ফের ইমপিচমেন্টের মুখে পড়তে যাচ্ছেন ট্রাম্প!

ঘটনার দিন ক্যাপিটল ভবনের দিকে মার্চ করে যাচ্ছেন বিক্ষুব্ধ ট্রাম্প সমর্থকরা
ঘটনার দিন ক্যাপিটল ভবনের দিকে মার্চ করে যাচ্ছেন বিক্ষুব্ধ ট্রাম্প সমর্থকরা  © ডয়েচে ভেলে

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল ভবনে তাণ্ডব চালানোর পরে ফের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব আনার চিন্তা-ভাবনা শুরু করেছেন ডেমোক্র্যাটরা। অন্যদিকে, ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সকেও একটি চিঠি দিয়েছেন ডেমোক্র্যাটরা। সেখানে আগামী ২০ জানুয়ারির আগেই ট্রাম্পকে অফিস থেকে সরিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। যদিও বাস্তবে তা হবে বলে মনে করছেন না বিশেষজ্ঞরা।

গত বুধবারের ঘটনার পর বিশ্বজুড়েই নিন্দার ঝড় উঠেছে। ওয়াশিংটনজুড়ে কারফিউ ঘোষণা করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ক্যাপিটল ভবনে হামলার ঘটনায় এক নারী পুলিশের গুলিতে নিহত হয়। আর বাকি তিনজনের হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের শরীরে বুলেটের ক্ষত ছিল না। এখনো হাসপাতালে বেশ কয়েকজন ভর্তি রয়েছেন।

ডয়েচে ভেলে জানিয়েছে, ওয়াশিংটনের মেয়র ১৪ দিনের কারফিউ বা জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত কারফিউ বলবৎ থাকবে। রাস্তায় পুলিশি টহল চলছে। এক হাজার ন্যাশনাল সিকিওরিটি গার্ডকেও ওয়াশিংটনে পাঠানো হয়েছে। তারা রাস্তায় ফ্ল্যাগ মার্চ করছে। তাণ্ডবের ঘটনায় এ পর্যন্ত ৫২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারমধ্যে চার জনের বিরুদ্ধে অস্ত্র রাখার অভিযোগ আনা হয়েছে।

এ পর্যন্ত ছয়টি অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। মলটোভ ককটেল ভরা বোমা, পাইপ বোমাও উদ্ধার হয়েছে। ঘটনার পরেই পরবর্তী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মুখ খুলেছিলেন। বুধবার রাতে তিনি তার বক্তব্যে ট্রাম্পের দিকেই আঙুল তুলেছেন। ট্রাম্পও টুইটার অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যাওয়ার আগে সমর্থকদের কাছে বাড়ি ফিরে যাওয়ার আবেদন জানিয়েছিলেন। যদিও ভোটে কারচুপির বিষয়টি তিনি সেখানেও উল্লেখ করেছেন।

শুধু তাই নয়, সমর্থকদের প্রতি নরম মনোভাবও দেখিয়েছেন। পরে অবশ্য ট্রাম্প একটি ভিডিও বার্তা প্রকাশ করেছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, বুধবারের ঘটনা অনভিপ্রেত। ক্ষমতা হস্তান্তর যাতে স্বাভাবিকভাবে হয়, সে দিকে তিনি খেয়াল রাখবেন। বস্তুত, এই প্রথম ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে মুখ খুললেন ট্রাম্প। তবে ভোট কারচুপি, ক্ষমতা থেকে সরতে না চাওয়ার কথাও বলা হয়েছিল। তারপরই তাঁর সমর্থকরা ক্যাপিটল ভবনে আক্রমণ চালায়।

এ দিকে, বুধবারের ঘটনার পর ফের যৌথ কংগ্রেসের অধিবেশন শুরু হয়। সেখানে ইলেকটোরাল ভোট গণনার পরে বাইডেনকে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। ওই অধিবেশনের পরই দ্বিতীয়বার ট্রাম্পকে ইমপিচ করা নিয়ে সরব হন দুই ডেমোক্র্যাট সদস্য। অ্যালেকসান্দ্রা ওকাসিও কর্টেজ এবং ইলহাম ওমর ২০ জানুয়ারির আগেই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব আনার কথা বলেছেন।

অন্যদিকে একাধিক ডেমোক্র্যাট এবং কয়েকজন রিপাবলিকান সংসদ সদস্য ট্রাম্পকে ২০ জানুয়ারির আগেই ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করেছেন ভাইস প্রেসিডেন্টের কাছে। এ সংক্রান্ত একটি চিঠিতে বলা হয়েছে,  ডোনাল্ড ট্রাম্পের মানসিক সমস্যা আছে। সে কারণেই তাঁকে দ্রুত ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া উচিত। ভাইস প্রেসিডেন্ট চাইলে এ কাজ করতে পারেন। তবে বাস্তবে তা হবে বলে মনে করছেন না বিশেষজ্ঞরা। যদিও ভাইস প্রেসিডেন্ট পেন্স গোটা ঘটনার তীব্র সমালোচনা করেছেন। ট্রাম্পের নাম না বললেও, তিনি যে ট্রাম্পের বক্তব্যের সঙ্গে এক মত নন, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন।


সর্বশেষ সংবাদ