অর্থের অভাবে আটকে আছে তাশমিমার চিকিৎসা
কোনো গরীব পরিবারের সন্তানের রোগে আক্রান্ত হলে ওই রোগ নিরাময়ে অর্থ যেমন বাধা হয়ে দাড়ায়। তেমনি বাধা হয়ে টাকার জন্য চিকিৎসা আটকে আছে চাঁপাইনবাবগঞ্জে হাইড্রোসেফেলাস রোগে আক্রান্ত ছোট্ট শিশু তাশমিমার। ফুটফুটে বাচ্চাটি এখন অবহেলা আর বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর প্রহর গুনছেন। এমনকি পরিবারেরও সামর্থ্য নেই শিশুটির উন্নত চিকিৎসা করানোর।
তার এমন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জেলার পৌর এলাকার পোলাডাঙ্গা মহল্লার মোটরসাইকেল মেকানিক তোজাম্মেল হক তার ১৫ মাস বয়সী মেয়ে তাশমিমার চিকিৎসার জন্য সমাজের বিত্তবানদের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন।
শিশুটির মা লাভলী বেগম জানান, দ্বিতীয় সন্তান তাশমিমা গর্ভে আসার পর আল্ট্রাসনোগ্রাম করে জানতে পারি বাচ্চার মাথা স্বাভাবিকের থেকে কিছুটা বড়। এরপর স্থানীয় একটি ক্লিনিকে সিজার করে জন্ম হয় তার। কিন্তু জন্মের পর থেকেই নরম তুলতুলে মাথা নিয়ে বিপদে পড়ি। স্থানীয় চিকিৎসকদের পরামর্শে ধারদেনা করে রাজশাহী নিয়ে গিয়ে একজন চিকিৎসককে দেখায়।
ওই চিকিৎসক বলেন, এর চিকিৎসা করতে অনেক খরচ হবে। টাকার ব্যবস্থা করতে না পারায় মেয়েকে বাড়ি নিয়ে চলে আসি এবং হোমিও চিকিৎসা করায়। কিন্তু দিন দিন তার মাথার আকৃতি আরও বড় হতে থাকে। এখন আর কোনো চিকিৎসা করাই না।
তার বাবা তোজাম্মেল হক জানান, মোটরসাইকেল মেরামত করে যে রোজগার হয় তাতে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। মেয়ের মাথা অস্বাভাবিক বড় হওয়ায় পরিবারের অন্যরা তাকে দেখভাল করতে পরে না। মাথা এতো নরম যে মনে হয় মাথার মধ্যে আঙুল ঢুকে যাবে। তাই ভয়ে কেউ কোলেও নেয় না। সেকারণে নিয়মিত দোকানে যেতে পারি না। এতে করে আয় রোজগার আরও কমে গেছে।
তিনি বলেন, তাশমিমার চিকিৎসার জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিভিল সার্জনের কাছে লিখিত আবেদন করেছি।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রীসহ সমাজের বিত্তবানদের কাছে আবেদন জানিয়েছেন তিনি। বিত্তবানরা যদি এগিয়ে আসেন তাহলে হয়ত তাশমিমার চিকিৎসার ব্যবস্থা হবে এবং স্বাভাবিক জীবনে ফিরবে এমনই আশা তার পরিবারের।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. জাহিদ নজরুল ইসলাম জানান, বিষয়টি আমরা জেনেছি। জেলা প্রশাসক ও সমাজসেবা অধিদফতরের সমন্বয়ে ওই শিশুর চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।