চীনের প্রভাবশালী গণমাধ্যমে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর প্রশংসা

মো. ছাইয়েদুল ইসলাম
মো. ছাইয়েদুল ইসলাম  © সংগৃহীত

চীনে দেশেটির চলমান করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যে গুজব ও আতঙ্ক নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা পালন করার জন্য বাংলাদেশি এক শিক্ষার্থীর প্রশংসা করে এক বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। দেশটির সরকারের প্রভাবশালী গণমাধ্যম ‘চায়না সেন্ট্রাল টেলিভিশন’ (সিসিটিভি) এমন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

এদিকে দেশটির প্রভাবশালী ওই টেলিভিশনে প্রতিবেদন প্রকাশের পর দেশটির ১০০টির বেশি সেন্ট্রাল এবং প্রভিন্সিয়াল প্রভাবশালী গণমাধ্যম এ বাংলাদেশিকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

জানা গেছে, বাংলাদেশি ওই শিক্ষার্থীর নাম মো. ছাইয়েদুল ইসলাম। তিনি দেশটির চিয়াংশি প্রদেশের নানচাং শহরের চিয়াংশি ইউনিভার্সিটি অব ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইকনেমিক্স বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি প্রোগ্রামে ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড মেজরে অধ্যয়ন করছেন।

বাংলাদেশে অবস্থিত চাইনিজ দূতাবাস সিসিটিভির প্রতিবেদন দূতাবাসের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে প্রকাশ করে। এছাড়াও চাইনিজ সার্চ ইঞ্জিন বাইদু এর হোম পেজে দেখা গেছে প্রতিবেদনটি।

এতে বলা হয়েছে, দেশেটিতে দীর্ঘদিন থাকার ফলে এটি তার সেকেন্ড হোম। ২০১৮ সালে উচ্চ শিক্ষাগ্রহণে বাংলাদেশ থেকে চীনে আসেন। আসার পর দুই বছরের বেশি সময়ের মধ্যে চীন সম্পর্কে ভালোভাবে জানার জন্য ৪০টির বেশি শহর ভ্রমণ করেছেন তিনি।

আরও বলা হয়েছে, করোনাকালীন ছাইয়েদুল চীনেই থেকে যাওয়ার সিন্ধান্ত নেন। তিনি অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসী ছিলেন। চীন অবশ্যই নতুন ভাইরাসকে পরাস্ত করতে সক্ষম হবে।

ছাইয়েদুল সিসিটিভির সাংবাদিক মিস হান লাংকে বলেছিলেন, ‘শুরুর দিকে চীনে মহামারি নিয়ে অনেক মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছিল। এই প্রতিবেদনগুলি দেখার পরে বাংলাদেশে আমার পরিবার, আত্মীয়-স্বজন আমাকে নিয়ে খুব চিন্তিত হয়ে পড়েছিল। বাংলাদেশে ফিরে যেতে চাপ দিচ্ছিল। গণমাধ্যম যা প্রকাশ করা হয়েছে তা সত্য নয় এবং আমি চীনে নিরাপদে আছি আমার পরিবারের কাছে সত্য তথ্য ব্যাখ্যা দেয়ার পরে তারা আমাকে এখানে থাকতে সমর্থন করেছিলেন।’

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, করোনাভাইরাসের সময় গুজব ও আতঙ্ক নিয়ন্ত্রণে চীনে তিনি বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। দেশটি থেকে বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে সত্য ও নির্ভরযোগ্য তথ্য বাংলাদেশি মিডিয়াতে প্রকাশ করেন। করোনাভাইরাসের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে গঠিত স্বেচ্ছাসেবক দলের একজন সদস্য। বিভিন্ন দেশ থেকে আগত বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন বিদেশি শিক্ষার্থী এবং চায়নিজ শিক্ষার্থীদেরকে এই মহামারির সময় সার্বক্ষণিক সহযোগিতার কাজে নিয়োজিত ছিলেন।

সিসিটিভিসহ অন্যান্য চাইনিজ প্রভাবশালী গণমাধ্যমগুলোতে এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর চাইনিজ স্যোশাল মিডিয়াগুলোতে সাধারণ জনগণ, অধ্যয়নরত বিদেশি শিক্ষার্থী, বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা ব্যাপকহারে শেয়ার দেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী, চীনের সাধারণ জনগণ বাংলাদেশ এবং এই বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর প্রশংসা করেন।

তিনি উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণের জন্য ২০১৮ সালে চীন সরকারে স্কলারশিপে চিয়াংশি প্রদেশের নানছাং শহরে অবস্থিত চিয়াংশি ইউনির্ভাসিটি অব ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইকনোমিক্স বিশ্ববিদ্যালে মার্স্টাস প্রোগ্রামে ইন্টান্যাশনাল বিজনেস মেজরে ভর্তি হন।

এছাড়াও এবছর জুলাই মাসে তিনি কৃতিত্বের সঙ্গে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। তিনি এক্সিলেন্ট গ্রাজুয়েট অ্যাওয়ার্ড- ২০২০, সলিডারিটি অ্যান্ড ফ্রেন্ডশিপ অ্যাওয়ার্ড- ২০২০, এবং আউটস্ট্যান্ডিং কন্ট্রিবিউশন অ্যাওয়ার্ড এ মনোনীত হয়েছিলেন। 


সর্বশেষ সংবাদ