ভারতের উত্তরপ্রদেশ

রিকশায় বাড়ি ফিরলেন গণধর্ষণের শিকার তরুণী, পরে মৃত্যু

ভারতে গণধর্ষণের শিকার এক তরুণীকে হাসপাতালে নেয়ার পথে মৃত্যু হয়েছে
ভারতে গণধর্ষণের শিকার এক তরুণীকে হাসপাতালে নেয়ার পথে মৃত্যু হয়েছে  © প্রতীকী ছবি

ভারতে হাথরসের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের গণধর্ষণে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে উত্তরপ্রদেশে। এবার বার লখনউ থেকে ১৫০ কিলোমিটার দূরে বলরামপুরে লালসার শিকার হয়েছেন ২২ বছরের এক দলিত যুবতী। নির্যাতনের পর তিনি যখন বাড়ি ফেরেন তখন তাঁর দেহে ছিল একাধিক আঘাতের চিহ্ন। ঠিক মতো দাঁড়ানোরও ক্ষমতা ছিল না তাঁর।

পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় তাঁর। বুধবার ঘটনার কথা জানানো হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে। ওই দলিত যুবতী একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন। নির্যাতিতার মা জানিয়েছেন, সকালে কাজে যাবে বলে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। তার পর থেকে মোবাইলেও পাওয়া যায়নি। সন্ধ্যা হয়ে গেলেও মেয়ে বাড়ি ফিরছে না দেখে পুলিশের দ্বারস্থ হন তাঁরা।

কাজে যাওয়ার পথেই দলিত যুবতীকে অপহরণ করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন তাঁর মা। এরপর রিকশায় করে মেয়েকে বাড়ি ফিরতে দেখেন তাঁরা। তখন সে না পারছে হাঁটতে, না পারছে ঠিকমতো কথা বলতে। তাঁর মা বলেন, ‘আমার মেয়ে কাঁদছিল আর বলছিল, আমাকে বাঁচাও, আমি মরতে চাই না।’

এরপর তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাঁকে লখনউ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন সেখানকার চিকিৎসকরা। লখনউ নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় তাঁর।

এ ঘটনা নিয়ে বলরামপুরের পুলিশ সুপার রঞ্জন বর্মা বলেছেন, ‘গিয়স্রি থানায় ঘটনা নিয়ে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। নারীর পরিবারের লোক জানিয়েছেন, মঙ্গলবার মধ্যরাত অবধি বাড়ি ফেরেনি যুবতী। তাঁকে ফোনেও পাচ্ছিলেন না। পরে গভীর রাতে রিকশায় করে বাড়ি ফেরে। তখন তাঁর অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, কিন্তু বুধবার স্থানান্তরিত করার সময় পথেই মৃত্যু হয়।’

এই ঘটনার জেরে দু’জন যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছে মেয়েটির পরিবার। ওই পুলিশ অফিসার আরও বলেছেন, ‘ধর্ষণের পর নির্যাতিতাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গিয়েছিল অভিযুক্তরা। কিন্তু পরিস্থিতি খারাপ হলে তাঁরা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে রিকশায় চাপিয়ে নির্যাতিতাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়।’

ওই দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতারও করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। তাদের নাম শাহিদ ও সাহিল। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হয়েছে। পোস্টমর্টেম রিপোর্টে ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। দলিত যুবতীর দেহে একাধিক আঘাতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে রিপোর্টে।

কিন্তু মেয়েটির হাত-পা ছিঁড়ে নেওয়া হয়েছে বলে যে বার্তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছিল তা নস্যাৎ করেছে পুলিশ। ঘটনার কথা সামনে আসতেই যোগী প্রশাসনকে এক হাত নিয়েছেন সমাজবাদী পার্টির নেতা ও উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব। হাথরসের ঘটনা নিয়েও বিরোধীদের তোপের মুখে পড়ে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ।

এনসিআরবি রিপোর্টে দেখা গেছে, ভারতে কীভাবে বাড়ছে শিশু ও নারী ধর্ষণের ঘটনা। তথ্য বলছে, দেশে প্রতিদিন ৮৭ জন নারী ধর্ষণের শিকার হন। হাথরস নিয়ে যখন এত আলোচনা চলছে, তখনও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘটছে একের পর এক ধর্ষণের ঘটনা।

বুধবারই ২০ বছরের যুবক ধর্ষণ করেছে আট বছরের শিশুকে। ঘটনাটি উত্তরপ্রদেশের আজমগড়ের। এ ক্ষেত্রে অভিযুক্তকে গ্রেফতারের কথা জানিয়েছে পুলিশ। অন্য একটি ঘটনায়, বুলন্দশহরে প্রতিবেশী যুবক ধর্ষণ করেছে ১৪ বছরের নাবালিকাকে। খবর: আনন্দবাজার।


সর্বশেষ সংবাদ