০৫ অক্টোবর ২০২০, ১১:০৪

অপারেশনে মেয়ের মৃত্যু, অপমানে চিকিৎসক বাবার আত্মহত্যা

চিকিৎসায় মেয়ের মৃত্যু, চিকিৎসক বাবার আত্মহত্যা  © সংগৃহীত

নিজের ৭ বছর বয়সী কন্যা সন্তানের অস্ত্রোপচার করেন ভারতের কেরালার অর্থোপেডিকসের স্বনামধন্য চিকিৎসক অনুপ কৃষ্ণা। গত ২৩ সেপ্টেম্বর অস্ত্রোপচারের পরে মৃত্যু হয় তার সন্তানের।

মেয়ের মৃত্যুর পরপর এই চিকিৎসক বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার সন্তানকে মেরে ফেলেছেন এমন অভিযোগ ওঠে। এ অপমান সইতে না পেরে অবশেষে আত্মহত্যা করেছেন কেরালার এ চিকিৎসক।

এ ঘটনায় কোল্লাম জেলার কিলিকোল্লুর পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। এ চিকিৎসক নিজেই অনুপ অর্থো কেয়াল নামের একটি হাসপাতাল চালাতেন বলে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা যায়।

বৃহস্পতিবার (১ অক্টোবর) কাদাপ্পাকাড়াতে নিজ বাড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার হয়। বাথরুমের দেওয়ালে ‘স্যরি’ লিখে আত্মহত্যা করেন তিনি। এক সপ্তাহ আগেই মেয়ের মৃত্যু হয়েছিল। ঘটনার তদন্তকারী অফিসাররা সেই বিষয়টিকেও মাথায় রেখেছেন। তবে ওই কারণেই তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন কি না- তা এখনই নিশ্চিত করতে পারছে না পুলিশ। অনলাইনে বা অফলাইনে তাকে কোনও হুমকি দেয়া হয়েছিল কি না- তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

গত ২৩ সেপ্টেম্বর তার সাত বছরের মেয়ে বাবার হাসপাতালেই ভর্তি হয়েছিল। হাঁটুর অস্ত্রোপচারের সময় কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট অর্থাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয় সে। বাবা নিজেই মেয়ের অস্ত্রোপচার করছিলেন। আরেকটি হাসপাতালে নিয়ে গেলেও তাকে বাঁচানো যায়নি। মেয়ের মৃত্যুর জন্য পরিবার ও স্থানীয়রা হাসপাতালের বাইরে বিক্ষোভ দেখান।
অনুপের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তোলা হয়। কোল্লাম পূর্ব পুলিশ স্টেশনে তার বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ দায়ের করা হয়।

তবে অনুপের পক্ষেও মুখ খুলেছেন কেরালার একাধিক চিকিৎসক। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাকে ভয়াবহ হেনস্তা করা হচ্ছিল বলে জানিয়েছেন তারা।

এ বিষয়ে সুলফি নোহু নামের এক চিকিৎসক ফেসবুকে লিখেছেন, ‘একাধিক ডাক্তার এই কোভিড পরিস্থিতিতে মেয়ের হাঁটু অস্ত্রোপচারে রাজি হননি। অনুপ একাই ঝুঁকি নিয়ে রাজি হয়েছিলেন। দুর্ভাগ্যবশত আমরা শিশুটিকে হারিয়ে ফেলেছি। আর তার পরেই শুরু হয়ে গেছে সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রায়াল। ডাক্তারের অপরাধ বলে রায়ও দিয়েছেন অনেকে। এমনকি অনেকেই লিখেছেন বাবা নিজেই মেয়েকে খুন করেছে।’

তারপর থেকেই অবসাদে ছিলেন অনুপ। তবে সে কারণেই আত্মহত্যা করেছেন কি না- তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। পরিবার ও স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলছেন তারা।