সু চি-কে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট থেকে বরখাস্ত
ইউরোপীয় পার্লামেন্টে মানবাধিকার পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে মায়ানমারের নেত্রী আং সান সু চি-কে আর আমন্ত্রণ জানানো হবে না। রোহিঙ্গা গণহত্যার ঘটনায় তাকে বরখাস্ত করেছে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট। বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টর সাংসদরা জানান, রোহিঙ্গা গণহত্যার প্রতিবাদে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
১৯৯০ সালে এই ইউরোপীয় পার্লামেন্টই আং সান সু চি-কে মানবাধিকার পুরস্কারে ভূষিত করেছিল। মায়ানমারে সেনা শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় তাঁকে দীর্ঘ দিন রাজনৈতিক বন্দি রাখা হয়েছিল। সু চি বর্তমানে মায়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর।
যেহেতু ১৯৯০ সালে তিনি শাখারভ পুরস্কার পেয়েছিলেন, তাই পুরস্কারজয়ী হিসেবে প্রতিবারই অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিতের সঙ্গে তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্যরা একটি বিবৃতিতে জানিয়েছেন, মায়ানমারে রোহিঙ্গাদের উপর চলা অপরাধ নীরবে মেনে নেয়া ও পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থতার জন্যই এই প্রতিবাদ।
২০১৫ সালে অর্ধ শতক ধরে চলা সেনা শাসনের সমাপ্তি হয় মায়ানমারে। বিপুল ভোটে জিতে ক্ষমতায় বসেন আং সান সু চি। ২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে ২০১৭ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত মায়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের গুলি করে হত্যা করা হয়। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।
এরপর ২০১৭ সালের অগাস্টে ফের রাতারাতি রোহিঙ্গা গণহত্যা শুরু হয় মায়ানমারে। প্রাণের ভয়ে রোহিঙ্গারা পালাতে থাকে বাংলাদেশে। সেই ঘটনায় আং সান সু চি-র বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে গণহত্যার মামলা দায়ের করা হয়।
এদিকে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার বাহিনীর ভয়াবহ নিপীড়ন ও গণহত্যা চালানোর কথা স্বীকার করা দুই সেনা কর্মকর্তা নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে পৌঁছানোর খবর ফাঁস হওয়ার পর এ নিয়ে সারা বিশ্বে তোলপাড় শুরু হয়েছে। আর এ ঘটনাকে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী, সরকার এবং বিশেষ করে স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চির জন্য দুঃস্বপ্নের শুরু হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।
জানা গেছে, মিয়ো উইন তুন (৩৩) ও য নিং তুন (৩০) নামের ওই দুই সেনা মিয়ানমার বাহিনীর পক্ষ ত্যাগ করে রাখাইন রাজ্যে স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে সশস্ত্র সংগ্রামরত আরাকান আর্মির কাছে আত্মসমর্পণ করেন। এরপর স্বীকারোক্তিমূলক বিবৃতি দেন। পরবর্তী সময়ে ওই দুই সেনা কর্মকর্তা বাংলাদেশ সীমান্তে এসেছিলেন। সম্প্রতি তাঁরা দ্য হেগে পৌঁছেছেন।