সাকিব নয়, পূজা উদ্বোধন করেছিলেন এক সন্ন্যাসী—বলছেন আয়োজকরা
বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের কলকাতায় একটি কালীপূজার উদ্বোধনে থাকা নিয়ে যে সমালোচনা হচ্ছে, তাকে উগ্র মৌলবাদীদের কাজ বলে মনে করেন ওই পূজা কমিটির প্রধান উদ্যোক্তা ও তৃণমূল কংগ্রেস নেতা পরেশ পাল। তিনি বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, সাকিব তাদের পূজোর উদ্বোধন কখনই করেননি। তাই মুসলমান হয়েও হিন্দুদের পূজায় কেন হাজির ছিলেন, সেই প্রশ্ন তুলে তার সমালোচনা করা অন্যায্য।
ওই পূজার উদ্বোধন আসলে করেছিলেন এক হিন্দু সন্ন্যাসী, বলছেন পূর্ব কলকাতার বেলেঘাটা অঞ্চলের বিধায়ক পরেশ পাল। পূর্ব কলকাতার কাঁকুড়গাছি এলাকায় যে কালীপূজার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছেন সাকিব আল হাসান, সেই মণ্ডপটি এখন ফাঁকা। প্রতীমা বিসর্জন হয়ে গেছে। কিন্তু পূজা মণ্ডপের চারদিকে এখনও বড় বড় হোর্ডিংয়ে সাকিব আল হাসানের ছবি ছড়িয়ে রয়েছে।
উদ্বোধনী মঞ্চটিও এখনও রাখা রয়েছে- যার একদিকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি, অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর প্রতিকৃতি। গত ৫৯ বছর ধরে চলা পূজাটির মূল উদ্যোক্তা এলাকার বিধায়ক পরেশ পাল। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সেখানে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, ‘শুনেছি যে সাকিব দেশে ফেরার পরে ওকে প্রাণে মারার হুমকি দেওয়া হয়েছে। একটা মৌলবাদী শক্তিই এসব বলছে। বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের মতামত এটা হতে পারে না। আমারও জন্মভিটা ওদেশেই। আমি ওদেশের মানুষকে খুব ভাল করে জানি, তারা এসব বলতে পারে না।’
তিনি বলেন, ‘পূজার উদ্বোধনের দিন তো কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমও ছিল। হাকিম প্রতিবছরই আমার পূজার উদ্বোধনে থাকে। এবছর কলকাতায় বাংলাদেশ উপরাষ্ট্রদূতসহ একাধিক মুসলমান ধর্মাবলম্বী অফিসার হাজির ছিলেন। কিন্তু তারা কেউই পূজার ধর্মীয় কোনও কাজ তো করেনি। প্রতিমা উদ্বোধন করেছেন আদ্যাপীঠের কালী পূজারী হিন্দু সন্ন্যাসী মুরাল ভাই।’
কালী পূজার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের ভিডিও দেখিয়ে তিনি বলছিলেন, ‘ওখানে একটা বড় প্রদীপ রাখা ছিল। সকলেই সেই প্রদীপটা জ্বালিয়েছেন। আমি যেমন জ্বালিয়েছি, তেমন সাকিব আল হাসান, ফিরহাদ হাকিম - সবাই জ্বালিয়েছেন। প্রদীপ জ্বালালেই কি জাত যায় নাকি?’
তিনি আরও বলেন, তার নির্বাচনী এলাকাতে একটা বড় সংখ্যক মুসলমান থাকেন, যারা তাকে ভোট দেয় বছরের পর বছর। তাই তার মাথাতেই আসেনি যে, সাকিব আল হাসানকে কালীপূজার উদ্বোধনের মঞ্চে আমন্ত্রণ করে তিনি কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিতে পারেন। সাকিব আল হাসানের সঙ্গে আমাদের দীর্ঘদিনে পরিচয়। যদি আমাদের মাথায় আসত যে পূজার উদ্বোধনে আসার জন্য সে ধর্মীয় অনুশাসন বিরোধী কিছু করছে, তাকে কি আমি আসতে বলতাম? জেনে শুনে কি বন্ধুকে কেউ সমস্যায় ফেলে? ধর্ম বিরোধী কিছুই সে করেনি আমাদের পূজায় এসে।