০৬ জানুয়ারি ২০২১, ১১:৩২

উত্তরপ্রদেশে নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর ভয়াবহ বর্বরতা

ভারতের উত্তরপ্রদেশে ফের ভয়ঙ্কর সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে   © প্রতীকী ছবি

নির্ভয়াকাণ্ডের স্মৃতি মনে করিয়ে দিয়ে ফের ভয়ঙ্কর সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ভারতের উত্তরপ্রদেশে। চলন্ত গাড়িতে মধ্যবয়সি এক নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়েছে। ধর্ষণের পর নির্যাতিতার যৌনাঙ্গে রড ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভেঙে দেওয়া হয়েছে পাঁজর ও পায়ের হাড়। রক্তপাত বন্ধ না হওয়ায় মৃত্যু হয় ওই নারীর। দীর্ঘ গড়িমসির পর অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ময়নাতদন্ত এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও অভিযোগ।

গত রবিবার সন্ধ্যায় উত্তরপ্রদেশের বদায়ুঁ জেলার উঘৈতি থানা এলাকায় এই ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটেছে বলে আনন্দবাজার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে। স্থানীয় মন্দিরে পুজো দিতে গিয়েছিলেন নির্যাতিতা। তারপর আর বাড়ি ফেরেননি তিনি। মধ্যরাতে রাস্তার পাশ থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করা হয়। ধর্ষণের পর দুষ্কৃতকারীরা তাঁকে গাড়ি থেকে ফেলে দেয় বলে জানা গেছে। সে অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রাতেই মৃত্যু হয় তাঁর।


গোটা ঘটনায় পুলিশি নিস্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছে নির্যাতিতার পরিবার। তাদের দাবি, অভিযোগ দায়ের করা সত্ত্বেও উঘৈতি থানার স্টেশন অফিসার (এসএইচও) রবেন্দ্রপ্রতাপ সিংহ ঘটনাস্থলে যাওয়ার তাগিদ পর্যন্ত দেখাননি। বরং যেখান থেকে ওই নারীকে উদ্ধার করা হয়, গত সোমবার দুপুরে কেবল একবার সেখানে যায় পুলিশ। এমনকি ময়নাতদন্ত নিয়েও গড়িমসির অভিযোগ উঠেছে। গত রবিবার গভীর রাতে মৃত্যু হলেও, সোমবার বিকেলে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় বলে দাবি করেছে তার পরিবার। একজন নারীসহ তিনজন চিকিৎসকের দল ময়নাতদন্তের দায়িত্বে ছিলেন।

ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে আসায় স্তম্ভিত হয়ে যান সকলে। জানা যায়, ধর্ষণের পর ওই নারীর যৌনাঙ্গে রড ঢুকিয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা। সেই রক্তক্ষরণ আর বন্ধ হয়নি। তার জেরেই তার মৃত্যু হয়। এমনকি ভারী বস্তু দিয়ে তার বুকেও আঘাত করা হয়। তাতে ভেঙে যায় পাঁজরের হাড়। একটি পা ভেঙে দেওয়া হয়। পুলিশ জানিয়েছে, তার অবস্থা দেখে প্রথমে চন্দৌসিতে তাঁকে চিকিৎসা করাতে নিয়ে যান অভিযুক্তরা। কিন্তু পরে গাড়ি থেকে ফেলে দেওয়া হয়।

এ ঘটনায় সেখানকার মহন্ত বাবা সত্যনারায়ণ, তাঁর সহযোগী বেদরাম এবং গাড়ির চালক জসপালের নাম সামনে এসেছে। পুরোহিত হিসেবে এলাকায় পরিচিত বাবা সত্যনারায়ণ। নির্যাতিতা যে মন্দিরে পুজো দিতে গিয়েছিলেন, তিনি সেখানকার পুরোহিত কিনা, তা যদিও নিশ্চিত ভাবে জানা যায়নি। তাঁদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ এবং খুনের মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। এরমধ্যে দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে বরখাস্ত করা হয়েছে উঘৈতির এসএইচও’কে।

গত সেপ্টেম্বের হাথরস ঘটনার পর তিন মাস কাটতে না কাটতেই, এ ঘটনায় নতুন করে প্রশ্নের মুখে যোগী আদিত্যনাথের সরকার। প্রশ্নের মুখে রাজ্যের পুলিশের ভূমিকাও। হাথরস কাণ্ডের সময়ও পুলিশের বিরুদ্ধে নিস্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠেছিল। এমনকি রাতারাতি নির্যাতিতার দেহ পুড়িয়ে দেওয়ায় প্রমাণ লোপাটের অভিযোগও উঠেছিল তাদের বিরুদ্ধে।