আদালতে কি মার্কিন নির্বাচনী জটিলতার সমাধান হবে?

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের দুই প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জো বাইডেন এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের দুই প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জো বাইডেন এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প  © ফাইল ফটো

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন ইতিহাসে সবচেয়ে বড় কারচুপির ঘটনা ঘটেছে এ বার। বুধবার এভাবেই চলতি বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ব্যাখ্যা করেছেন বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনটি রাজ্যে ভোট গণনা বন্ধ করার দাবি নিয়ে আদালতেও পৌঁছে গিয়েছেন তিনি। কিন্তু এভাবে কি মার্কিন নির্বাচনে আদালত হস্তক্ষেপ করতে পারে? আদালত কি আদৌ এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে? শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, গোটা বিশ্বেই সে প্রশ্ন ঘুরছে।

মার্কিন আইন বিশেষজ্ঞদের একটি বড় অংশ বলছে, আদালত এভাবে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের নির্দিষ্ট কিছু বিষয় নিয়ে আদালত হস্তক্ষেপ করতে পারে এবং নির্দেশ দিতে পারে। যেমন ঘটেছিল ২০০০ সালে। সে বছর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিলেন রিপাবলিকান প্রার্থী জর্জ ডাব্লিউ বুশ এবং ডেমোক্র্যাট প্রার্থী আল গোর। সে বছর মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট বুশের নতুন করে ভোট গণনার আবেদনে সাড়া দিয়েছিল এবং পুনর্গণনার আদেশ দিয়েছিল।

ডয়েচে ভেলে জানিয়েছে, বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, সে বছর বুশের দাবি স্পষ্ট এবং নির্দিষ্ট ছিল। যে পরিস্থিতির মধ্যে ভোট পুনর্গণনার আবেদন জানানো হয়েছিল, তারও একটি নির্দিষ্ট ভিত্তি ছিল। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ট্রাম্পের আবেদনের কোনো ভিত্তি নেই। যেভাবে তিনি পোস্টাল ব্যালটের বিরোধিতা করছেন, আইনের দিক থেকে তার কোনো ভিত্তি নেই। মিশিগান, পেনসিলভানিয়া নিয়ে আদালতে ট্রাম্প যে অভিযোগ করেছেন, তা স্পষ্ট নয়। ফলে শেষ পর্যন্ত আদালত তাতে হস্তক্ষেপ করবে কিনা, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি রাজ্যের নিজস্ব আইন আছে। পোস্টাল ব্যালট বিষয়ে নির্দিষ্ট নিয়ম আছে। বিশেষজ্ঞদের অধিকাংশেরই ধারণা, সেই নিয়ম মেনেই পোস্টাল ব্যালট গণনা করা হচ্ছে। বস্তুত সে কারণে এ বছর ভোট গণনা করতে অনেক বেশি সময় লাগছে। করোনার কারণে রেকর্ড সংখ্যক পোস্টাল ব্যালটে ভোট হয়েছে এ বার।

মার্কিন ভোট এবং আইন বিশেষজ্ঞ নেড ফলি বার্তা সংস্থা এপিকে জানিয়েছেন, ‘সুপ্রিমকোর্ট দুটি বিষয় দেখতে পারে। এক ভোটের বৈধতা এবং দুই সেই প্রশ্ন ফলাফলে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন ঘটাচ্ছে কিনা। এই দুইটি বিষয় নিশ্চিত হলে তবেই আদালত হস্তক্ষেপ করতে পারে।’ ট্রাম্পের আবেদনে এই দুইটি বিষয় নেই বলেই তিনি মনে করছেন।

ট্রাম্পের সঙ্গে অবশ্য গুরুত্বপূর্ণ আইন বিশেষজ্ঞরা আছেন। ফলে ট্রাম্পের আবেদন সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এমন মনে করার কারণ নেই। বিষয়টি যে আরো গড়াবে, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন ট্রাম্প। জো বাইডেনের আইনজ্ঞরাও কাগজপত্র তৈরি করতে শুরু করেছেন। কোনো কোনো রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে, সুপ্রিম কোর্টে ট্রাম্পের একটি বড় সুবিধা আছে। সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়ামে ছয়জন রিপাবলিকান আমলে নিযুক্ত বিচারপতি এবং তিনজন ডেমোক্রেটদের সময়ের বিচারপতি।

এ বিষয়টি নিয়ে ট্রাম্প অনেক আগে থেকে ভেবেছিলেন বলেই নির্বাচনের একেবারে মুখে প্রথমে প্রধান বিচারপতি এবং পরে আরো এক বিচারপতিকে মনোনীত করেন, যা নিয়ে বিতর্কও হয়েছিল। সুপ্রিমকোর্টে যেহেতু রিপাবলিকানদের জোর বেশি, তাই কিছুটা সুবিধা ট্রাম্প পেতে পারেন বলেও অনেকে মনে করছেন।


সর্বশেষ সংবাদ