চীনের নিপীড়ন-নির্যাতনের মুখে বিলুপ্তির হুমকিতে উইঘুর মুসলিম সম্প্রদায়?
বিগত বছরগুলোতে চীনের উইঘুর মুসলিমদের বিরুদ্ধে নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ছে শি জিনপিং সরকার। জিনজিয়াংয়ে উইঘুর মুসলমানদের ডিটেনশন ক্যাম্পে রাখার কারণে বেশ কিছুদিন ধরেই এই সমালোচনা।
ধারণা করা হয়, চীনে প্রায় ১০ লাখ উইঘুর বা সব মিলিয়ে ৩০ লাখের মতো অন্যান্য জাতির মুসলিম সংখ্যালঘুদের ‘নতুন করে শিক্ষা’ দেয়ার উদ্দেশ্যে ক্যাম্পে বন্দী করে রাখা হয়েছে। সেখানে তাদের কোনও অধিকার নেই। শত্রু মনে করে তাদের ব্যক্তিগত ও ধর্মীয় জীবনের উপর জোর খাটাচ্ছে চীনা প্রশাসন।
জানা গেছে, উইঘুরদের আটক করে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানো হয়। সেখানে বন্দীকৃতদের অনলাইনে পরিবারের সাথে যোগাযোগ করতে দেয়া হয়। বিধিনিষেধ আরোপ করা হয় ধর্মীয় শিক্ষা ও চর্চায়ও। এমনকি তাদের কোনও প্রকার আইনি সহায়তা নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয় না, একইসঙ্গে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের বলা হয় না- কোথায় তাকে আটকে রাখা হয়েছে এবং কবে নাগাদ মুক্তি দেওয়া হবে।
এই রকম নিপীড়নের মধ্যে আরও ভয়ঙ্কর তথ্য উঠে এসেছে যে, চীনের শিনজিয়াংয় প্রদেশের উইঘুর মুসলিমদের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে শি জিনপিং সরকার মুসলিম নারীদের দেহে জোর করে বন্ধ্যা করার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। একইসঙ্গে উইঘুরদের গণহারে কারারুদ্ধ করা, ধর্মীয় বিশ্বাসে হস্তক্ষেপ, বিচারবহির্ভূত বন্দীদশা এবং নজরদারির মতো মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন চর্চা করছে চীন সরকার। এছাড়া শ্রমেও বাধ্য করা হচ্ছে।
উইঘুর মুসলমানদের ধ্বংস করার জন্য যা যা করা দরকার তার কোন কিছুই বাকি রাখছে না চীনা প্রশাসন। প্রভাবশালী ইংরেজি গণমাধ্যম দ্য সিঙ্গাপুর পোস্টের এক মতামত কলামে এভাবেই চীনে উইঘুর মুসলমান নিপীড়নের ভয়ঙ্কর তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। ওই লেখায় প্রশ্ন রেখে উল্লেখ করা হয়েছে ‘চীনের নিপীড়ন-নির্যাতনের মুখে বিলুপ্তির হুমকিতে উইঘুর মুসলিম সম্প্রদায়?’। যদিও শুরুতে চীন এসব ক্যাম্পের অস্তিত্ব অস্বীকার করলেও পরে তারা দাবি করে যে সন্ত্রাসবাদ দমনের লক্ষ্যে এই ধরণের ক্যাম্প পরিচালনা করা জরুরি পদক্ষেপ।