’ রিলিজিয়াস মনিটর-এর করা সাম্প্রতিক এক সমীক্ষার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘গত দশ বছরে অর্ধেক মানুষের মধ্যে ইসলাম সম্পর্কে সন্দেহ শেকড় গেড়েছে৷’
তার মতে, মুসলমানদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ানোয় সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখে অন্তর্জাল দুনিয়া। এ বিষয়ে ইন্টারনেট যে বড় ভূমিকা রাখে, তা নিঃসন্দেহে বলা যায়। সামাজিক মত বিনিময়ের সাধারণ নিয়ম কার্যকর নয় বলে এমন হয় সেখানে৷’