বাইডেনের অভিষেক উপলক্ষ্যে ব্যতিক্রমী নিরাপত্তা বেষ্টনীতে যুক্তরাষ্ট্র
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ১৭ জানুয়ারি ২০২১, ১২:০৬ PM , আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২১, ১২:১৬ PM
নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অভিষেক অনুষ্ঠানকে ঘিরে সহিংসতার আশঙ্কায় দেশজুড়ে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি রাজ্য এবং ডিসট্রিক্ট অব কলম্বিয়ায় (ডিসি) ছুটির দিনেও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা। গত সপ্তাহের ভয়াবহ দাঙ্গার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে ন্যাশনাল গার্ড বাহিনীকে ওয়াশিংটন ডিসিতে পাঠানো হয়েছে। ট্রাম্প সমর্থকরা ৫০টি রাজ্যের রাজধানীতে সশস্ত্র সমাবেশ করতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছে এফবিআই।
বিবিসি জানিয়েছে, এ কঠোর নিরাপত্তার মধ্যেই গত শুক্রবার ডিসি থেকে এক অস্ত্রধারী ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার কাছে এমন পরিচয়পত্র পাওয়া গেছে, যা সরকারের ইস্যু করা নয়। নিরাপত্তা চৌকিতে তল্লাশি চালানোর সময় ওই ব্যক্তির কাছ থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৫০৯ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। তবে ওয়েসলে অ্যালেন বিলার নামে ওই ব্যক্তিকে পরে পুলিশি হেফাজত থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। ওয়াশিংটন পোস্টকে জানানো হয়েছে, ওয়াশিংটনে আগ্নেয়াস্ত্র আনার তার কোন উদ্দেশ্য ছিল না। তিনি জানিয়েছেন, একটি বেসরকারি সুরক্ষা সংস্থার সাথে কাজ করতেন।
তিনি বলেন, ‘ডিসিতে হারিয়ে যাওয়ার পরে আমি একটি চৌকিতে পৌঁছাই, কারণ আমি গ্রামের মানুষ। আমি তাদেরকে অভিষেক অনুষ্ঠানের ব্যাজটি দেখাই যেটা আমাকে দেয়া হয়েছিল।’ যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে নিরাপত্তা জোরদার করার মধ্যেই এ আটকের ঘটনা ঘটলো। এছাড়া রাজধানী থেকে কয়েক মাইল দূর পর্যন্ত বহু রাস্তা কংক্রিটের ব্যারিকেড এবং ধাতব বেড়া দিয়ে আটকে দেয়া হয়েছে।
অভিষেক অনুষ্ঠানে যে ন্যাশনাল মলে হাজার হাজার মানুষের সমাগম হতো, সেই স্থানটি সিক্রেট সার্ভিসের অনুরোধে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এ সংস্থাটি মার্কিন প্রেসিডেন্টের সুরক্ষায় কাজ করে। মিশিগান রাজ্যের রাজধানী ল্যানসিঙের চারপাশে ব্যারিকেড দেয়া হয়েছে। বাইডেনের দল ইতোমধ্যে দেশটির অধিবাসীদের অনুরোধ করেছে, তারা যেন কোভিড ১৯ মহামারির বিষয়টি মাথায় রেখে দেশটির রাজধানীতে ভ্রমণ এড়িয়ে চলেন।
স্থানীয় কর্মকর্তারাও বলছেন, মানুষের উচিৎ হবে অভিষেক অনুষ্ঠান আলাদাভাবে দেখা। এছাড়া স্থানীয় সময় রোববার বিক্ষোভ হতে পারে বলে আগে থেকেই ধারণা করা হচ্ছিল। কারণ ট্রাম্পপন্থী ও ডানপন্থী অনলাইন নেটওয়ার্কগুলোর পোস্টে সশস্ত্র বিক্ষোভের ডাক দেয়া হয়েছে। পরে কঠোর নিরাপত্তার দিকটি উল্লেখ করে কিছু মিলিশিয়া তাদের অনুসারীদের উপস্থিত না হওয়ার জন্য বলেছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দু‘বার অভিশংসনের মুখে পড়ার মধ্যেই এমন ঘটনা ঘটলো।
বিক্ষোভকারীদের উস্কানি দেয়ার অভিযোগে তিনি এখন সিনেটের বিচারের মুখোমুখি। গত ৬ জানুয়ারি তার সমর্থকদের ক্যাপিটল হিলে সহিংস অবস্থান নেয়ায় তাকে বিচারের আওতায় আনা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বাইডেনের জয়কে কংগ্রেসকে অনুমোদন দেয়ার দিনেই এ ঘটনা ঘটে। কংগ্রেসের অধিবেশন বানচাল করার উদ্দেশ্যে হামলা চালানো হয়।
ক্যাপিটল বিল্ডিংয়ে হামলার ঘটনায় এ পর্যন্ত কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সর্বশেষ তথ্যমতে বেকড আলাস্কা নামে পরিচিত ডানপন্থী মিডিয়া ব্যক্তিত্বকে গ্রেফতার করা হয়, যার মূল নাম অ্যান্থাইম জোসেফ জিওনেট। তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ এনে বলা হয়েছে, তাকে শুক্রবার টেক্সাসের হিউস্টন থেকে গ্রেফতার করা হয় এবং ক্যাপিটলে সহিংস প্রবেশ ও বিশৃঙ্খল আচরণসহ দুটি অপরাধের অভিযোগ আনা হয়।