১১ মাস পর ক্লাসে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষার্থীরা, ফেরেনি চেনা ছবি
করোনাভাইরাস ও লকডাউনে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এর প্রায় ১১ মাস পর শুক্রবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ভারতের পশ্চিমবঙ্গে খুলল স্কুল। কিন্তু বদলে গিয়েছে স্কুলের সেই চেনা পরিবেশ। প্রত্যেককে করোনাবিধি মেনে স্কুলে আসতে হয়েছে। স্কুলগুলোতে দেখা যায়, ক্লাসে একসঙ্গে বসে টিফিন খাওয়ার সেই চেনা ছবিটা নেই। বদলে গিয়েছে টিফিনের মেনু।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম কলকাতা২৪ জানিয়েছে, একটি বেঞ্চে মাত্র একজন ছাত্র বসছে। প্রত্যেকের মুখে মাস্ক,টেবিলে স্যানিটাইজার। কোথাও আইসোলেশন রুমের ব্যবস্থা। কোথাও আবার দুই শিফটে ক্লাসের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। শুক্রবার স্কুল খোলার দিন ছিল বামেদের বাংলা ধর্মঘট। তবুও স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীদের হাজিরা ছিল প্রায় ১০০ শতাংশ। তবে বেসরকারি স্কুলে হাজিরার হার কম ছিল।
ক্লাস করতে যাওয়া ছাত্রী দেবস্মিতা বারিক বলেন, দীর্ঘদিন অনলাইন ক্লাস করার পরে অফলাইন ক্লাস ফিরে পেলাম। স্কুলে সামনাসামনি বসে দিদিদের কাছে ক্লাস করা, সমস্যাগুলো মিটিয়ে নেওয়া, সেটা অনলাইনে হতো না। অনলাইন আর অফলাইন,কোথাও যেন একটা ফাঁক থেকে যেত। তাছাড়া প্রাকটিক্যাল ক্লাসতো আর অনলাইনে সম্ভব নয়।
লেকটাউন গভ. স্পনসর্ড গার্লস হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শ্রবণা চৌধুরী জানান,করোনা আবহে সরকারি নির্দেশ মেনেই স্কুল খোলা হয়েছে। ছাত্রীরাও স্কুলে এসেছে। করোনাবিধি মেনেই ক্লাস হয়েছে। এতদিন পর যেন ইট- কাঠ-পাথরের স্কুলটা ফের প্রাণ ফিরে পেল।
করোনার সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে আপাতত নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস চালু হয়েছে। বাকি ক্লাসগুলো চালু করা নিয়ে পরবর্তী সময়ে চিন্তাভাবনা করা হবে। আপাতত এই চারটি শ্রেণি নিয়ে স্কুলে স্কুলে ক্লাস শুরু করা হয়েছে। সংক্রমণ ছড়ানো রুখতে কিছু নিয়ম জারি করেছে স্কুল শিক্ষা দফতর।নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, স্কুলে পড়ুয়াদের দূরত্ববিধি মেনে চলতে হবে। ছাত্র-ছাত্রীদের মাস্ক পরে স্কুলে আসতে হবে। প্রত্যেকের কাছে স্যানিটাইজার রাখতে হবে।
স্কুল চত্বরের কোথাও কোনও জমায়েত করা চলবে না। একসঙ্গে দাঁড়িয়ে গল্প করাও যাবে না। ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি কোভিড প্রোটোকল মেনে চলতে হবে শিক্ষক-শিক্ষিকা ও সব শিক্ষাকর্মীদেরও। স্কুলে পড়ুয়ারাই শুধু ঢুকবে। অভিভাবকদের স্কুলে ঢোকার ক্ষেত্রে এখনই অনমুতি মিলবে না।
পাশাপাশি স্কুলে আসা কোনও পড়ুয়ার করোনার উপসর্গ দেখা দিলে তৎক্ষণাৎ তাঁর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে বাড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে। স্কুলকে করোনামুক্ত রাখতে নিয়মিতভাবে স্যানিটাইজ করারও পরামর্শ দিয়েছে রাজ্য সরকার।