‘সমস্যা অনন্ত জলিল বা হিরো আলমের না’
‘ধর্ষণে দায়ী নারীর পোশাক’ এমন বক্তব্য দিয়ে আলোচনায় এসেছেন চিত্র নায়ক অনন্ত জলিল। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগামাধ্যমে প্রসংশা-সমালোচনা দুটোই চলছে। যার ব্যাখ্যা দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহ।
নিজের ফেসবুক ওয়ালে ‘সমস্যা জলিলের না, সমস্যা আপনার আমার...’ শিরোনামে লিখেছেন, সমস্যাটি কিন্তু অনন্ত জলিল বা হিরো আলমের না। এরাই বাংলাদেশ, আর এই বাংলাদেশ আমরা এই চেতনাবাজরাই তৈরি করেছি। এদের কোটি কোটি ফলোয়ার এবং ভক্ত। আপনার আমার ভক্তের সংখ্যা একশো আর ফলোয়ার কয়েক হাজার মাত্র। আপনাকে আমাকে এদেশের মানুষ চিনে না। যাই হোক, মূল সমস্যাটি আপনার আমার। কারণ আপনি জলিলরে আহমদ ছফা বা চমস্কি মনে করেছিলেন! এদেশে নারী ও শিশুর প্রতি (মেয়ে এবং ছেলে) সহিংসতার কারণ খুঁজতে আর গবেষণার প্রয়োজন নেই। সবাই সবকিছু জানে।
একটা জিনিস স্পষ্ট যে, এই সহিংসতার পিছনে পোষাকের ভূমিকা হয়তো ১%ও দায়ী নয়। পৃথিবীর এই অঞ্চলে নারীরা গত দুই দশকে পোষাক পরিধানে অনেক রক্ষণশীল হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আমার ক্লাসের ছাত্রীদের প্রায় ৫০%ই হিজাব পরিধান করে যা আমাদের জীবদ্দশাতে কোনদিন দেখিনি। আবার একই সঙ্গে তাদের উপর হামলার পরিমাণও বহুগুণ বেড়ে গেছে। তাহলে বিষয়টা কি দাঁড়ালো? এই হাইপোথিসিস তো আর টেস্ট করার কিছু নেই যে পোষাকের সাথে নারী ও শিশু নির্যাতনের তেমন কোন সিগনিফিকেন্ট সম্পর্ক নেই।
(পোষাক, খাওয়া-দাওয়া, কথাবার্তা ইত্যাদি মানুষের ব্যক্তিগত চয়েসের ব্যাপার যা অনেকাংশেই নির্ভর করে তার শিক্ষা, পারিবারিক প্রশিক্ষণ, আবহাওয়া, ধর্ম, আশেপাশের সংস্কৃতি এবং সমাজের সার্বিক অবস্থা ও কোড অফ কন্ডাক্টের উপর। এগুলো কারো উপর চাপিয়ে দেয়ার কিছু নেই। প্রতিবাদ এবং জনমতের চাপে জলিল তার ভুল ধরতে পেরে ভিডিও ওয়াজটি ইতোমধ্যেই সরিয়ে ফেলেছে। উনি মন থেকে এটি করেছেন কিনা জানি না তবে সমাজের জন্য এটিও একটি অগ্রগতি)।