বিচারক হলে অযোধ্যায় বিজ্ঞান স্কুল বানাতেন তসলিমা নাসরিন
নিজে বিচারক হলে অযোধ্যার সেই জমিতে বিজ্ঞান স্কুল ও আধুনিক হাসপাতাল বানাতেন তসলিমা নাসরিন। আজ রবিবার নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে দেয়া এক স্ট্যাটাসে এমনটিই জানিয়েছেন তিনি।
তসলিমা নাসরিন ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, যেদিন অযোধ্যার রায় বের হয়, ২০১৯ সালের ৯ নভেম্বরে, সেদিনই লিখেছিলাম ‘আমি যদি বিচারক হতাম, তাহলে ২.৭৭ একর জমি সরকারকে দিয়ে দিতাম আধুনিক বিজ্ঞান স্কুল বানানোর জন্য, যে স্কুলে ছাত্রছাত্রীরা ফ্রি পড়তে পারবে। আর ৫ একর জমিও সরকারকে দিয়ে দিতাম আধুনিক হাসপাতাল বানানোর জন্য, যে হাসপাতালে রোগীরা বিনে পয়সায় চিকিৎসা পাবে’।
তসলিমা বলেন, আমার এই মতের ভয়াবহ প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হয়েছে, আগামি ১০০০ বছরে সম্ভব নয় ধর্মীয় উপাসনালয়ের জায়গায় অন্য কিছু নির্মাণ করা। কেউ কেউ বলেছে, স্কুল, একাডেমি, গবেষণাগার, হাসপাতাল, ফুলের বাগান এগুলো বানানোর জায়গার কি অভাব পড়েছে? তা ঠিক, অভাব পড়েনি। তাই ২.৭৭ একর জমিতে মন্দির হতে যাচ্ছে, আর ৫ একর জমিতে হতে যাচ্ছে মসজিদ। মানুষ প্রার্থনা করবে অলৌকিক ঈশ্বরের কাছে, যে ঈশ্বরের অস্তিত্বের আজও কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
তসলিমা আরও বলেন, উত্তর-ইউরোপের গির্জাগুলো দেখলে চমকিত হই। খালি পড়ে থাকে বছর ভর। রবিবার হাতে গোণা কয়েকজন আসে কী আসে না। গির্জা চলে পযটকদের জন্য। ওরাই শিল্প স্থাপত্য দেখতে আসে। উপাসনালয়গুলো ধীরে ধীরে পরিণত হয়েছে জাদুঘরে। আমাদের অঞ্চলের উপাসনালয়গুলোয় হয়তো একদিন ভিড় কমতে থাকবে। মানুষ ব্যস্ত থাকবে মানুষের সেবায়। সেবাই তো সবচেয়ে উৎকৃষ্ট উপাসনা।
প্রসঙ্গত, গত বছর নভেম্বর মাসে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট সুদীর্ঘ এক মোকদ্দমা শেষে বাবরী মসজিদের স্থানে বিতর্কিত রাম মন্দির স্থাপনের রায় প্রদান করে। এ রায়ের ভিত্তিতে গত ৫ আগস্ট ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অযোধ্যায় বাবরি মসজিদের স্থানে সোনা-রূপার ইট দিয়ে মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন।