ভারতে ‘ইতিহাস’ লিখে ফেরার অপেক্ষায় বাংলাদেশি মা-ছেলে
কল্পনা ঘোষ এবং তার ছেলে উত্তম ঘোষ। ছেলেকে বাঁচাতে কল্পনা ভারতে গিয়ে কিডনি দিয়েছেন। এই কিডনি প্রতিস্থাপন করতে গিয়ে মা-ছেলে দুজনই আক্রান্ত হয়েছিলেন করোনায়, আবার সুস্থও হয়েছেন। ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া এবং এনডিটিভি জানিয়েছে, করোনার সংক্রমণ শুরুর পর ভারতের চিকিৎসা ব্যবস্থায় এমন ঘটনা এই প্রথম।
খবরে বলা হয়েছে, ভারতের কলকাতায় উত্তমের কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয় গত ৩ জুলাই। এর আগে ছেলেকে নিয়ে গত জানুয়ারিতে কল্পনা ভারতে যান। তখন করোনার এমন ভয়াবহতা ছিল না। আর্থিক কারণ এবং ছেলের শারীরিক জটিলতায় চিকিৎসা শুরু করতে দেরি হয়ে যায়। এর মাঝে মহামারি চলে আসলে ভারতে শুরু হয়ে যায় লকডাউন। মা-ছেলে দুজনেই করোনায় আক্রান্ত হয়ে যান!
গবেষকরা বলছেন, কিডনির জটিলতা থাকলে করোনায় আক্রান্তদের বাঁচার সম্ভাবনা কমে যায়। উত্তমের ক্ষেত্রেও চিকিৎসকেরা শঙ্কায় ছিলেন। তবে যা হয়েছে তাতে ভারতের চিকিৎসকরাও অবাক। অবশ্য মা কল্পনা ঘোষ আশাবাদী ছিলেন, ছেলে সুস্থ হবেই। তিনি জানিয়েছেন, ছেলের জন্য অথৈ নদীতে ঝাঁপ দিতেও দ্বিধা করেননি।
তিনি বলেন, ‘আমি অনেক সাহসী। মনে করেছি কী, সাঁতার যখন দিয়েছি নদী পার হবোই। ছেলেকে নিয়ে ঢাকায় ফিরবো, প্রতিজ্ঞা করেছিলাম।’ অবশ্য ছেলেকে নিয়ে এখনই বাড়ি ফিরতে পারছেন না কল্পনা। আরও তিন মাস সেখানে তাদের পর্যবেক্ষণে করবেন চিকিৎসকরা। ছেলে উত্তম বলেন, ‘মায়ের সাহস আমাকে শক্তি জুগিয়েছে। দশদিন কোভিড-১৯ হাসপাতালে কাটিয়েছি।’
করোনাজয়ীদের এমন ঘটনা ভারতে এটিই সম্ভবত প্রথম উল্লেখ করে তার চিকিৎসা করা ডা. দীপক শঙ্কর রায় বলেন, ‘হতাশার সময়ে এটি স্বস্তির খবর। মহামারিতেও আমরা হারছি না, এটি তার প্রমাণ।’