০৭ নভেম্বর ২০২০, ২০:৪৮

রবিবার মিয়ানমারে নির্বাচন, ভোট দিতে চায় রোহিঙ্গারাও

মিয়ানমার সরকারের নির্যাতনের পর দেশ ছেড়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিচ্ছে রোহিঙ্গারা

আগামীকাল রবিবার (৮ নভেম্বর) মিয়ানমারে সাধারণ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। দেশটির নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে ছোট-বড় ৯৩টি রাজনৈতিক দল। কিন্তু, ক্ষমতাসীন এনএলডি এবং প্রধান বিরোধী দল- ইউএসডিপি আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে। গণমাধ্যমের পূর্বাভাস, আবারো সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে ক্ষমতায় আসছেন অং সান সু চি।

নির্বাচনের আগ মুহূর্তে দেশটিতে নিজেদের নাগরিকত্ব ফেরত চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে জাতিগত নিধনের মুখে পালিয়ে বাংলাদেশের কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা নেতারা। তারা বলেছেন, মিয়ানমার সরকারের উচিত নির্বাচনের আগে আমাদের (রোহিঙ্গা) নাগরিকত্বের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া এবং আমাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ ও সাধারণ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অধিকার নিশ্চিত করা।

দীর্ঘ ৫০ বছরের সামরিক শাসনের পর মিয়ানমারে কার্যত দ্বিতীয় সাধারণ নির্বাচন হতে যাচ্ছে, তবে নির্বাচনটি নিয়ে ইতোমধ্যেই সংশয় প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক নানা সংস্থা। মিয়ানমার সামরিকতন্ত্রের পথ থেকে বাঁকবদল করে গণতন্ত্রের দিকে নতুন যাত্রা শুরু করেছিল ২০১০ সালের নভেম্বরে, কারণ সে বছরেই দীর্ঘ বন্দিত্ব শেষে মুক্তি দেয়া হয়েছিল গণতন্ত্রপন্থী হিসেবে সুপরিচিত হয়ে ওঠা নেত্রী অং সান সু চিকে।

তবে ২০১৫ সালের প্রথম অবাধ নির্বাচনে বড় বিজয় পাওয়া সেই সু চিই এখন আন্তর্জাতিক আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে ওঠা রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগের জবাব দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন, কোনো কোনো মহলের অভিযোগ তিনি এমনকি ওই অপরাধের যৌক্তিকতা প্রমাণেরও চেষ্টা করছেন।

এদিকে মিয়ানমারের জাতীয় নির্বাচনের আগে নাগরিকত্ব ও ভোটাধিকার ফিরে পেতে দেশটির নির্বাচন কমিশনের কাছে চিঠির মাধ্যমে কক্সবাজারে অবস্থানকারী রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ১৪টি সংগঠনের পক্ষ থেকে যৌথভাবে জানানো হয়েছিল।

মিয়ানমারের নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান হ্লা থেইনের কাছে লেখা ওই চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, ইউনিয়ন নির্বাচন কমিশনের (ইউইসি) উচিত সাধারণ নির্বাচনে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ভোটাধিকারের স্বীকৃতি দেওয়া।

আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের (এআরএসপিএইচ) ভাইস চেয়ারম্যান আবদুর রহিম বলেন, মিয়ানমারে রবিবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। কিন্তু দুর্ভাগ্য দেশটির নাগরিক হয়েও আমাদের জনগোষ্ঠী এ নির্বাচনে অংশ নিতে পারছে না। তার চেয়ে কষ্টের কী আর হতে পারে! এমন নিষ্ঠুরতার শিকার আর কোনও জাতি আছে বলে আমার মনে হয় না।